Current Bangladesh Time
মঙ্গলবার মে ৭, ২০২৪ ৩:৩২ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ, প্রধান অভিযুক্ত ৫ দিনের রিমান্ডে 
Thursday August 4, 2022 , 11:08 pm
Print this E-mail this

জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম কাজ করছে

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ, প্রধান অভিযুক্ত ৫ দিনের রিমান্ডে


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : টাঙ্গাইলের মধুপুরে কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহণের বাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনা প্রধান অভিযুক্ত রাজা মিয়াকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন টাঙ্গাইলের আদালত। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত রাজা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে রাজা মিয়াকে টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। গ্রেফতার রাজা মিয়ার কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার বরাই গ্রাম থেকে ২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঈগল পরিবহণের বাসটির যাত্রা শুরু করে।

রাত সাড়ে ১১ টার পর সিরাজগঞ্জে রাতের খাবার খাওয়ার পর কড্ডার মোড় এলাকা থেকে তিন ধাপে ১০ জন যাত্রী বেসে ডাকাতরা ওই বাসে উঠে। চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসটি রাত সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়। অনেক যাত্রী তখন ঘুমাচ্ছিলেন। এরপরই শুরু হয় ডাকাতদের তৎপরতা। যাত্রীবেশী ডাকাতরা শুরুতেই অস্ত্রের মুখে ঘুমন্ত যাত্রীদের হাত, মুখ, চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, টাকা, স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়িতে থাকা নারীদের নির্যাতন করে। এক নারীকে ছয় জন ডাকাত বাসের মধ্যে গণধর্ষণ করে। টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর রাত ৩টা ২৫ মিনিটে মধুপুরের রক্তিপাড়া নামক স্থানে এসে বাসটির গতি কমিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর স্তূপে ধাক্কা খেয়ে কাত হয়ে পড়ে। শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় বাসের যাত্রী কুষ্টিয়ার হেকমত আলী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা করেন। ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে গণধর্ষণের শিকার ওই নারীর ধর্ষণের আলামত মিলেছে। ওই নারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নারীর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহেনা পারভীন জানান, তিন সদস্যের মেডিকেল টিম পরীক্ষা করেছেন। কিছু সাইন পজিটিভ আছে। সাইন অব স্ট্রাগল রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। গণধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারী জানান, ডাকাতির প্রতিবাদ করায় তার চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে ফেলে। পরে ছয় জন ডাকাত পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি করেন তিনি। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, মধুপুরে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। ভোরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) গণমাধ্যমের কাছে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন সেই নারী। তিনি বলেন, ডাকাতি শুরুর আগে আমার পাশের খালি সিটে ডাকাতদের একজন বসতে চাইলে তাকে বসতে দিইনি। ডাকাতি শুরু করলে আমি তাদের বাধা দিয়েছিলাম। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহণের একটি বাসে ঢাকা যাচ্ছিলেন ওই নারী। তিনি বলেন, রাত ৮টায় আমি বাসে উঠি। রাত ১১টার পর ডাকাতরা যাত্রীবেশে সিরাজগঞ্জের তিনটি আলাদা জায়গা থেকে বাসে ওঠে। তিনি বলেন, পরে আবার যখন আসে, তখন আমি তাকে বলি আপনি হেলপারকে ডেকে সিট নেন। পরে সে আর সেই সিটে বসেনি। কিছুক্ষণ পর তারা সিগারেট খেয়ে ধোঁয়া দেয় আমাদের গায়ে। এর ১০ মিনিট পরই শুরু করে ছিনতাই। বাসচালকের কাছে গিয়ে তিনজন তাকে জিম্মি করে। চালকের গলায় ছুরি চেপে ধরে সিট থেকে উঠতে বলে। তারা গাড়ি চালাবে বলে জানায়। এর পর তাকে তুলে বেঁধে ফেলে। আমার পাশে বসা হেলপারকে তুলে নেয়। এর পর আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমার হাত-মুখ চোখ বেঁধে ধর্ষণ করে। তিনি আরও বলেন, ছিনতাইকারীরা যার কাছে টাকা বেশি পাইছে তাকে কিছু বলেনি। সবার থেকে টাকা সব কিছু ছিনিয়ে নেয় তারা। এক মহিলা ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিল তার কাছে ৯ হাজার টাকা ছিল তাও নিয়ে নেয়। এ রকম ঘটনার বিচার চাই আমি। আজ এক নারীর সঙ্গে ঘটবে আরেক দিন আরেক নারীর সঙ্গে ঘটবে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। যাতে ওদের দেখে অন্যরা ভালো হয়ে যায় বলে তিনি জানান। ওই নারী যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সেই হাসপাতালের তত্বাবধায়ক জানান, ইতোমধ্যে ওই নারীর প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করে রিপোর্ট দিতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। মধুপুর থানাসূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় বাসের এক যাত্রী অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করেছেন।




Archives
Image
উপজেলা নির্বাচন : বরিশালে ভোট সামগ্রী বিতরণ
Image
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
Image
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট শুরু
Image
ভোলার লালমোহন থেকে ৭ বছর বয়সী অপহৃত শিশু উদ্ধার
Image
নির্বাচিত হলে সদর উপজেলার দশটি বিষয়ে আগে গুরুত্ব পাবে – ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন