|
জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের আমরা বলেছি যাতে তারা পরীক্ষা না লিখেন-হাসপাতালের উপ-পরিচালক
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তির আগে রোগীদের পরীক্ষা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্য নির্দিস্ট কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠাচ্ছেন রোগীদের। অথচ ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়ার আগ পর্যন্ত কোন পরীক্ষা দেয়ার ইখতিয়ার জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের নেই। অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন দূর দূরান্ত থেকে আসা গুরুতর অসুস্থ রোগীরা জরুরী বিভাগে গেলেই প্রথমে রোগীদের ভর্তি না করে সিটিস্ক্যান, এক্স-রে, রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি সহ ৪/৫ হাজার টাকার বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা ধরিয়ে দেয়ার নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেখানে নিয়ম রয়েছে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা রোগীদের শুধু মাত্র ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেয়ার। সেখানে নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে রোগীদের হয়রানী করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে তারা আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। সরেজমিনে অনুসন্দ্ধানে জানা গেছে, জরুরী বিভাগে ওৎপেতে থাকা কিছু বে-সরকারী ট্রলিচালক জরুরী বিভাগে রোগী ভর্তি হতে আসলেই জরুরী বিভাগ থেকে ছোট টিকিট নিয়ে সোজা চিকিৎসকদের রুমে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাদের পোষাকৃত ট্রলি চালক নামের দালালদের মাধ্যমে হৃদরোগী সড়ক দূঘটনায় আহত, ও প্রতিপক্ষের হামলায় আহত রোগীদেরকে সিটিস্ক্যান, এক্স-রে সহ মোটা অংকের পরীক্ষা ধরিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে থাকেন। বিনিময় তারা প্রতিনিয়ত ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো থেকে পেয়ে থাকেন মোটা অংকের কমিশন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক, ম্যানেজাররা চিকিৎসক ও ট্রলি চালকদের আগাম কমিশন দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে রোগী পাঠানোর জন্য উৎসাহীত করে থাকেন। জরুরী বিভাগ থেকে রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানের ফলে ট্রলির ঝাঁকুনিতে অনেক সময় রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। গোপন একটি সূত্র জানায়, জরুরী বিভাগের ডা: নাজমুল ইসলাম, ডা: মফিজুল ইসলাম লিটু, ডা: আশ্রাফুল ইসলাম ও ডা: তানভীর সহ কয়েকজন অসাধু চিকিৎসক ভর্তি না করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে থাকেন। এছাড়া ও যে সকল ট্রলি চালকরা চিকিৎসকদের সহযোগীতায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় তারা হলো-রাজা, বাদশা, নিজাম, শাহাদাৎ, শান্ত ও জালাল তালুকদার। জানা যায়, গত মাস খানেক আগে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে সোনাবানু (৫৫) নামের এক রোগী অসুস্থ হয়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি হতে আসেন। সেখানে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সিটিস্ক্যান দিয়ে ট্রলি চালক নিজামকে দিয়ে নির্দিস্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া ও গত মঙ্গলবার (৫ মে) আ: মান্নান নামের এক রোগীকে একইভাবে সিটিস্ক্যান দিয়ে নির্দিস্ট সিটিস্ক্যান সেন্টারে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: আব্দুল রাজ্জাকের মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি জানান, ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিতে পারেন তেমনি জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের আমরা বলেছি যাতে তারা পরীক্ষা না লিখেন।
Post Views:
৮৩
|
|