Current Bangladesh Time
শনিবার অক্টোবর ৪, ২০২৫ ২:৫০ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পরিত্যক্ত পিরোজপুর মঠবাড়িয়ায় কুঠিবাড়ি 
Sunday September 24, 2023 , 6:57 pm
Print this E-mail this

৩টি ভবন জরুরি সংস্কার করা না হলে মূল ভবনটিসহ সম্পূর্ণ ধ্বংসের আশঙ্কা

রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পরিত্যক্ত পিরোজপুর মঠবাড়িয়ায় কুঠিবাড়ি


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে সাপলেজা ইউনিয়নে বিশাল জায়গা নিয়ে নির্মিত কুঠিবাড়ি প্রাসাদ। যেন প্রতিটা ইটে লুকিয়ে আছে ইতিহাস আর ঐতিহ্য। আনুমানিক আঠারো শতকের গোড়ায় জনৈক ইংরেজ জমিদার অ্যাডওয়ার্ড প্যারি ক্যাসপার এ কুঠিবাড়ি নির্মাণ করেন। সোয়া ৯ একর জমির উপর নির্মিত হয় ক্যাসপারের কুঠিবাড়ি।জানা গেছে, কথিত আছে মি. ক্যাসপার ঘটনাক্রমে সাপলেজা ভ্রমণকালে স্থানীয় ধনাঢ্য ফরাজউল্লাহ তাঁকে সম্মানিত করতে উক্ত জমি উপহার দেন। পরবর্তীকালে এখানে ক্যাসপারের জমিদারী সম্প্রসারিত হয়। প্যারি ক্যাসপারের উপস্থিতিতে প্রতিবছর পৌষ মাসের শেষভাগে কুঠিবাড়িতে পুণ্যাহ উৎসব উপলক্ষ্যে খাজনা আদায়সহ প্রজাদের মনোরঞ্জনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এর মধ্যে যাদু প্রদর্শনী, লোকগান, যাত্রা ও নিমাই সন্ন্যাস পালায় প্রচুর লোক সমাগম হতো। কুঠিবাড়ির মূলভবন নির্মাণে প্রচালিত ধারার বৃটিশ স্থাপত্যরীতিতে চৌকোণাকৃতির ১৮টি খিলানের উপর দোতলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত ছিল। এছাড়া অন্যান্য স্থাপনা ও বড় একটি পুকুর। কুঠিবাড়ির উপরের তলায় প্যারি ক্যাসপারের ব্যক্তিগত ব্যবহৃত মূল্যবান সামগ্রী ও তৈজসপত্র ছিল। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর বৃটিশরা চলে গেলে ভবন ও সম্পত্তি তখনকার সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ক্যাসপার সাহেব চলে যাবার আগে সাপলেজা এলাকার গ্রামের নাম তার পিতা শিলার সাহেবের নামে নামকরণ করে যান। নায়েব, পাইক পেয়াদাদের থাকার জন্য নির্মাণ করেন আরো একটি ভবন। দ্বিতল ভবনটির নীচের তলায় অফিস কক্ষে বসে এলাকার খাজনা আদায় ও বিচার পরিচালনা করতেন। পরে অজ্ঞাত কারণে ভেঙ্গে দেয়া হয় মূল ভবনটির দোতলার সম্পূর্ণ অংশ। সুন্দরবন সংলগ্ন সাপলেজা কুঠিবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডওয়ার্ড পেরি কাসপার এই প্রকার পত্তনি প্রহণ করা একজন কুটিয়াল বা জমিদার। কুটিয়াল কাসপার এখানে কখনও বসবাস না করে, তাঁর বিশ্বস্ত কর্মচারি সুরেশ চন্দ্র সুর এবং সতীশ চন্দ্রের মাধ্যমে জমিদারি পরিচালনা করতো বলে জানা যায়। ফসল তোলা শেষ হলে জমিদার কাসপার নির্দিষ্ট দিনে খাজনা সংগ্রহ করে চলে যেত। আরো জানা গেছে, প্রতিদিন এ কুঠিবাড়িতে ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। তবে এখানে পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তাসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এখনও গড়ে উঠেনি। সরেজমিনে দেখা গেছে, শানবাঁধানো ঘাটসহ পুকুর জৌলুশহীন। কুঠিবাড়ির তৎকালীন ম্যানেজার সুরেন্দ নাথ সুর ও নায়েব সতীশ চন্দ্রর কোনো বংশধরের খোঁজ পাওয়া যায় না। অ্যাডওয়ার্ড প্যারি ক্যাসপারের একটি বড় বোট ছিল। এ বোটে করেই তিনি শীত মৌসুমে তৎকালীন চন্দ্রদীপ (বর্তমান বরিশাল) থেকে কুঠিবাড়ি আসতেন। মূল ভবনের নীচে চারকোণে কয়লার আগুন রাখার ব্যবস্থা ছিল। তাতে পুরো বাড়ি গরম থাকতো। প্রথমে ক্যাসপার সাহেবের মূল বাড়ি সংস্কার করে ও পরিবর্তন করে ইউনিয়ন ভূমি অফিস (তহসীল অফিস) হিসাবে ব্যবহার করা হয়। একই জমিতে অন্য স্থানে নতুন ভূমি অফিস ভবন নির্মিত হওয়ায় ক্যাসপারের বাড়িটি পরিত্যক্ত। স্থানীয়রা জানান, সরকার কঠিবাড়ির মালিকানা নিলেও এর রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ভালো উদ্যোগ নেয়নি। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রত্নসম্পদ সাপলেজা কুঠিবাড়ি। বর্তমানে কুঠিবাড়ির ৩টি ভবন জরুরি সংস্কার করা না হলে মূল ভবনটিসহ সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।




Archives
Image
শিগগির আসনভিত্তিক একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে বিএনপি : সালাহউদ্দিন আহমদ
Image
এবার মা ইলিশ রক্ষায় পাহারায় বসানো হচ্ছে ড্রোন
Image
বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে বাস খাদে পড়ে নারী নিহত, আহত ৩০
Image
বরিশালে শিক্ষকের মরদেহ মিলল আম গাছে
Image
বরিশালে ভুল চিকিৎসায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কলেজ ছাত্রী!