|
সবার সাথে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে পুলিশের প্রতি-বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার
বরিশালে ২ সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত, ৩ পুলিশ সদস্য ক্লোজড!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত সরকারি প্রচারণার ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় পত্রিকার ২ ফটো সাংবাদিককে পেটানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির তিন সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার। ক্লোজড হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন-নায়েক মহসিন ও কনেস্টাবল কাওসার এবং জাহিদুল। ওসি জানান, ওই তিন পুলিশ সদস্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির দায়িত্বে ছিলেন, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তাদেরকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এরআগে শনিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে পুলিশের পিটুনিতে আহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেন আহত দুই সাংবাদিক। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ব্রিজের ঢালে ঘটে এ ঘটনা। আহতরা হলেন, বরিশালের স্থানীয় আঞ্চলিক দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক সাফিন আহমেদ রাতুল ও দৈনিক দখিনের মুখ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক নাছির উদ্দিন। সাফিন আহমেদ রাতুল জানান, পুলিশের পিটুনিতে তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং লোকলজ্জায় প্রথমে বিষয়টি গোপন করেছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার সন্ধ্যায় সহকর্মীদের বিষয়টি খুলে বলেন তারা। রাতুল আরো জানান, করোনায় ঘর থেকে বের না হওয়ার বিষয়ক একটি প্রচারণা চালাতে যাবেন বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেন। এ খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বিলম্ব হওয়ার কারণে তা না পেয়ে আবার শহরের দিকে ফিরছিলাম। ফেরার পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেনের গাড়ির পাশেই দাড়িয়ে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমার ও নাছিরকে বহনাকরী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও তারা লাঠি দিয়ে পেটায়। রাতুল জানান, ঘটনার সময় তারা নিয়মানুযায়ী মাস্ক পরিহিতো ছিলেন এবং সাথে ক্যামেরাও ছিলো। আর যে পুলিশ সদস্যরা পেটায় তারাও মাস্ক পরিহিতো ছিলো এবং নেইমপ্লেটও ছিলো না তাই কাউকে চিনতেও পারিনি। এদিকে পিটুনিতে এদের শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে গেছে এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনিও ঘটনাটি আহত ফটো সাংবাদিক রাতুলের কাছ থেকে শুনেছেন। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য সম্ভব সব কিছু করা হবে। আমার অফিসারের অবহেলা থাকলে তার শাস্তি হবে, অন্যকেউ করলেও আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। অপরদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানান, সংকটময় পরিস্থিতিতে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে পুলিশের প্রতি। এরপরও সাংবাদিকের সাথে অসদ আচরণ করে থাকলে, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন আহত সাংবাদিকদ্বয়সহ বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএমএসএফসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পাশাপাাশি এ ঘটনার নিন্দা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
Post Views:
১০৫
|
|