|
আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে নিক্ষেপকারীকে শনাক্তের চেষ্টা
রাজধানীর মগবাজারে ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেলে যুবক নিহত
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর মগবাজারে ফ্লাইওভার থেকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেল মাথায় বিস্ফোরিত হয়ে সিয়াম মজুমদার নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে তাঁর মাথার একাংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে মগবাজারের নিউ ইস্কাটন রোডে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রাজধানীর মগবাজারে ফ্লাইওভার থেকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেল মাথায় বিস্ফোরিত হয়ে সিয়াম মজুমদার নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে তাঁর মাথার একাংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে মগবাজারের নিউ ইস্কাটন রোডে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিয়াম ঘটনাস্থলের সড়কের উল্টো দিকে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশন’ নামের একটি মোটর পার্টসের দোকানে কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার কলোনি এলাকায়। তাঁর বাবা আলী আকবর মজুমদার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। তারা নিউ ইস্কাটনের ২০০০ গলির একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সিয়াম ছিলেন ছোট। সিয়ামের সহকর্মী অহিদুল হাওলাদার জানান, গত তিন-চার বছর ধরে সেখানে কাজ করতেন সিয়াম। গতকাল সন্ধ্যার কিছু পরে চা খাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন সিয়াম।

চা খেয়ে শিগগিরই দোকানে ফিরে আসার কথা ছিল তাঁর। তবে এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর লোকজন এসে দোকানে খবর দেয়। সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ফ্লাইওভার থেকে দুর্বৃত্তরা একটি শক্তিশালী ককটেল নিক্ষেপ করেন। এতে ওই যুবক গুরুতর আহত হন এবং কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ফ্লাইওভার থেকে নিক্ষেপ করা ককটেলটি যুবকের মাথায় বিস্ফোরিত হয়। ককটেলটি কোন ধরনের তা তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তবে এটি কাউকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই ফ্লাইওভার থেকে কেউ বা কারা এটি ছুড়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে নিক্ষেপকারীকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ঘিরে রেখেছে। রক্তমাখা চায়ের দোকানের বিভিন্ন জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। নিহতের বাবা-মা ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন। উপস্থিত লোকজন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে, এ ধরনের ঘটনা সবার মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার ভয় সৃষ্টি করে। ফুটপাতের যে চায়ের দোকানে বিস্ফোরণটি ঘটে, সেই দোকানি মো. ফারুক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ছেলেটি আমার কাছে এসে চা চেয়েছিল। আমি চা বানাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হলো। দেখি, ছেলেটি মাটিতে পড়ে আছে। মাথা থেকে রক্ত ঝরছে। মাথার বিভিন্ন অংশ রাস্তায় ছিটকে গেছে।ফারুকের ধারণা, ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেল বা বোমাই তাঁর মাথায় পড়েছে। রাত ৯টার দিকে আহাজারি করতে করতে ঘটনাস্থলে আসেন সিয়ামের বাবা আলী আকবর মজুমদার। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টায় বাসা থেকে কাজে বের হয়েছিল সিয়াম। মোটর পার্টসের দোকান থেকে চায়ের দোকানে কাপ দিতে গিয়েছিল। ওর মাথায় বোমা পড়েছে। আমার ছেলেটা এভাবে শেষ হয়ে গেল।’ হাতিরঝিল থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, তারা ধারণা করছেন মগবাজার ফ্লাইওভারের ওপর থেকে কেউ ককটেল নিক্ষেপ করেছে। সেই ককটেল নিচের রাস্তায় থাকা ওই যুবকের মাথায় পড়লে বিস্ফোরিত হয় এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, ককটেলটি কোন ধরনের বা কী উপাদানের তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, র্যাব ও বম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে।
Post Views: ০
|
|