বিষয়টি আমার জানা নেই-ওসি আল-মামুনুল ইসলাম, এয়ারপোর্ট থানা
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই মোটরসাইকেলে থাকা তিন ব্যক্তিকে ১৮ পিস ইয়াবাসহ আটক করে টাকার বিনিময় স্থান-সময় পরিবর্তন করে দু’জনকে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় ও আরেকজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৩০ আগষ্ট রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এয়ারপোর্ট থানাধিন ১২ নং তিলক-কলাডেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। পরদিন টাকার বিনিময় দু’জনকে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় ও আরেকজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে পাঠানো হয়। আটককৃতরা হলেন-বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের রামপট্টি গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো: শাওন মিয়া (৩৮), একই এলাকার মো: আমির হোসেনের ছেলে শামিম মুন্সি ও আলী আকবরের ছেলে সাইমুন আহমেদ। এদের মধ্যে মো: শাওন মিয়াকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে পাঠানো হয়। বাকি দু’জনকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময় বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়। জানা গেছে, গত ৩০ আগষ্ট রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এয়ারপোর্ট থানাধিন ১২ নং তিলক-কলাডেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চেকপোষ্ট বসান এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিস আলী। তখন একটি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন মো: শাওন মিয়া, শামিম মুন্সি ও সাইমুন আহমেদ। চেকপোষ্টে তাদের মোটরসাইকেলটি থামিয়ে তল্লাশি করেন এসআই ইদ্রিস আলী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান এসআই ইদ্রিস আলী। এরপর খবর পেয়ে ছুটে আসেন তাদের স্বজনরা। বিষয়টি জানতে পেরে সংবাদকর্মীরাও থানায় যান। তখন সংবাদকর্মীদের জানানো হয় তাদের ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে। কিছু সময় পর থানার একটি কক্ষে এসআই ইদ্রিস আলী তাদের স্বজনদের সাথে দফায় দফায় মিটিং করেন। তখন কৌশলে সংবাদকর্মীরা থানায় অবস্থান নিয়ে পুরো বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। সবশেষ মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় মো: শাওন মিয়াকে ১৮ পিস ইয়াবাসহ আদালতে চালান দেয়া হবে। আর শামিম মুন্সি ও সাইমুন আহমেদকে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানো হবে। এর বিনিময়ে ৩০ হাজার টাকা নেন এসআই ইদ্রিস আলী। সেই কথা অনুযায়ী মো: শাওন মিয়াকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে পাঠানো হয়। বাকি দু’জনকে স্থান-সময় পরিবর্তন করে সারা পেট্রোল পাম্প ও সময় রাত পৌণে ১ টায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক দেখিয়ে বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়। এমনকি যেখান থেকে তাদের আটক করা হয়েছে সেখানকার কাউকে সাক্ষী না করে থানায় আসা স্বজনদের সাক্ষী করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাওন মিয়ার এক স্বজন বলেন, তারা সবাই এক মোটরসাইকেলে ছিল, একসাথেই আটক হয়েছে। আমরা থানায় গিয়ে টাকা দিতে পারিনি বলে শাওনকে মাদক মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর বাকিদের বিএমপি এ্যাক্ট ৮১ ধারায় আদালতে পাঠানোর জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি পুরোপুরো অস্বীকার করে এসআই ইদ্রিস আলী বলেন, প্রথমে শাওনকে আটক করা হয়েছিল। ঠিক ওই সময় শামিম মুন্সি ও সাইমুন আহমেদ ওরফে বাবু মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তখন তাদের একসাথে থানায় নিয়ে আসা হয়। একই সময় আটক করে থানায় নেওয়া হলে আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে স্থান ও সময় পরিবর্তন করা হলো কেন? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি। বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল-মামুনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কয়েকজন সাংবাদিক এসেছিল আমি এসআই ইদ্রিসের সাথে কথা বলিয়ে দিয়েছি।