|
ক্রমেই বাড়ছে ডিশ ও ইন্টারনেটের তারের সংখ্যা, শহরের নান্দনিক সৌন্দর্যও নষ্ট
বরিশালে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ক্যাবল অপারেট তারের জঞ্জাল, দুর্ঘটনার শঙ্কা
মু্ক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে ইন্টারনেট ও ক্যাবল অপারেটর নিজেদের সুবিধামতো বিদ্যুতের খুঁটিতে তার ঝুলিয়ে রেখেছে। এতে তারের ওজন বেড়ে গিয়ে অনেক খুঁটি হেলে পড়ছে, কোথাও আবার ভেঙে পড়ছে পুরো তারের জট। বরিশালে প্রাচীন জনপদে দেখার মতো অনেক ঐতিহাসিক জায়গা রয়েছে। তবে বিদ্যুতের খুঁটিতে তার ঝুলিয়ে দিন দিন স্থান গুলোর সুন্দর্য নষ্ঠ হচ্ছে। যেমন বরিশাল শহরের দিকে তাকালে এখন দেখা যায় শুধু তারের জঙ্গল। রাস্তাঘাট, ফুটপাত, অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত সর্বত্র ঝুলছে টেলিফোন, ইন্টারনেট, ক্যাবল টিভি, বিদ্যুৎর অসংখ্য তার। এই ঝুলন্ত তারগুলো শুধু শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে না, বরং প্রতিনিয়ত জীবননাশের ভয়ও তৈরি করছে। বরিশাল নগরীর আনাচে–কানাচে ডিশ ও ইন্টারনেটের তারের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সেগুলো দখল করে নিচ্ছে বিদ্যুতের খুঁটি। বর্ষাকালে যখন বরিশাল শহরের অনেক সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়, তখন এই তারগুলোর মাধ্যমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দূঘটনা ঘটে পারে বলে জানান সাধারণ মানুষ। বরিশালে শহরের ফুটপাথে হাঁটতে গিয়ে, কখনো দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে অব্যবস্থাপনার এই দায় নিচ্ছে না কেউ। নগরীর যে কোনো এলাকায় গেলেই চোখে পড়ে ঝুলন্ত তারের জট। শহরের নান্দনিক সৌন্দর্যও সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বরিশালের সতেচন মহল জানান, বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে তার ঝুলে থাকার সংস্কৃতি নতুন নয়। শহরের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন তারের শৃঙ্খলা বা অপসারণ। প্রাণকেন্দ্র সদর, গীর্জ্জা মহল্লা, চকবাজার, ফকির বাড়ি রোর্ড, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা সহ অধিকাংশ জায়গাতেই একই চিত্র। কোথাও বিদ্যুতের তারের সঙ্গে ঝুলছে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভির তার, আবার কোথাও কাটা তার রাস্তায় পড়ে আছে। তবে বর্তমানে কত বরিশালের কতটি ইন্টারন্টে সংযোগ রয়েছে তার হিসাব নেই কারো কাছে। ইন্টারনেট ও ক্যাবল অপারেটর, যারা নিজেদের সুবিধামতো বিদ্যুতের খুঁটিতে তার ঝুলিয়ে রেখেছে। এতে তারের ওজন বেড়ে গিয়ে অনেক খুঁটি হেলে পড়ছে, কোথাও আবার ভেঙে পড়ছে পুরো তারের জট। ১৯৯০-এর দশকে যখন ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট সংযোগ শুরু হওয়া থেকেই বেসরকারি অপারেটররা সহজ পথে বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করে থাকে। প্রধান সড়কগুলোতে সাজানো আলোকসজ্জা, ফুটপাতের গাছপালা, বিলবোর্ড-সবই যেন হারিয়ে গেছে তারের আড়ালে। তারের জট শুধু নান্দনিক সমস্যা নয়, এটি সরাসরি প্রাণহানির ঝুঁকিও তৈরি করছে। বরিশাল বিটিসিএল কার্যলয়ের তথ্যানুযায়ী, বরিশাল বিভাগে ১৭ হাজার ৯০ টি ও জেলায় ৫ হাজার গ্রাহক তাদের ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতে পারবে। যার ক্যাপাসিটি তাদের রয়েছে। কিন্তু সেখানে তবে বর্তমানে চালু আছে বিভাগে ৭ হাজার ৫শ’ ৮৬ টি, বরিশাল জেলায় রয়েছে ২ হাজার ৩শ’ ৩৮ টি সংযোগ। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, বৈদ্যুতিক অগ্নিকান্ড ঘটে তারের জট বা শর্ট সার্কিটের কারণে। অনেক সময় বিদ্যুৎ ও ক্যাবল তার একসঙ্গে বাঁধা থাকায় একটি লাইনে শর্ট হলে সেটি ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।বরিশালের একটি বেসরকারী ইন্টারনেট কোম্পানীর ইঞ্জিনিয়ার বলেন, তারের জট শুধু দেখার জন্যই বিশ্রী নয়, এটি বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অদক্ষতার প্রতীক। উন্নত দেশে প্রতিটি সংস্থা নিজস্ব ক্যাবল সিস্টেমের জন্য আলাদা পাইপলাইন ব্যবহার করে। ঢাকা ও বরিশালে তা না থাকায় এই বিপর্যয়। অবিলম্বে সমন্বিত ক্যাবল ব্যবস্থাপনা চালু করা প্রয়োজন। বরিশাল বিটিসিএল কার্যলয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো: শামীম ফকির বলেন, বরিশালে বিদ্যুতের খুঁটিতে তাকালে দেখা যা যে কতটি তার ঝুলছে। বৈদ্যুতিক ঝুঁকি ও অগ্নিকান্ডের ঘটনার পিছনে বেশি ভাগই হলো তার সট সার্কিটের কারণ। দ্রুত প্রয়োজন এগুলো অপসারণ করে শৃঙ্খলা আওতায় ফিরিয়ে আনা। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) অহিদ মুরাদ বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ইন্টারনেটের জুলছে, এটা নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে এরা এটা করে যাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি প্রশাসক স্যার এবং প্রধান নিবার্হী স্যারের সাথে কথা বলবো অপসারণ করার জন্য। বরিশাল ওজোপাডিকো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুল কুমার স্বর্ণকার বলেন, অনুমতি না নিয়েই বছরের পর বছর ধরে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ইন্টারনেটের লাইন টানছেন মালিকরা।
Post Views: ০
|
|