|
কাউখালীর মানুষ ঘরে থাকলে এবং শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখলে আল্লাহ্’র রহমতে কাউখালীবাসীও বাচঁবে, আমিও বাচঁবো
পিরোজপুর কাউখালীর একজন সফল করোনা যোদ্ধা : ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা
মো: সজিব হোসেন ফরাজী : পিরোজপুরের কাউখালীতে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে শুরু থেকেই ঝুঁকি নিয়ে সর্বদাই যুদ্ধ করে যাচ্ছেন কাউখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা। প্রতিটাদিনই উপজেলাবাসীকে করোনা থেকে বাচাঁতে, ঘরে রাখতে তার যা যা করণীয় তা তিনি করে যাচ্ছেন। তার এই কষ্ট স্বার্থকও হয়েছে। বলার আর অপেক্ষা রাখে না, পিরোজপুর কাউখালীর একজন সফল করোনা যোদ্ধা, ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা। ইতোমধ্যেই গৃহবন্দী মানুষকে নিরাপদ রাখতে ইউএনও’র গৃহিত বহুমূখী উদ্যোগ কাউখালী জনপদে করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট সুফলও বয়ে এনেছে। করোনা মোকাবেলায় ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। লোক সমাগম যেন না হয়, সে জন্য বাজারগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন। জনসাধারণ যাতে বাড়িতে বসেই তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে পারে, তাই তার উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথম কাউখালী উপজেলায় ভ্রাম্যমান বাজার চালু হয়েছে। এই উদ্যোগ নেয়ায় সারা দেশে আলোচনায় আসেন কাউখালীর এই করোনা যোদ্ধা, ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা। বর্তমানে ৬০টি ভ্রাম্যমান বাজারে ভ্যানগাড়ি ও দুটি পিকআপ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার শহর ও গ্রামগুলোতে গিয়ে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি জনসাধারণের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভ্রাম্যমান বাজারের মালিকদের মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে, ফোন দিলেই বাড়ির সামনেই পৌঁছে যাচ্ছে প্রশাসনের এই ভ্রাম্যমান বাজার। এই বাজারগুলোত রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, সবজি, মুরগী-মাছ, ডিম, ফল, কাপড় আরো কত কি। এছাড়া ভাসমান বাজার, ভাসমান টহলের ব্যবস্থা করেন। তিনি নিজেই নৌকা নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী উপহার গৃহবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণ করেন। করোনায় জেলা প্রশাসক ও ডাক্তারের মৃত্যুর খবর এবং ডাক্তার, সাংবাদিক ও পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনেও ভয় পান না, তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে যান তিনি। এই পরিস্থিতিতেও কাউখালী উপজেলার মানুষকে করোনা থেকে বাচাঁতে, জনসাধারণকে বাড়িতে থাকার জন্য এবং শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সবসময়ই অনুরোধ করছেন তিনি। ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা তার নিজ জীবন বাজি রেখে দিন-রাত মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। গৃহবন্দি মানুষ, যাদের ঘরে খাবার নাই, তারা ইউএনওকে ফোন দিলেই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে তাদের বাড়িতে। ইউএনও’র সাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রফিকুল হক এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমকর্তা জি এম সাইফুল ইসলাম, এ দু’জন ব্যক্তিও একসাথে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষের জন্য বই, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, শুকনা খাবারসহ বিভিন্ন উপহারও দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষদের নিয়মিত খোঁজ-খবরও রাখছেন তিনি। ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা বলেন, কাউখালীর মানুষ ঘরে থাকলে এবং শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখলে আল্লাহ্’র রহমতে কাউখালীবাসীও বাচঁবে, আমিও বাচঁবো। মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে যত ধরণের কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন তা গ্রহণ করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, সবার প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত কাউখালীতে করোনা রোগী পাওয়া যায় নাই। সামনের দিনগুলোতে এভাবেই কাটুক কাউখালীর আগামী দিনগুলো। পিরোজপুর জেলা সাতটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে জেলায় পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন মারা গেছেন। পিরোজপুর জেলা লকডাউন ঘোষনা করেছেন জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহামম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। কাউখালী থানা থানা পুলিশ ওসি মো: নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ইউএনওকে ব্যাপক সহযোগীতা করে আসছেন এবং কাউখালীতে লকডাউন বাস্তবায়নে ব্যাপক কাজ করছেন। উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো খুলনা-বরিশাল মহা সড়কের শিয়ালকাঠী চৌরাস্তায়, আরেকটি জয়কুলে। এছাড়া প্রতিনিয়ত কাউখালী থানা পুলিশ, সেনা বাহিনী, র্যাব এবং সাংবাদিকরা জনসচেতনা মূলকপ্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
Post Views: ০
|
|