|
জমি দখলের পায়তারার অপচেষ্টা, থানায় অভিযোগ
কুয়াকাটায় কোম্পানির অফিসে অগ্নিসংযোগ!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন কুয়াকাটা গঙ্গামতি এলাকায় ভূমি দখলকে কেন্দ্র করে লেইজার হোম কোম্পানির অফিসে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল পুড়ে প্রায় ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ঐ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো: মোশারেফ হোসেন নামের এক ব্যাক্তি। অভিযুক্তরা হলো-মহিপুর এলাকার বাসিন্দা মো: জলিলের দুই ছেলে মামুন ও ছিদ্দিক, ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে মো: ইসমাইলসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন।

মোশারেফ অভিযোগে জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে লেইজার হোম কোম্পানির মালিক মো: জাহিদ ইকবালের জমি ও সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই জমি জোরপূর্বক দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বাদীর অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্তরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে লেইজার হোম কোম্পানির জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসছে। বর্তমানে অভিযুক্তরা ওই জমিতে ধান চাষ করে জোরপূর্বক দখলে রেখেছে। গত ১০ ডিসেম্বর সকালে ধান কাটতে গেলে কোম্পানির নির্দেশে বাধা দেওয়া হলে অভিযুক্তরা বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধরের হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা থেকে ২৭ ডিসেম্বর রাত ৩টার মধ্যে গঙ্গামতি এলাকায় অবস্থিত লেইজার হোম কোম্পানির অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বাদী মো: মোশারেফ ও সাক্ষীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডে বাদীর একটি সাদা জাল (আনুমানিক মূল্য ৫,০০,০০০ টাকা), কোম্পানির একটি পানির মটর (৩৫,০০০ টাকা) এবং অফিসের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও আসবাবপত্রসহ মোট প্রায় ৩,০০,০০০ টাকার অফিস সামগ্রী পুড়ে যায়। ঘটনার পর বিষয়টি লেইজার হোম কোম্পানির মালিক মো: জাহিদ ইকবালকে জানানো হলে তিনি দ্রুত আইনগত সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন। বাদীর দাবি, অভিযুক্তরা ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা যে কোনো সময় তার ও কোম্পানির আরও বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে। এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করার পর মহিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনার পুর্বেও দু-দুইবার অভিযুক্তরা ফসলি জমির ধান কেটে নিয়ে গেলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্ত পুলিশ আসলে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। আবার পুলিশ চলে গেলে পূণরায় ধান কর্তন করে। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগে জানিয়েছেন, স্থানীয় সোহেল পেশকারের অনুসারী হচ্ছে অভিযুক্তরা। এরা বিভিন্ন সময় ভুমি অফিস থেকে দলিল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উত্তোলন করে জমি দখলচেস্টায় লিপ্ত রয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পুরো সময়জুড়ে এই চক্র একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তারা আরও জানান, বিভিন্ন সময় প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে জমি বায়নার নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি। যার ধরুন, অনেক ভুক্তভোগী বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগও জানিয়েছে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যায় এই বাহীনি। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। এ বিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মহব্বত খান জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে। যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো: আবু ইউসুফ জানান, বিষয়টা আমরা দেখছি। অভিযোগ দায়ের হলে অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Post Views: ০
|
|