|
তিনি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে
গাড়ি পোড়ানোর নির্দেশনার দায়ে আটক নিপুণ রায় চৌধুরী
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের সরাসরি নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববার (২৮ মার্চ) বিকেলে রায়েরবাজারের নিজ বাসা থেকে বিএনপির এ নেত্রীকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী হেফাজতে ইসলামের হরতালে তার দলীয় ক্যাডারদের গাড়ি পোড়ানোর নির্দেশনা দেন। নিপুণ রায়ের নির্দেশনা পালনকারী কেরানীগঞ্জের স্থানীয় বিএনপি নেতা আরমানকেও এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, নিপুণ রায় চৌধুরী কেরানীগঞ্জের স্থানীয় বিএনপি নেতা আরমান, খোরশেদ ও শাহীনকে মোবাইলে হরতালে বাসে বা যেকোনো যানবাহনে আগুন লাগিয়ে তা ভিডিও করে তাকে পাঠাতে বলেন। আর এ নির্দেশনার ফলে শাহীন একটি বাসে আগুন লাগানোর কথা স্বীকার করেছেন, তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ চলে আসায় ভিডিও করতে ব্যর্থ হন তিনি। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি নেতা ও নিপুণ রায়ের অনুসারী আরমান ও খোরশেদ গাড়িতে আগুন ধরান এবং ছবি নিপুণের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। জানা গেছে, শনিবার (২৭ মার্চ) রাতে ও দিনে নিপুণ রায়ের নির্দেশনানুযায়ী কেরানীগঞ্জের বিএনপি নেতা আরমান, খোরশেদ ও শাহীন মালিবাগ ও সায়েদাবাদে বাসে আগুন দেন। নিপুণ রায় চৌধুরী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে।

নিপুণ রায়ের পেছনের গল্প :
বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিপুণ রায় চৌধুরী, পেশায় আইনজীবী। রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ ও বিয়ে হওয়ায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজনীতিতে সক্রিয়। ইডেন কলেজের সাবেক এই ছাত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় হন ছাত্রজীবন থেকেই। পরিবার থেকেই নিপুনের রাজনীতির হাতে খঁড়ি এমনটাই বলছেন তার বাবা নিতাই রায় চৌধুরী। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায়। একই সঙ্গে তিনি কেরানিগঞ্জ দক্ষিণ শাখা বিএনপির সভাপতি। নিপুণের শ্বশুর সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। স্বামী অমিতাভ রায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। স্ত্রী, বাবা ও শ্বশুর রাজনীতিতে থাকলেও তা থেকে দুরে রয়েছেন অমিতাভ রায়।এদিকে নিপুণের বাবা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, যিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী। নিপুনের দুই ভাই ব্যারিস্টার। বাবা ও শ্বশুর রাজনীতিতে থাকায় অনেক সহজেই তিনি উঠে এসেছেন এমন ধারণা দলের অনেক নেতাকর্মীদের। তবে মাঠের রাজনীতিতেও তার অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই বলে মানছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। মিছিল মিটিং কিংবা সভা সমাবেশ সর্বত্রই তার সমান উপস্থিতি। দিন কি রাত, সকাল কি সন্ধা দলের সকল কর্মসূচিতে দেখা গেছে নিপুণ রায়কে। তার এই কর্মচঞ্চলতা রাজনীতিতে এগিয়ে নিয়েছে অনেকটা পথ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার প্রতিবাদে নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত হয় কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচি। সেখানে দেখা যায় নিপুণকে। গরম জলে ভিজেও যেন ক্ষান্ত হননি তিনি। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে নেওয়া হয় হাসপাতালে। এরপরও বহু মিছিল মিটিং সভা সমাবেশে সক্রিয় ভূমিকা রেখেই চলেছেন নিপুণ। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বেশ কিছু ঝঁটিকা মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিলেও দেখা গেছে তাকে।
Post Views: ০
|
|