|
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা এ দামে হতাশা
ধস নেমেছে বরিশালে চামড়ার মূল্যে!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : শঙ্কা থাকলেও চামড়া কেনা শুরু করেছেন বরিশালের পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা। গত বছরের তুলনায় ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে গরুর প্রতিপিস চামড়ায়। তবে ছাগলের চামড়া কেনা হচ্ছে পান-সিগারেটের দামে। সরেজমিনে নগরীর পদ্মাবতী ট্যানারি শিল্প এলাকায় গেলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শনিবার (১ আগস্ট) সকাল থেকেই মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে আসা চামড়া কেনা শুরু করেন সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা। গত বছরের ঈদ-উল-আযহায় গরুর চামড়া ১৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় কেনা হয়। কিন্তু এ বছর দাম বাড়ানো হয়েছে। ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায় কিনছেন পাইকাররা। ছাগলের চামড়ার দাম দিচ্ছেন চা-সিগারেটের টাকা। মৌসুমী চামড়া বিক্রেতা আনিস বলেন, ‘নলছিটি থেকে চামড়া নিয়ে এসেছি। গরুর চামড়ার যাও দাম পেয়েছি, ছাগলের চামড়ার কোনো দামই দিলেন না। ছাগলের চামড়া দিলে ১০ টাকা ২০ টাকা দিয়ে বলেন, ‘নে পান-সিগারেট খাইস।’ পদ্মাবতীর পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা দরে গরুর চামড়া কিনছি। এর চেয়ে বেশি দামে কেনা যাচ্ছে না।’ এই ব্যবসায়ী দাবি করেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর চামড়ার দাম অনেক বেশি। গত বছর চামড়া প্রতি আমরা ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা দিয়েছি। যা এ বছর অনেক বেড়ে গেছে। গত বছর সবচেয়ে ভালো চামড়াপ্রতি দিয়েছি ৩০০ টাকা, যা এ বছর বেড়ে ৩৫০ টাকা হয়েছে। সব মিলিয়ে চামড়ার দাম কিছুটা হলেও বাড়তি দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এই চামড়ার পেছনে আমাদের আরও ২০০ থেকে ২৫০ টাকা খরচ রয়েছে। এর চেয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা এ দামে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, ‘এলাকা থেকেই আমরা বড় গরুর চামড়া বেশি টাকা করে কিনেছি। এখানে তারা যে দাম বলছেন, এতে করে আমাদের মুনাফাও থাকবে না।’ বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শাহিন বলেন, ট্যানারি মালিক বা ব্যবসায়ীদের কাছে বরিশালের চামড়া ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। প্রতি বছর কোরবানির আগে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা কিছু টাকা দিলেও এবারে খালি হাতেই ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাই নতুন করে দেনাগ্রস্ত হতে রাজি হননি অনেকেই। এজন্য তিনিসহ বহু ব্যবসায়ী এবার চামড়া কেনা থেকে বিরত রয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বরিশালে ২০/২২ জন চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ী ছিলেন। তারা স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতেন। কিন্তু দিনে দিনে চামড়ার দর পতন অব্যাহত থাকায় এবং ট্যানারি মালিকদের কাছে টাকা আটকে যাওয়ায় বর্তমানে চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা পাঁচজনের নিচে। এবার মাত্র দুই তিনজন চামড়া সংগ্রহ করেছেন। ফলে স্থানীয় বাজার থেকে আমাদের চামড়া সংগ্রহ কমে গেছে।’ জানা গেছে, চামড়া ব্যবসায়ীরা তাদের এই ব্যবসা পাল্টাচ্ছেন। ট্যানারি মালিকরা তাদের ব্যবসার জন্য ঋণ পাচ্ছেন, টাকা নেই অথচ বাড়ি-ঘর তুলছেন, অন্য ব্যবসায় পুঁজি খাটাচ্ছেন।
Post Views:
২১১
|
|