|
হাই সোসাইটির প্রতিটি নারীকান্ডের নেপথ্যে কোন না কোনভাবে আছেন ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা
এই পিয়াসা সেই পিয়াসা, নারী ব্যবসার গডমাদার!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা, আপন জুয়েলার্স মালিকের ছেলে সাফাতের সাবেক স্ত্রী। আপন জুয়েলার্স মালিকের ছেলে স্ত্রী হিসেবে ছিলেন বিত্তবৈভবের মধেই। কিন্তু তিনি আরো চাইলেন। এক সময় আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। কিন্তু এই স্বপ্নই তাকে দু:স্বপ্নের দুয়ারে নিয়ে গেছে। প্রবেশ করেছেন অন্ধকার জগতে। হয়েছেন হাই সোসাইটর বাসনা পূরণের গডমাদার। সর্বশেষ হয়েছেন তোলাবাজ। তিনি ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা। বড়লোক বাবার সন্তান কিংবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের মনোরঞ্জনের জন্য নারী সাপ্লাই দিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করেন পিয়াসা। হাই সোসাইটির প্রতিটি নারীকান্ডের নেপথ্যে কোন না কোনভাবে আছেন ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা। আবার কখনো তিনি সামনে চলে আসেন কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে। কখনো এই জটিলতা সৃষ্টি হয় সাধার নিয়মে, কখনো তিনিই সৃষ্টি করেন নানান কুটচালে। এরপর গোলমার থেকে তিনি কামান মাল। হাইসোসাইটর প্রায় প্রতিটি নারী কাহনের সঙ্গেই তিনি জড়িত, কখনোকখনো চলেআসে তার নাম। এবারও কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া মৃতুর পরও চলে এসেছে পিয়ানা প্রসঙ্গ।
কে এই পিয়াসা?
এনটিভির সুপার হিরো, সুপার হিরোইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শোবিজ জগতে আসা ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা। পিয়াসার বাড়ি চট্টগ্রামের আজগর দিঘী লেনে। তার বাবার নাম মাহবুব আলম, যিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত রোগী। নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবাবারের পিয়াসা ১২ বছর আগে ঢাকায় আসেন। নানান ঘাটের জল ও ঘোল খাবার পর এশিয়ান টিভির সাবেক এমডি, বর্তমানে কারাঅন্তরীন মিজানের সখ্যতায় মিডিয়া পাড়ায় মোটামুটি পরিচিতি নাম হয়ে ওঠে, পিয়াসা! সেই সময় তিনি অন্ধকার জগতের গডমাদার হয়ে ওঠৈন।
পিয়াসা এখন কোনো মিডিয়া, চাকুরি বা প্রকাশ্য ব্যবসায় নেই। স্বাভাবিক কোন অয়ের উৎস নেই তার। কিন্তু থাকেন গুলশানের অভিজাত ফ্লাটে। চলাচল করেন কোটি টাকার বিএমডাব্লিও গাড়িতে। সন্ধ্যা হলেই তাকে একদল তরুনীদের নিয়ে সিসা বা মদের আড্ডায় দেখা যায়।
বড়লোকদের মনোরঞ্জন ও ফাঁসানো
বড় লোক বাবার সন্তানদের বিপথগামী করে, তাদের মনরঞ্জনের ব্যবস্থা করে তাদের থেকে সুবিধা আদায় করাই তার আয়ের আসল উৎস বলে জানায় সূত্রটি। জানা যায়, আন্ডারওয়াওয়াল্ড-এর নারী সাপ্লাইয়ার এই পিয়াসা। বড়লোক বাবার সন্তান কিংবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের মনোরঞ্জনের জন্য নারী সাপ্লাই দিয়ে তাদের সুনজরে থেকে বিলাসী জীবন যাপন কারী পিয়াসা। আবার এক পর্যায়ে ফাঁসিয়েও দেন। দুই ভাবেই তিনি অর্থ কামান। কেউ কেউ তাকে আরেক পাপিয়া বলেও সম্বোধন করে থাকেন। পিয়াসা সঠিক আয়ের কোনো উৎস না থাকলেও তার উচ্চাভিলাসী জীবন যাপনের প্রমান পাওয়া গেছে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজে। ২০১৭ সালের আপন জুয়েলার্স এর মামলার ঘটনায়ও তার নাম আলোচিত হয়েছিল। সেই মামলা তার ইন্ধনেই হয়েছিল বলে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সেই সময় জোর দাবি তুলেছিলন।
রেইনট্রি হোটেলে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা
২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ‘ধর্ষণের’ শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে নাম ছিল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার। প্রথমে মামলা করতে কথিত ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু সেই পিয়াসার বিরুদ্ধেই আবার মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগীরা। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জুয়েলারি শপ আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ছিলেন ওই ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি। পিয়াসা ছিলেন সাফাত আহমেদের সাবেক স্ত্রী। রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের ওই ঘটনার কিছু দিন আগেই সাফাতের সঙ্গে পিয়াসার ডিভোর্স হয়েছিল।
মুনিয়ার মৃত্যুতেও আলোচনায়
চার বছর পর আবারও আলোচনায় সেই পিয়াসা। গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের হয়েছে, তাতেও পিয়াসার নাম রয়েছে। গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘গত ২৩ এপ্রিল সায়েম সোবহান আনভীর মুনিয়াকে হঠাৎ বকাঝকা করেন। মুনিয়া কেন ফ্ল্যাট মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছে এবং ছবি তুলেছে। ফ্ল্যাট মালিকের স্ত্রী সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে। এটা আবার পিয়াসা দেখেছে। পিয়াসা মালিকের স্ত্রীর ফেসবুক ফ্রেন্ড ও পরিচিত। পিয়াসা আনভীরের মাকে সব বলে দেবে। আর আনভীরের মা বিষয়টি জানতে পারলে মুনিয়াকে মেরে ফেলবে বলেও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।’
পিয়াসার বক্তব্য
নতুন করে আলোচনায় আসার পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পিয়াসা। বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় যে পিয়াসার কথা বলা হয়েছে সেই ব্যক্তি আপনি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি। আমিই বিষয়টি আনভীর ভাইয়ের মাকে বলেছি। আনভীর ভাইয়ের আগের সংসার রয়েছে। সেটি বাঁচানোর জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এতে কি আমার অপরাধ হয়েছে?’ পিয়াসার আরও বলেন, ‘এই ঘটনার নেপথ্যে আরও অনেক কাহিনি আছে। এই মেয়ে (মুনিয়া) তো একটা সাইকো ছিল। আনভীর ভাই বিবাহিত জানা সত্ত্বেও কেন তার দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেছিল? তাকে তো আগে আমরা কুমিল্লায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সে লোভী। সে একটাৃ।’ এ ঘটনায় চট্টগ্রামের হুইপপুত্র শারুণের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন পিয়াসার। এ সংক্রান্ত কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশটও পাঠান গণমাধ্যমে। সেখানে মুনিয়া শারুণকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমার কিছু হয়ে গেলে আপনি আমার পরিবারকে একটু দেইখেন।’ শারুণকে কিছু কল রেকর্ড ও স্ক্রিনশট দিয়ে মৃত্যুর পর এসব সবাইকে দেওয়ার জন্য বলেন মুনিয়া।
Post Views: ০
|
|