|
মাদকের বিরুদ্ধে সর্বদা পুলিশের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’-ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম
বরিশাল নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডে জুয়েল’র ভয়াবহ মাদক সিন্ডিকেট!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : সাম্প্রতিক আতঙ্কের আরেক নাম করোনা ভাইরাস। চিনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হওয়া মহামারী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। শুধু লক্ষ্য করা যায় চারদিকে মৃত্যুর মিছিল। অদৃশ্য করোনাভাইরাসের ভয়ংকর ছোবলে ক্রমশ:ই তছনছ হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের স্বাভাবিক পরিস্থিতি। দিন দিন আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের নানাবিধ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সার্বিক অবস্থা এখনো নিয়ন্ত্রণেই বলা যায়। চারিদিকে যখন এরকম থম-থমে পরিবেশ ঠিক সেই সময়ে সক্রিয় ভয়াবহ মাদকের সিন্ডিকেট। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একের পর এক অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হচ্ছে কিন্ত অধিকাংশ মাদক ব্যবসায়ীরাই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে রক্ষার নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। ঠিক সেই মুহুর্তেও দেশকে ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে করোনাকে উপেক্ষা করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অভিনব পন্থায় লোকচক্ষুর আড়ালে তরুন প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছে ভয়াবহ এই মাদকের নেশায়। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ঠিক সেই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নব্য গজিয়ে উঠা মাদক ব্যবসায়ীরা। সূত্র জানায়, ভয়াবহ এ মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বরিশাল নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ড রুপাতলী উকিল বাড়ী সড়ক এলাকায়। এক সময়ে এলাকাটি ছিল সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত। বর্তমানে এ এলাকাটি মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বাড়ছে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। এলাকাটি জুড়ে মাদকের বিস্তার এতটাই বিস্তার লাভ করেছে যেন ১২ বছরের শিশুটিও মাদক বিক্রি ও সেবন থেকে বাদ পড়ছে না। এছাড়াও এলাকাটিতে অবাধ মাদক ব্যবসা ও সেবনের কারণে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকরা দিন-দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে বাড়ছে সামাজিক ব্যাধি, দূরত্ব, ধংস হচ্ছে পরিবার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানায়, এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চলে আসছিল। প্রশাসনের অভিযানে চিহ্নিত ২/১ জন ধরা পড়লেও অধিকাংশ-ই বিভিন্ন কৌশল পালটে থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। ভয়াবহ এ মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জাহিদুল, হাদিসের পুত্র সজিব , জুয়েলের পুত্র আবু-বকর (মরন), ফোরকানের পুত্র নাইম, এছাড়াও মাইনুল, ইমাম (হিজড়া), শাহাদাত সহ অসংখ্য উঠতি বয়সি তরুন জড়িত রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, ওরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটির বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মাদক সেবন ও কেনাবেচার সাথে জড়িত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অবস্থান বদলে মাদক বিক্রির এক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে গজিয়ে উঠা নব্য এ মাদক ব্যবসায়ীরা। তাদের কথামতো নির্ধারিত স্থানে গিয়ে চাহিদা মতো মাদক কিনছে ও তা সেবন করছে মাদকসেবীরা। এর মধ্যে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী এলাকাবাসির তোপের মুখে মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের নামও প্রকাশ করেছে। যার প্রমানস্বরুপ একটি অডিও রেকর্ডও এলাকাবাসীর কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। একাধিক মাদক ব্যবসায়ী জানায়, এ এলাকাটিতে মাদকের মুল হোতা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে হারুন হাওলাদারের পুত্র জুয়েল হাওলাদার। সুত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে জুয়েল হাওলাদারের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা জানায়, বর্তমানে এলাকাটিতে মাদকের গডফাদার জুয়েলকে বলা হয়। জুয়েল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক ক্রয় করে এলাকার উঠতি বয়সি তরুনদের কাছে বিক্রি করছে। আর এ পুরো বিষয়টি জুয়েল তার নিজ কৌশল অবলম্বন করে মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে যাচ্ছে। অভিনব এ কৌশল অবলম্বন করে জুয়েল ও তার সহযোগীরা থেকে-ই যাচ্ছে ধরা- ছোয়ার বাইরে। জানা যায়, জুয়েল মাদক ব্যবসা জড়িত হওয়ার পর হঠাত করেই তিনি আঙ্গুল ফুলে যেন কলাগাছ হয়েছেন। ক্রয় করেছেন জমিও। জুয়েলের বিরুদ্ধে ইতি-পুর্বে বরিশালের একাধিক পত্রিকায় মাদক সংশ্লিস্টতার সংবাদও প্রকাশ করা হয়। এদিকে জুয়েলকে অনুসরন করছে তার-ই নিকটাত্নীয় জাহিদুল। ইতিপূর্বে জাহিদুল মাদক মামলায় কারাভোগ করেছে। রয়েছে একটি মাদক মামলাও। যদিও জামিন পায় মাদক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবে এই শর্তে কিন্ত বর্তমানে এলাকায় জাহিদুলের রয়েছে মাদক বিক্রির বিশাল সিন্ডিকেট। মাদক ব্যবসায়ী জাহিদুল নিজে গাজা সেবনের পাশাপাশি বিক্রি সহ এলাকার ১৫-১৬ বছর বয়সী তরুনদের বাধ্য করছে মরনব্যাধি এ মাদক ব্যবসায়। এলাকাবাসী জানায়, জাহিদুল এলাকার এক চিহ্নিত মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মাদক বিক্রি সহ সেবনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এদিকে জানা যায়, সন্ধ্যা নামলেই ফোরকানের পুত্র নাইমের মাদকের আসর জমে উকিল বাড়ি সড়ক এলাকার বিভিন্ন ঝোপ-ঝাড়, নির্মানাধীন ভবন,ও পরিত্যক্ত জমিতে। আর জাহিদুল ও নাইমের সহযোগী হিসেবে হাদিসের পুত্র সজিব, মাদক সম্রাট জুয়েলের পুত্র আবু-বকর (মরন), শাহাদাত জড়িত বলে জানায় এলাকাবাসী। যদিও এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে তাদের সাবধান কিংবা প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো এলাকাবাসীদের বিপদের সুম্মুখিন হতে হয়। তাই এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতেও রাজি হন না। দিন যতই যাচ্ছে বেপরোয়া হয়ে উঠছে উকিল বাড়ি সড়ক এলাকার মাদকের এ ভয়াবহ সিন্ডিকেট। এদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে এলাকাটি মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। তরুন প্রজন্মকে মাদকের এ ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। শীগ্রই এলাকাটির স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে এলাকাবাসি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, মাদকের বিরুদ্ধে সর্বদা পুলিশের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। ইতিপুর্বে মাদক সেবন, মাদক ক্রয়-বিক্রি সহ জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন গজিয়ে ওঠা মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারেও আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Post Views: ০
|
|