Current Bangladesh Time
শুক্রবার নভেম্বর ২১, ২০২৫ ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে দুই যুগেও কারো চোখে পরেনি রাস্তার পাশে ঝুপড়িতে থাকা অসহায় মাসুদাকে 
Friday July 3, 2020 , 5:58 pm
Print this E-mail this

মানুষের বাড়ি ঝি’য়ের কাজ করে একমাত্র পুত্রসন্তান কাওসারকে নিয়ে শুরু করেন সংগ্রামী জীবন যুদ্ধ

বরিশালে দুই যুগেও কারো চোখে পরেনি রাস্তার পাশে ঝুপড়িতে থাকা অসহায় মাসুদাকে


শামীম আহমেদ, অতিথি প্রতিবেদক : পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের আসমানী কবিতার আসমানীর চরিত্রর মতোই মাথার উপর চালাবিহীন ঝুপড়িতে চরম অমানবিকতার মধ্যে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আরেক আসমানীর চরিত্র জীবন সংগ্রামী বিধবা মাসুদা বেগম। স্বামীর মৃত্যুর পরে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সরকারী রাস্তার পাশে প্রায় দুই যুগ ধরে বসবাস করার পরও কারো নজরে আসেনি এমনকি কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিরা ফিরে দেখেনি একনজন। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বছরের পর বছর ধর্ণা দিয়েও মাসুদার কপালে জোটেনি সরকারী সাহায্যের একটি ঘর বা ঘর তোলার কোন উপকরণ সাহায্য। সূত্রমতে, উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের রাস্তার পাশে বসবাসকারী বিধবা মাসুদা বেগম (৪৮) জানান, এই গ্রামের লাল চান মিয়ার সাথে ত্রিশ বছর পূর্বে একই উপজেলার অশোকসেন গ্রামের মন্নান মোল্লার মেয়ে মাসুদা বেগম এর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে তাকলেও প্রায় দুই যুগ আগে স্বামী চান মিয়া মারা যাবার পরে বাপেরে ভিটায় তার জায়গা না থাকার কারনে ওই বছরই মাগুরা বেইলী ব্রিজের পাশে ঝুপড়ি তুলে তাতেই বসবাস করতে শুরু করেন। মানুষের বাড়ি ঝি’য়ের কাজ করে কোন রকমে পেট চালিয়ে একমাত্র পুত্রসন্তান কাওসারকে নিয়ে শুরু করেন সংগ্রামী জীবন যুদ্ধ। সারা জীবন অন্যের বাড়ীতে ঝি’য়ের কাজ করে জীবন জিবিকা চালাতে পারলেও বর্তমানে করোনা প্রাদুর্ভাবকালে কাজের সুযোগ না থাকায় সংগ্রামী মাসুদা বেগমের বেঁচে থাকার আশা প্রতিনিয়িত ক্ষীণ হয়ে আসছে। কান্না জড়িত কন্ঠে জানান মাসুদা বেগম বলেন, আধাপেটা খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন যাপনকরতে হচ্ছে তাদের। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঞ্ঝা মাথায় নিয়ে ছেলেকে নিয়ে ঝুপড়ির মধ্যে কোন রকমে মাথা গোজেন তিনি। ফুটো টিনের ছাউনির ঝুপড়িতে ভাঙ্গা একটা চৌকি ছাড়া চোখে পড়েনি কিছুই। ওই চৌকির উপরেই তার কাঁথা-কাপড়, সহায় সম্বল আর পাতানো সংসার। বর্ষায় পানি পরে ভিজে যায় সবকিছু। বৃষ্টির পানি থেকে নিজেদের রেহাই করতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে ভর্ষার রাতে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় মাসুদার। মাসুদা বেগম আরও বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে স্থানীয় মেম্বর, চেয়ারম্যানদের কাছে একটি ঘরের জন্য অনেকবার গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে দেয়া হয়নি কোন ঘর বা ঘরের সহায়তা। তাই বাধ্য হয়ে রাদে পুরে, বৃষ্টিতে ভিজে সরকারী রাস্তার পাশে এই ঝুপড়িতে বসবাস করছেন তিনি। রাতের গভীরতায় ও নির্জনতায় বেঁচে থাকার আসা ক্ষীণ হয়ে আসছে। অন্ধকারে রাস্তার শিয়াল, কুকুরের ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হয় তাকে। মাসুদা আক্ষেপ করে বলেন, দয়ালু প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের ঘর দেয়, কিন্তু কোন মেম্বর-চেয়ারম্যান বা প্রশাসনের স্যারেরা একটি ঘর দেয়নি আমাকে। মাগুড়া এলাকার বসবাসকারী সংশ্লিষ্ট রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: ইলিয়াস তালুকদার বলেন, এমন অসহায় একুিট পরিবারের কথা তার জানা ছিল না। তবে জরুরী ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই পরিবারকে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন ইসলাম চৌধুরী জানান, বিধবা দরিদ্র মাসুদা বেগম যদি আশ্রায়ন প্রকল্পে থাকতে চায় তাহলে তাকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। অন্যথায় যদি ওই অসহায় নারী ৫ শতাংশ জায়গা সংগ্রহ করতে পারেন তবে তাকে একটি ঘর সরকারীভাবে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।




Archives
Image
সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Image
বরিশালে সড়কের পাশে থাকা বাসে আগুন
Image
যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা : বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
Image
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে মিষ্টি বিতরণে সংঘর্ষ : বরিশালে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
Image
মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে যা বললেন শেখ হাসিনা