|
জীবনের কাছে হেরে গেলেন কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহার
সেই কলেজ শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : জীবনের কাছে হেরে গেলেন কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহার। নাটোরে ছাত্রকে বিয়ে করে আলোচিত এই শিক্ষিকা বেছে নিলেন আত্মহননের পথ। স্বামীর সঙ্গে সুখে সংসার করতে চেয়েও বিয়ের মাত্র আট মাসের মাথায়ই টানলেন জীবনের ইতি! রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, আত্মহত্যা করেছেন গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহার। তবে ঠিক কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন, তা জানা যায়নি।

এ ঘটনায় তাঁর স্বামী মামুন হোসেনকে (২২) পুলিশ আটক করেছে। লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি বিয়ে করেছিলেন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মামুন হোসেনকে। মামুন গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মাদ আলীর ছেলে। অসম বয়সী ছাত্র ও শিক্ষিকার বিয়ের খবর চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশ হলে তা নিয়ে সমালোচনায় মেতে উঠেছিলেন সমাজের এক শ্রেণির মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ট্রলের শিকার হয়েছিলেন মামুন-খাইরুন নবদম্পতি। পাশাপাশি ছাত্র-শিক্ষিকার বিয়েতে অভিনন্দনের জোয়ারও ছিল সমানভাবেই। সবকিছুকে স্বাভাবিকভাবে নিয়ে ২২ বছরের মামুন তখন জানিয়েছিলেন, কথায় আছে পাছে লোকে কিছু বলে। তাই কে কী বলল সেগুলো মাথায় না নিয়ে নিজেদের মতো সংসার গুছিয়ে নিয়ে জীবন শুরু করেছি। আমি বিশ্বাস করি, মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। সকলের কাছে দোয়া চাই আমরা। মামুনের সঙ্গে বিয়ের কথা ফেসবুকে ভাইরাল হলে কলেজের শিক্ষিকার চাকরিটি চলে যায় খাইরুনের। তারপরও নতুন জীবন নিয়ে আশাবাদী ছিলেন ৪০ বছরের খাইরুন নাহার। খাইরুন জানিয়েছিলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। খাইরুন বলেন, ‘এক সময় আত্মহত্যা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখনই মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় ফেসবুকে। মামুন আমার খারাপ সময়ে পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে নতুন করে বাঁচার। এরপরই দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।’ খাইরুন বলেছিলেন, ‘সমাজে কে কী বলে, সেটি বড় বিষয় নয়। আমরা যদি দু’জন ঠিক থাকি, তাহলে সব ঠিক। আমি অনেক সুখে আছি।’ মাত্র ছয় মাসের মাথায় এসে সেই মনোবল কীভাবে হারালেন খাইরুন! জীবনযুদ্ধে কেন পরাজয় মেনে নিলেন তিনি! উল্লেখ্য, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা খাইরুনের সঙ্গে মামুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে দুজন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর সম্প্রতি বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। তবে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার মেনে নেয়নি।
Post Views: ০
|
|