Current Bangladesh Time
রবিবার অক্টোবর ৫, ২০২৫ ৮:২৭ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » ধর্ষণ মামলার প্রতিশোধ নিতে পিরোজপুরের কাউখালীতে ইউপি সদস্যকে খুন 
Sunday February 5, 2023 , 1:58 am
Print this E-mail this

বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন, শরীর ও মুখমণ্ডল ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত করে নৃশংসভাবে হত্যা

ধর্ষণ মামলার প্রতিশোধ নিতে পিরোজপুরের কাউখালীতে ইউপি সদস্যকে খুন


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদারকে প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার মূলহোতা ও প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম গাজী সিদ্দিকুর রহমান (৫৫)। তিনি উপজেলার ৫ নম্বর শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। র‌্যাব জানিয়েছে, ২০১১ সালে নিহত মামুনের আত্মীয়া জনৈক নারীকে ধর্ষণ করার দায়ে গ্রেফতার সিদ্দিকুরের ভাই কামাল এবং ভাতিজা আসাদুলের বিরুদ্ধে নিহত মামুন বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে তারা মামুনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পিরোজপুরের কাউখালীর শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদারকে প্রকাশ্য দিবালকে কতিপয় দুষ্কৃতকারী কুপিয়ে বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে, শরীর ও মুখমণ্ডল ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে সিদ্দিকুর রহমানকে প্রধান আসামি করে তার সহযোগী আরও ১০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। কমান্ডার মঈন বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপরই র‌্যাব এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিনগত রাতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন এলাকা থেকে মামুন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি গাজী সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন জানান, নিহত মামুন হাওলাদার পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। তার সঙ্গে গ্রেফতার সিদ্দিকুর, তার ভাই কামাল এবং ভাতিজা আসাদুলের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক আরও বলেন, ২০১১ সালে নিহত মামুনের আত্মীয়া জনৈক নারীকে ধর্ষণ করার দায়ে গ্রেফতার সিদ্দিকুরের ভাই কামাল এবং ভাতিজা আসাদুলের বিরুদ্ধে নিহত মামুন বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় আসামি কামাল ও আসাদুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে তারা মামুনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মামুনের সঙ্গে সিদ্দিকুর ও কামালের বাকবিতণ্ডা হয়। পূর্বশত্রুতার জের ধরে গ্রেফতার সিদ্দিকুরের নেতৃত্বে কামাল, আসাদুল এবং তাদের আরও কয়েকজন সহযোগী মিলে মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। র‌্যাবের এই মিডিয়া উইং কর্মকর্তা আরও জানান, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সিদ্দিকুর, কামাল, আসাদুল এবং সজল জমাদ্দারসহ বেশ কয়েকজন মোল্লারহাট বাজারে সিদ্দিকুরের অফিসে একত্রিত হয়ে হত্যার নীলনকশা তৈরি করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মামুনকে কৌশলে মোটরসাইকেলে করে উত্তর ভিটাবাড়িয়ার একটি স্থানে নিয়ে আসার দায়িত্ব দেওয়া হয় সজল জমাদ্দারকে। কামাল ও আসাদুলসহ অন্যদের ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করে ভিটাবাড়ী এলাকায় গাছ ফেলে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সজল জমাদ্দারকে পিটিয়ে আহত করার কথা বলা হয়, যেন বিষয়টি নিয়ে জনমনে কোনো সন্দেহের সৃষ্টি না হয়। গ্রেফতার সিদ্দিকুর ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দেন। প্রথমে পিরোজপুর এবং পরে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় আত্মগোপন করেন। এরপর সে অবস্থান পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন এলাকায় যান।

কে এই গ্রেফতার গাজী সিদ্দিকুর রহমান?
গ্রেফতার গাজী সিদ্দিকুর রহমান ১৯৮৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় এসে তার এলাকার জনৈক ঠিকাদারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এসময় রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০০২ সালে ঠিকাদারির কাজ ছেড়ে গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে ফিরে যান এবং সেখানে মুরগির ফার্ম ও মাছের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীকালে ২০০৩ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের পর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, বিভিন্ন ধরনের বিরোধের জের ধরে তার নানাবিধ অপকর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি এবং অস্ত্র মামলাসহ প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি একাধিকবার কারাভোগও করেছেন। গ্রেফতার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।




Archives
Image
রাজধানীর ধানমন্ডি লেক থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
Image
মারা গেছেন সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ
Image
তোফায়েল আহমেদের অবস্থা সংকটাপন্ন
Image
অক্টোবরে আসছে বাম দলগুলোর নতুন জোট
Image
বরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ইয়াবা সেবনের ভিডিও ভাইরাল