|
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্। বুধবার বেলা ১২টায় নগর ভবনের তৃতীয় তলায় সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিটি কর্পোরেশনের সচিব ও রাজস্ব কর্মকর্তা মো: ইসরাইল হোসেন জানান, নগরীতে আগে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে নানা অনিয়ম ছিলো। আগের পরিষদের মেয়র আহসান হাবিব কামাল তার ইচ্ছেমতো ট্যাক্স কমিয়ে দিতেন! কিন্তু বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্’র নেতৃত্বাধীন পরিষদ দায়িত্ব নেয়ার পর নগর ভবনের রাজস্ব বাড়ানোর নানা তৎপরতা শুরু করেন। এতে আগের পরিষদের ট্যাক্স আদায়ের নানা অনিয়ম ফাঁস হয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহ্ বলেন, তিনি নতুন করে কোন হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াননি। ২০১৬ সালে তৎকালীন পরিষদ যে ট্যাক্স নির্ধারন করেছিলো, তাও আদায় হচ্ছিলো না। নানাভাবে সিটি কর্পোরেশনকে ঠকানো হচ্ছিলো। এর উপর আবার ২০১৮ সালে গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয় থেকে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের নির্দেশনা দেয়া হয়। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশানুযায়ী ট্যাক্স আদায় হলে জনগনের উপর অনেক বড় চাপ পড়বে। তাই তিনি আগের ধার্য্য করা হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে গুরুত্ব দেন। এরপরও কারো কোন আপত্তি থাকলে বিষয়টি তিনি (যুবরত্ন) মানবিক দৃস্টিতে দেখবেন বলেও জানান। তিনি আরও বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৫২ হাজার হোল্ডিংয়ে বছরে ট্যাক্স আদায় হয় ৯ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৬ সালের বাড়ি ভাড়া অনুযায়ী ট্যাক্স আদায় করতে পারলে বছরে ৮০ থেকে ৯০ কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা সম্ভব। এ সময় মেয়র সাদিক বলেন, জনগনের টাকায় নগর ভবন পরিচালিত হয়। রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ, ফুটপাত নির্মাণ, সড়ক বাতি স্থাপন, বর্জ্য অপসারণ ও পানির লাইন সম্প্রসারণ সব কিছুই হয় জনগনের টাকায়। জনগণ ট্যাক্স না দিলে নগর ভবন সেবা দেবে কিভাবে? তাই তিনি সকলকে ধার্য্যকৃত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের সবিনয়ে অনুরোধ জানান। একটি মহল ট্যাক্স বাড়ানোর গুজব ছড়িয়ে নগর ভবনের সুনাম ক্ষুন্ন করার পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সিটি কর্পোরেশনের সচিব ও রাজস্ব কর্মকর্তা মো: ইসরাইল হোসেন সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের অননিয়ম তুলে ধরে বলেন, বরিশাল নগরীর সদর রোডের ডা: সোবাহান মার্কেটের চায়না প্যালেসের সংযুক্ত ভবন বাবদ আগে সিটি কর্পোরেশনকে বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স দেয়া হতো ২৭ হাজার টাকা। কিন্তু ২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশনের রেজুলেশন হওয়া বিধি অনুযায়ি ওই ভবনের একাংশের নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। ভবনের অপরাশের হোল্ডিং ট্যাক্সও বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুন। একইভাবে নগরীর কাঠপট্টিতে ব্যবসায়ী গ্রুপ খান সন্সের একটি বহুতল ভবনে এতদিন বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় হতো ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অথচ ২০১৬ সালের রেজুলেশন অনুযায়ী ওই ভবনের কর ধার্য্য হয়েছে ২৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সিটি কর্পোরেশনের একজন সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আগে বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স দিতেন মাত্র ২ হাজার টাকা, যার বর্তমান হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার। একইভাবে সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা আগে ট্যাক্স দিতেন ৫শ’ ৬ টাকা, বর্তমানে তার ট্যাক্স নির্ধারিত হয়েছে ৯৫ হাজার টাকা। সিটি কর্পোরেশনের একজন কাউন্সিলর আগে ট্যাক্স দিতেন মাত্র ১ হাজার ৩শ’ টাকা, অথচ নতুন করে তার ট্যাক্স ধার্য হয়েছে ৬৪ হাজার টাকা।
Post Views:
৫৭৭
|
|