Current Bangladesh Time
সোমবার মে ৬, ২০২৪ ৪:০৪ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » দিনাজপুরে ইউএনও’র ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও যুবলীগ থেকে বহিষ্কার 
Saturday September 5, 2020 , 8:18 am
Print this E-mail this

অস্ত্রোপচার সফল হলেও ইউএনও ওয়াহিদা আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা

দিনাজপুরে ইউএনও’র ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও যুবলীগ থেকে বহিষ্কার


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হাতুড়িপেটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও সদস্য আসাদুল ইসলামকে (৩৫) যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। কোনও সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ঠাঁই নেই। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে ঘোড়াঘাট ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় আটক যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি রাসেদ পারভেজ জানান, যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল তাদেরকে বহিষ্কার করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি পত্র তারা পেয়েছেন। এর আগে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে দিনাজপুরের হাকিমপুর, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ এবং র‌্যাব রংপুর-১৩’র একটি দল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে হিলির কালিগঞ্জ এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে আসাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। সে ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরের আমজাদ হোসেনের ছেলে। আসাদুলই ইউএনওর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। র‌্যাব ও পুলিশের একই টিম জাহাঙ্গীর আলমকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। সেও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাহাঙ্গীর ও আসাদুলের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হামলা, চাঁদাবাজি, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ত্রাণ বিতরণকালে ঘোড়াঘাট পৌর মেয়রের ওপর তারা হামলা চালালে মামলাও দায়ের করা হয়। এছাড়াও যুবলীগে তাদের নামে একাধিক অভিযোগ তুলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। তবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। গেটে দারোয়ানকে বেঁধে ফেলে তারা। পরে বাসার পেছনে গিয়ে মই দিয়ে উঠে ভেনটিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে হামলাকারীরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে তারা। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন। ওয়াহিদা খানম বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন। অস্ত্রোপচার শেষে তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হলেও ইউএনও ওয়াহিদা আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ইউএনও ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের অধ্যাপক ডা: জাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। রাত সোয়া ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত চলে এই অস্ত্রোপচার। ডা: জাহিদুর রহমান বলেন, যখন প্রথম তাকে নিয়ে আসা হয় তখন ব্যান্ডেজ করা ছিল, অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়ার পর দেখা যায় মাথায় মোট নয়টা আঘাতের চিহ্ন। একটা খুব বড়, যার ভেতর দিয়ে হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। বাকি আটটা ইনজুরি ছিল। তার ভেতরে ছিল মাথার দুই পাশে তিনটা করে ছয়টি, মুখের ওপরে একটি, নাকের ওপরে একটি এবং চোখের নিচে একটি। ভেতরে ঢুকে যাওয়া হাড় বের করা হয়েছে, রক্তরক্ষণ বন্ধ করা হয়েছে। অন্য আঘাতগুলোও সব রিপেয়ার করা হয়েছে। আমার আশাবাদী। তবে এটা হেড ইনজুরি, ব্রেইনের ভেতরে রক্তক্ষরণের ব্যাপার। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন কিনা এখনই আমরা বলতে পারবো না। তাকে অন্তত ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ রাখার পর বলতে পারবো। তিনি শঙ্কামুক্ত কিনা প্রশ্নে ডা: জাহিদুর রহমান বলেন, এখনই শঙ্কামুক্ত কথাটা আমরা বলবো না। আগে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। কারণ তার মাথায় আঘাত লেগেছে, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ডান পাশ প্যারালাইজড ছিল সেটা আশা করি সচল হয়ে যাবে। তবে তাতে সময় লাগবে।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ছয়জনের মধ্যে তিনজন ঘটনার দায় স্বীকার করায় তাদের গ্রেপ্তার করা করা হয়েছে। বাকি তিনজনকে ছেড়ে দেযয়া হয়েছে। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় র‌্যাবের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। ছেড়ে দেয়ার মধ্যে রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর। র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীরের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া না যাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি আসাদুল ইসলাম, সান্টু ও নবীরুল। এ ঘটনায় জড়িত বলে এরই মধ্যে তারা দায় স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসবাদে জানিয়েছে চুরির জন্য তারা ভেন্টিলেটর দিয়ে ঘরে ঢোকেন। র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস জানান, এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য মোট ছয় জনকে আটক করা হয়। এদের মধ‌্যে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গাীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি। তিনি বলেন, জবানবন্দিতে আসাদুল দাবি করেছে ইউএনও মহোদয়ের বাসায় চুরির উদ্দেশ‌্যে প্রবেশ করে তারা। তবে আরো তদন্ত করে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো যাবে।




Archives
Image
খান শওকতকে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ
Image
আগামী তিন দিন দেশের সব বিভাগে কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে
Image
আমি নির্বাচিত হলে সদর উপজেলার দূর্নীতির ঘর তালাবদ্ধ করবো : এসএম জাকির হোসেন
Image
বরিশালে পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় কলেজছাত্রকে কুপিয়ে জখম
Image
থমথমে বরিশাল নথুল্লাবাদ, মিছিল থেকে আটক ২