Current Bangladesh Time
শুক্রবার সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫ ৪:২৪ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারালো দুই দিনমজুর পরিবার 
Wednesday March 6, 2019 , 1:05 pm
Print this E-mail this

বরিশালে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারালো দুই দিনমজুর পরিবার


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে চিকিৎসা করাতে এসে দালাল নির্ভর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ভূয়া ডিগ্রিধারী পরিচয়দানকারী ডাক্তারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভোলা জেলার প্রত্যন্তঅঞ্চলের দুই দিনমজুর পরিবার। সামান্য হাতের ব্যাথার জন্য আল্টাসোনগ্রাম পরীক্ষা করানো হয়েছে এক রোগীকে। অপর রোগীর রক্তের Serum Creatinine : 1.4 থাকা সত্বেও কিডনীতে আক্রান্ত বলে মাত্র ২৫ টাকার Neuro-V ইনজেকশন পুশ করে চিকিৎসক হাতিয়ে নিলো ৩ হাজার টাকা! শুধু তাই নয়, মাত্র এমবিবিএস পাশ ওই চিকিৎসক তার ভিজিটও নিলো ১২শত টাকা! মঙ্গলবার (৫মার্চ) দিনভর আজব প্রতারণামূলক এমনি ঘটনা ঘটিয়েছে বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) এর কর্তৃপক্ষ ও ডাঃ নাজমুল হোসেন। বিষয়টি নিয়ে নগর জুড়ে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়। এমন প্রতারক ও প্রতারণর প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী রোগীর পরিবার বরিশাল জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসেসিয়েশন, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অভিযোগ প্রেরণ করেন। ভুক্তভোগী রোগী শাহজাহান’র ছেলে মোঃ জুয়েল জানান, তার পিতা শাহজাহান মিয়া ভোলা জেলার গজারিয়া বাজারস্থ উত্তর দিঘলদী গ্রামের বাসিন্দা ও একজন কৃষক। ৯ সদস্যের পরিবার তাদের। তিনি সংসারের বড় ছেলে ও চট্রগ্রামে দিনমজুরের কাজ করেন। গত কয়েক দিন ধরে তার পিতা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য গ্রামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ধার-দেনার মাধ্যমে সংগ্রহ করে শাহজাহান মিয়া ও পার্শ্ববর্তী শাহাজাল চৌকিদারের অসুস্থ (হাতে ব্যাথা) স্ত্রী শাহানুর বেগমকে সাথে নিয়ে গতকাল ৫ মার্চ মঙ্গলবার লঞ্চযোগে বরিশালে আসেন। শাহজালাল, তার স্ত্রী পারু বেগম, ছেলে জুয়েল আর প্রতিবেশী শাহানুর বেগম বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালে এসে এক অটোচালককে বান্দরোডস্থ রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন’র চেম্বারে নিয়ে যেতে বলেন। তখন অজ্ঞাতনামা ওই অটোচালক জানায় ‘ডাঃ মোঃ আনোয়ার স্যার বরিশালে নেই, তার অবর্তমানে রোগী দেখেন জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) এর ডাঃ নাজমুল হোসেন। অতঃপর অটোচালক রোগীদের ডাঃ নাজমুল হোসেন’র চেম্বারে নিয়ে যায়। সেখানকার সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব)’র কাউন্টারে দায়িত্বরত ম্যানেজারের সাথে অটোচালক জুয়েলকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে হাতে মুঠে টাকা নিয়ে সেখান থেকে সটকে পরেন। এর ৩০ মিনিট পর ৬শত টাকা করে মোট ১২শত টাকা ভিজিটের পরিশোদের পর ডাঃ নাজমুল হোসেন একে একে শাহজালাল ও শাহানুর বেগমকে দেখেন এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য কাউন্টারে পাঠান। কাউন্টার ম্যানেজার পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫শ টাকা ও শাহানুর বেগমের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নেন (উল্লেখ্য, শাহানুর বেগমের ডান হাতে ব্যথায় ভুগতে ছিলো, কিন্তু চিকিৎসক তাকে আল্ট্রসোনগ্রামসহ রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা দেন)। দুপুরে প্রাপ্ত রিপোর্টগুলো সবই ভাল বলে ডাঃ নাজমুল হোসেন দাবী করে বলেন, শাহজাহান মিয়া কিডনি রোগে আক্রান্ত (অথচ তার রিপোর্টে Serum Creatinine : 1.4 উল্লেখ ছিলো)। চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরো বলেন, এই মুহুর্তে শাহজাহানের শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করতে হবে। ইনজেকশনটির তার কাছে আছে, দাম ৩ হাজার টাকা। ওই ৩ হাজার টাকা দেয়া মাত্রই মাত্র ২৫ টাকা মূল্যের একটি Neuro-V ইনজেকশন পুশ করেন। এসময় ইনজেকশনটির খালি ভায়েল সংগ্রহ করে হাতে রাখেন জুয়েল। এদিকে শাহানুর বেগম’র সকল রিপোর্ট ভাল দাবী করে তার প্রেসক্রিপশনে ৭ ধরণের ঔষধ লিখে দিয়ে তাকে বিদায় দেয়া হয়। বিকেলে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে একটি ফার্মেসীতে ওই ইনজেকশনের খালি ভায়েল নিয়ে যোগাযোগ করে জুয়েল জানতে পরেন তার মূল্য মাত্র ২৫ টাকা। তখন তিনি বুঝতে পারেন দিনভর তার সাথে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তার প্রতারণা করেছেন। বিষয়টি তিনি বিভিন্ন সংবাদকর্মিদের কাছে তুলে ধরেন। সংবাদকর্মিরা এ বিষয়ে ডাঃ নাজমুল হোসেন’র সাথে যোগাযোগ করেন। ডাঃ নাজমুল হোসেন তার প্রেসক্রিপশন ও নগরীর জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (ডিজিটাল ল্যাব) সাঁটানো সাইনবোর্ডে উল্লেখ করেন তিনি এমবিবিএস (ঢাকা), পিজিটি (মেডিসিন) পাশ। এছাড়া তিনি মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলজি, বাতব্যথা, হার্ট, ষ্ট্রোক, নাক, কান, গলা, বক্ষব্যাধি, চর্ম, যৌনরোগে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত, সাবেক মেডিকেল অফিসার, ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল, সাবেক সহঃরেজিষ্টার, গনস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা, BMDC : 73299। উচ্চতর প্রশিক্ষণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি (ডাঃ নাজমুল হোসেন) তার কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। চিকিৎসক কেন ইনজেকশন বিক্রি করবেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দালালের বিষয়ে ডায়াগনস্টিক কর্তৃপক্ষ দায়ী বলে তিনি দাবী করে বলেন, ৬শত টাকার ভিজিটের ৩শত টাকা তাকে ডায়াগনস্টিক মালিককে দিতে হয়। তিনি আরো বলেন, আমার কাজ রোগী দেখা আর ডায়াগনস্টিকের কাজ যেভাবেই হউক রোগী এনে দেয়া। এছাড়া রোগী শাহানুরের হাতের ব্যাথায় আল্টাসোনগ্রাম পরীক্ষা করানোর বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দিতে রাজি হননি। সবশেষ তিনি পুরো বিষয়টি গোপন রাখতে সংবাদকর্মিদের অনুরোধও জানান। জানাগেছে, জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) অশিংদার ডিবি পুলিশের এক এস আই। এদিকে জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) ও ডাঃ নাজমুল হোসেন এমন প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে রোগীর ছেলে মোঃ জুয়েল বরিশাল জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসেসিয়েশন, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অভিযোগ দিয়েছেন।




Archives
Image
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ৭ দফা প্রস্তাব অধ্যাপক ইউনূসের
Image
বরিশাল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন
Image
বরিশাল সিটির ১৫ কর্মকর্তার তথ্য চেয়ে দুদকের নোটিশ
Image
বরিশালে জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার
Image
৬ সেপ্টেম্বর পালিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী