Current Bangladesh Time
বুধবার মে ৮, ২০২৪ ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » শতাধিক নারীকে পাচার করেছে ডিজে কামরুলের চক্র : র‍্যাব 
Saturday October 30, 2021 , 8:09 pm
Print this E-mail this

কুমিল্লার এই তরুণ ২০০১ সালে ঢাকায় এসে রিকশা চালানো শুরু করেছিলেন

শতাধিক নারীকে পাচার করেছে ডিজে কামরুলের চক্র : র‍্যাব


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : কুমিল্লার তরুণ কামরুল ইসলাম ২০০১ সালে ঢাকায় এসে রিকশা চালানো শুরু করেছিলেন। কদিনের মধ্যে ধরেন পণ্যবাহী ভ্যান। চিত্রজগতের মালামাল পরিবহনের সুবাদে দেড় দশকে বনে ‘ড্যান্সার’। পরে হাতিরঝিল এলাকায় ‘নাচের স্কুল’ খুলে তার আড়ালে সহযোগীদের নিয়ে এই কামরুল ভারতে নারী পাচার করে থাকেন বলে র‌্যাবের ভাষ্য। এই অভিযোগে তাকেসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন ও র‌্যাব- ৪ এর পরিচালক মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান। র‌্যাব বলছে, শুটিংয়ের মালামাল পরিবহনের সুবাদে চিত্রজগতের লোকজনের সঙ্গে কামরুলের পরিচয় হয়। ২০১৬ সালের দিকে তিনি ‘সাইড ড্যান্সার’ হিসেবে কাজ শুরু করেন; বনে যান ‘ডিজে কামরুল’ বা ‘ড্যান্স কামরুল’। ‘ডিজে কামরুল ড্যান্স কিংডম’ নামে প্রতিষ্ঠান খুলে তার আড়ালে নাচে আগ্রহী তরুণীদের ভাল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ বা চিত্রজগতে প্রতিষ্ঠার লোভ দেখিয়ে ভারতে পাচার করছিলেন। কামরুল ও তার সহযোগীরা ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক নারীকে ভারতে পাচার করেছেন। তাদের ডেরা (সেইফ হাউজ) থেকে পাচারের শিকার ২৩ নারীকে উদ্ধার করেছে। র‌্যাব কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তার জন দুটি চক্রের সদস্য। এর মধ্যে কামরুলের চক্রের আরও তিনজন রয়েছে। এরা হলেন-রিপন মোল্লা, আসাদুজ্জামান সেলিম এবং নাইমুর রহমান শামীম। এদের মধ্যে রিপন (ডেলিভারি ম্যান) সীমান্ত দিয়ে পাচারের জন্য ঢাকা থেকে নারীদের পরিবহন করতেন। তাদের নিয়ে চুয়াডাঙ্গার ডেড়ায় (সেইফ হাউজ) নিয়ে রাখা হতো, যেটি চালানোর ভার ছিল শামীমের ওপর। সেখান থেকে শুক্রবার মধ্যরাতে এক তরুণীকে উদ্ধারের পর সেখানে রাখা নারীদের নিপীড়ন চালানো হতে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। মূলত নাচের প্রতি আগ্রহ থেকেই ফেসবুকে কামরুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে কামরুলের ক্লাবে গিয়ে নাচের অনুশীলন করেন। পরে কামরুল বিয়ে বাড়ি ও জন্মদিনে নাচার কাজও তাকে জুটিয়ে দেন। একপর্যায়ে ভারতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাচার প্রস্তাব দেন। তাকে চুয়াডাঙ্গার শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। ভারতে যোগাযোগের নম্বরও দেওয়া হয়। পাসপোর্ট ছাড়াই সীমান্ত পার করে দেওয়া হবে বলেও তাকে বলা হয়। তারপরের কাজ দালালেরা করবে। র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, কামরুলের মাধ্যমে পাচার হওয়া তিন তরুণীকে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পাসপোর্ট আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কামরুলের চক্রের সঙ্গে ভারতের দালাল চক্রেরও নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। মানবপাচারের মামলায় ২০১৯ সালেও গ্রেপ্তার হয়ে তিন মাস জেল খেটেছিলেন কামরুল। ওই তিনজনের একজনের বাবাও এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেলেন; বারবার মেয়েকে ফেরত চান। র‌্যাব বলছে, কামরুল ঢাকায় উঠতি তরুণীদের নিয়ে পার্টির আয়োজন করতেন। ঢাকার আশপাশের রিসোর্টে আয়োজন করা হতো পুল পার্টির। চিত্রজগতের মুখচেনা লোকজনও তার অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। এসব পার্টিতে যোগ দিতে তরুণীদের কোনো টাকা লাগতো না। বাসা-বাড়ি, রেস্তোঁরা বা হাসপাতালে কাজের লোভ দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে অনৈতিক কাজ করানোর অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। পাশাপাশি তাদের আস্তানা থেকে পাচারের শিকার নারীদের উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নুর-নবী ভুইয়া রানা (৪৪), আবুল বাশার (৫২), আল ইমরান (৪১), মনিরুজ্জামান (৩৫), শহিদ সিকদার (৫৪), প্রমোদ চন্দ্র দাস (৬২) ও টোকন (৪৫)। র‌্যাব জানায়, নূর নবী এই চক্রের প্রধান। তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন রয়েছেন। গত ৫/৭ বছর ধরে তারা নারী পাচার করছেন। এ পর্যন্ত চক্রটি ৩০-৩৫ জনকে পাচার করেছেন। বিদেশে নেওয়ার পর তাদের বেচে দেওয়া হত। এই চক্রটির ঢাকায় কয়েকটি ‘সেইফ হাউজ’ রয়েছে। নূর-নবী চক্রটির মাধ্যমে একমাস আগে পাচার হয়ে যাওয়া এক পোশাককর্মীকে শনিবার সকালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সাভারের অটোরিকশা চালক তার স্বামীও ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অটোরিকশায় পরিবহনের সুবাদে ওই তরুণীর সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। ছয় মাস আগে তারা বিয়ে করেন। কয়েকদিন আগে তার স্ত্রীর এক বান্ধবী তাকে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। গ্রেপ্তার ইমরানের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। তিনি তাদের কাছ থেকে মেডিকেল ও অন্যান্য পরীক্ষার জন্য ৩০ হাজার টাকা নেন। ইমরান তাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ও তো আমার বোন। বোনের ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ আমি নেব না। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর কোনো খোঁজ না পেয়ে অটোরিকশা চালক ইমরানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইমরান টালবাহানার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ফেরত পেতে হলে আড়াই লাখ টাকা’ তার কাছে দাবি করেন। পরে তিনি র‌্যাবের শরণাপন্ন হন।




Archives
Image
বরিশালে ভোক্তার অভিযান, ৯ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
Image
উপজেলা নির্বাচন : বরিশালে ভোট সামগ্রী বিতরণ
Image
উপজেলা নির্বাচন : লাইসেন্সধারীরাও অস্ত্র বহন-প্রদর্শন করতে পারবে না
Image
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
Image
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট শুরু