রাজধানীর হাজারীবাগের নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক
ভাড়াটিয়াদের ‘চুরির পরিকল্পনায়’ প্রবাসী চিকিৎসক খুন, গ্রেফতার ৩
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর হাজারীবাগের নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক ডা. এ কে এম আব্দুর রশিদ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৪ নভেম্বর রাতে এই হত্যাকাণ্ডে করা মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া ও রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতাররা হলেন-মো. নাইম খান (২২), মো. জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও মো. আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)। শনিবার (৩০ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গ্রেফতার নাইম ও রিফাত ওই বাসার সাবেক ভাড়াটিয়া, যারা ব্যবসার ‘মূলধন জোগাড়’ এবং ভাড়া নিয়ে মালিকের সঙ্গে ‘মনোমালিন্যের’ জেরে ‘চুরি করতে গেলে’ এ খুনের ঘটনা ঘটে। গত ১৪ নভেম্বর রাতে হাজারীবাগের একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় অজ্ঞাতপরিচয়ের লোকজন প্রবেশ করলে নামাজরত থাকা আব্দুর রশিদের সঙ্গে ‘ধস্তাধস্তি’ হয়। এ সময় তার স্ত্রী সুফিয়া রশিদ পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। এক পর্যায়ে ধারালো চাকু দিয়ে আব্দুর রশিদের বুকে একাধিকবার আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় তার স্ত্রীর চিৎকারে দুষ্কৃতকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত চিকিৎসক আব্দুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। আব্দুর রশিদ ও সুফিরা রশিদ দম্পতি পেশায় চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তারা প্রতি সেপ্টেম্বরে দেশে এসে ধানমন্ডির নিজ বাসায় কয়েকমাস থেকে চলে যেতেন। তাদের পরিবারের সবাই প্রবাসী। এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই মো. রেজাউল করিম ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ, ওই বাসায় মেস হিসেবে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনার ডুমুরিয়ার শাহপুর বাজার এলাকা থেকে নাইম খান ও জাহিদুর রহমান রিফাতকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মোহাম্মদপুর থেকে আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওনকে গ্রেফতার করা হয়। নাইমের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, নাইম ও জাহিদুর ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন, একমাস আগেই বাসাটি ছাড়েন তারা। বকেয়া ভাড়া নিয়ে নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের মনোমালিন্যের জেরে তারা ক্ষিপ্ত ছিলেন। এছাড়া নাইম ও জাহিদুর রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পরিকল্পনা করে ওই বাসা থেকে টাকা-পয়সা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তারা শাওনকে সঙ্গে নিয়ে ভিকটিমের বাসার সীমানা প্রাচীর টপকে বাসায় প্রবেশ করেন। আব্দুর রশিদ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য উঠলে গ্রেফতারদের উপস্থিতি টের পান। পরে তিনি বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় ও এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।