প্রচ্ছদ » স্লাইডার নিউজ » ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের কারণে নয়ন বন্ডের মরদেহ দাফন করতে দেয়নি গ্রামবাসী!
Wednesday July 3, 2019 , 9:10 am
ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের কারণে নয়ন বন্ডের মরদেহ দাফন করতে দেয়নি গ্রামবাসী!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দেশব্যাপী আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের মরদেহ নিজ গ্রামে দাফন করতে দেয়নি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলাবাসী। এলাকাবাসীর তোপের মুখে নয়ন বন্ডের মরদেহ পটুয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে না নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বুরজির হাটখোলা গ্রামে তার মামা বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার পশ্চিম সীমান্তে গলাচিপা উপজেলার ৮ নম্বর বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়াবাশবাড়িয়া গ্রামে সাব্বির হোসেন নয়ন বন্ডের বাবার বাড়ি। ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, নয়ন বন্ডের মরদেহ আমাদের গ্রামে দাফন করতে দেয়া হবে না। তার মতো এমন জঘন্য খুনির মরদেহ অন্য কোথাও দাফন করা হোক।
এ বিষয়ে নয়ন বন্ডের চাচা লিটন মোল্লা বলেন, নয়নকে আমি দেখিনি। তার বাবা খুব ভালো মানুষ ছিলেন। বাড়ির সবাই নয়ন বন্ডের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। নয়ন বন্ডের ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের কারণে গ্রামের বাড়ির কেউই নয়ন বন্ডকে আত্মীয় পরিচয় দিতে চাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তার মামার বাড়িতে মরদেহ দাফন করা হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়ন বন্ডের মরদেহ বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বুরজির হাটখোলা গ্রামে তার মামা বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অল্প কিছু মানুষ তার দাফনে অংশ নিয়েছেন। মরদেহ হস্তান্তরকারী পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: শাহিন বলেন, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বুরজির হাটখোলা গ্রামে নয়নের মামা বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। জানা যায়, নয়ন বন্ডের মৃত্যুর খবরে যেমন হাসি ফুটেছিল পুরো দেশের মানুষের মুখে, তেমনি হাসি ফুটেছিল তার নিজ বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলাবাসীর মুখেও। নয়ন বন্ডের মৃত্যুর খবর প্রকাশ হওয়ার পরপরই দশমিনার সচেতন মহল তার মরদেহ দশমিনার মাটিতে দাফন না করতে দেয়ায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। তাই স্থানীয় সচেতন মহলের এমন প্রতিজ্ঞার কথা জানতে পেরে স্বজনররা নয়ন বন্ডের মরদেহ নিয়ে দশমিনায় আসেননি। নয়ন বন্ডের সমাপ্তি হয়েছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নয়ন বন্ডের ফুফাতো ভাই দশমিনার বাসিন্দা সাফায়াত হোসেন। পাশাপাশি নয়ন বন্ডকে যারা সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকেও আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি জানান তিনি। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন বলেন, নয়নের মরদেহ তার মামা মিজানুর রহমান বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গ্রহণ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে পটুয়াখালী নেয়া শুরু করলে সেখান থেকে খবর আসে খুনির মরদেহ সেখানে দাফন করতে দেবে না এলাকাবাসী। এ অবস্থায় মিজানুর রহমানের নিজের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায় নয়নকে দাফন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সন্ধ্যায় তার বাড়িতে নয়ন বন্ডের মরদেহ দাফান করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোররাতে বরগুনার পুরাকাটায় পায়রা নদীর তীরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নয়ন বন্ড নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রাণের শহর তিলোত্তমা বরগুনা নামের একটি আইডি থেকে লেখা হয়েছে, প্রাণের শহর তিলোত্তমা বরগুনার পবিত্র মাটিতে এই পাপীর দাফন করা কোনো অবস্থাতেই সমীচীন নয়। মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বরগুনার পুরাকাটার পায়রা নদীর পাড়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দুটি শটগানের গুলির খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এএসপি শাজাহানসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত।
বন্দুকযুদ্ধে নয়ন বন্ড নিহত হওয়ার পর তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে আনা হলে সেখানে লাশটি দেখার জন্য কয়েকশ মানুষ জড়ো হন। এসময় তাদেরকে উল্লাস করতেও দেখা যায়। অনেকে মিষ্টি বিতরণও করেছেন এই অপরাধীর মৃত্যু হওয়ায়। পুলিশ জনতাকে লাইন ধরে লাশ দেখার সুযোগ দেয়।