|
নাশকতার পরিকল্পনা ও আশঙ্কা দেখা দিলেই গ্রেফতার করা হবে নেতাকর্মীদের
ফেঁসে যেতে পারেন বরিশালের সরোয়ারসহ বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা
আসছে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো সচল করা হয়েছে। পাশাপাশি নাশকতার পরিকল্পনা ও আশঙ্কা দেখা দিলেই গ্রেফতার করা হবে নেতাকর্মীদের। বরিশালে স্থবির হয়ে থাকা রাজনৈতিক মামলাগুলো সচল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শান্ত পরিবেশ যাতে অশান্ত না হয় সে জন্য বিএনপি ও জামায়াতের মাঠপর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি আন্ডারওর্য়াল্ডের সন্ত্রাসীদের তালিকা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও মামলার পলাতক আসামিদের ধরতেও বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্থবির হওয়া মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তির নির্দেশে ফেঁসে যেতে পারেন বরিশাল বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে রূপাতলীতে ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলায় সরোয়ারসহ ৭ জন এবং আদালতে অগ্নিসংযোগের মামলায় চান, শাহীনসহ একাধিক শীর্ষ নেতারা আসামী। এ দুটো মামলায় জামিনে রয়েছেন তারা। মামলা দ্রুত তদন্ত ও নিস্পত্তির দিকে এগুলো বিপাকে পড়তে পারেন তারা। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দিন থেকেই বিএনপি ও জামায়াত জোট রাজপথে আন্দোলনে নামতে পারে বলে তথ্য রয়েছে। আর এই আন্দোলনে হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও, পদযাত্রাসহ নানা ধরনের কর্মসূচি থাকতে পারে। এসব কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। পুলিশ সদর দপ্তরে গত কয়েক দিন ধরে একেকটি রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশ সুপারদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন আইজিপিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসব বৈঠকে নির্বাচন ঘিরে যাতে কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়। ওই সব বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে আইজিপি বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের শান্ত পরিবেশ কেউ অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করলে তাদের কঠোরভাবে দমন করতে বলা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় যেকোনো সময় কম্বিং অপারেশন শুরু হবে। ওই অপারেশনে বিজিবিও থাকবে। বিএনপি-জামায়াতের সন্দেহভাজন বিশৃঙ্খলাকারীদের তালিকা করে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেও বলা হয়েছে। গত সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে যেসব সহিংসতার মামলা ছিল সেগুলো সচল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলাগুলো কিভাবে সচল করতে হবে সেই নির্দেশনাও দেওয়া আছে। আর এই নির্দেশনা পেয়ে থানা পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে। বরিশালে এমন মামলার সংখ্যা বেশি। ওই সব মামলায় আসামির তালিকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদেরও নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে কারাভোগ করেছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা ও তান্ডব সংক্রান্ত যেসব মামলা রয়েছে সেগুলো সচল করে দ্রুত তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ নিয়েই শংকা সৃষ্টি হয়েছে বরিশাল বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মাঝে। বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাস এবং আদালতের ৪টি সেরেস্তা কক্ষের (নথিখানা) পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় ১৩ মার্চ ২০১৫ মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মজিবুর রহমান বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ৭ জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন। তদন্তের পর বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহীনসহ বিএনপি’র ১০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. হেলালুজ্জামান এই অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে চাঁন ও শাহীন ছাড়াও আরও ৮জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১৫ সালে ২০ দলের লাগাতার হরতাল-অবরোধ চলাকালে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্ত্বরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪র্থ আমলী আদালত কক্ষে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এই মামলা দায়ের করেছিলো পুলিশ। গত ৫ জানুয়ারির পর সরকাবিরোধী আন্দোলন চলার সময় নগরীর কাউনিয়া বিসিক এলাকায় মিছিল এবং দপদপিয়া সেতুতে ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মজিবর রহমান সরোয়ারের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের হয়। ২০ মে ২০১৫ বুধবার উচ্চ আদালত থেকে দুটি মামলায় আগাম জামিন নেন। বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চার সপ্তাহের আগাম জামিনের এ আদেশ দেন। এদিকে পুলিশের দায়ের করা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হতে পারেন। এমন খবরে এলাকাও ছাড়ছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ পলাতক রয়েছেন।
Post Views: ০
|
|
