Current Bangladesh Time
রবিবার এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৩:২১ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » স্বাস্থ্য বিধি না মেনে বরিশালের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় 
Tuesday May 12, 2020 , 4:52 pm
Print this E-mail this

চাকুরী থাকলে দু’মুঠো ভাত খাই, আর এখন চাকুরী থাকতে না খেয়ে আছি, তাই ভাবলাম দু’মুঠো ভাত খেয়েই মরি

স্বাস্থ্য বিধি না মেনে বরিশালের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়


শামীম আহমেদ : বরিশালে প্রাণঘাতী কোরানাভাইরাসকে উপেক্ষা করে দীর্ঘ দেড় মাস পর মহিলা ক্রেতারা গৃহবন্দি থাকার পর শ্বাস ছেড়ে ঘড় থেকে বেড়িয়ে আসতে পেরে যেন মহা খুশি। মহা আনন্দে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা চক বাজারে শপিংমল ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটার জন্য শারিরীক সুরক্ষার কথা ভুলে গিয়ে একে অপরের গায় ঘেষে কেনাকাটায় এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়েছে দেখে মনে হয় যেন চলছে ঈদ বেচা কেনার মহা উৎসব। কিন্তু জেলা প্রশাসনের লকডাউন আইন মানছেন না কেহ। চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতি সদস্যরা বিসিসি মেয়রের আহবানে দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে সাড়া দিয়ে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরও সেই মালিক সমিতি অধিকাংশ সদস্যরা তাদের নেয়া সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক শাটার খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন বেচা বিক্রি। বরিশাল শহরের কতিপয় খেটে খাওয়া দৈনিক আয়ের অটোচালকদের বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে তাদের চলাচল বন্ধ করতে সক্ষম হলেও অপরদিকে ব্যবসায়ী বাণিজ্যিক এলাকা চকবাজার, কাটপট্টি, গ্রীর্জা মহল্লা এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে এত পরিমাণের লোকজন বাসা বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখলে মনে হয় না বরিশাল নগরীতে প্রশাসনের জারী করা রয়েছে লকডাউন। সরেজমিন নগরীর চকবাজার এলাকায় গেলে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাটার অর্ধেক খোলা ভিতরে মহিলা ও পুরুষ ক্রেতাদের নিকট চলছে বেচা বিক্রি সামনে দোকানের কর্মচারীরা রয়েছে দাড়িয়ে। এসময় তারা গণমাধ্যম কর্মীদের দেখলে ভিতরে ক্রেতা রেখে বাহির থেকে পূণরায় সাটার টেনে লাগিয়ে দিচ্ছেন তালা। এসময় বেশ কয়েকটি শপিংমল ও রেডিমেট পোষাকের দোকানে ঢুকে ছবি তোলার সময়ে মহিলা ও পুরুষ ক্রেতা সহ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা মনে করছেন এযেন ঈদ মার্কেটের ছবি তোলা হচ্ছে। এনিয়ে তাদের মাঝে কোন প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে দেখা যায়নি।অপরদিকে রেডিমেড দোকানের পাশাপাশি সড়কের ফুটপাতে বসেছে বসেছে অজস্র দোকান, সেখানে মহিলা ক্রেতাদের সাথে সাথে রয়েছে পুরুষ ক্রেতাদের ভীড়। ছবি তোলার সময়ে কতিপয় দোকান মালিক পক্ষ কিছু না বলেলেও একাধিক দোকান-কর্মচারীরা বলেন, ভাই আর না খেয়ে থাকতে পারছি না, আমি না হয় বর্তমান সমস্যাটা বুঝি, কিন্তু ঘরের মহিলা ও সন্তানরা বুঝতে চায় না। দোকান বন্ধ থাকার অজুহাত দেখিয়ে মালিক পক্ষ গত দুই মাসের বেতন দিতে পারছে না। সেই সাথে আমাদের মত পরিবারকে কেহ কোন কিছু দিয়ে সহযোগীতা করেন নাই। গত দেড় মাস পর শুনেছি প্রশাসন থেকে নামের তালিকা চেয়েছে, তারা কি দেবে-কিছু চাল, ডাল, তেল, আলু আর পেয়াজ, তা দিয়ে কি একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার চলে? আমরা আমাদের দুঃখের কথা কারো কাছে না বলতে পারার কারণে কেহ আমাদের একবারের জন্য খোঁজ নেয়নি। এছাড়া আমাদের বরিশালের প্রভাবশালী জন প্রতিনিধি সিটি মেয়র কয়দিন রাস্তায় নেমে আমাদের মত লোকদের খোঁজ নিয়েছেন। আজ তিনি করোনার অজুহাত দেখিয়ে কতিপয় মালিকদের নিয়ে রাতে তার বসায় বসে বৈঠক করে দোকান বন্ধ রাখার আহবান জানান। এতে মেয়রকে খুশি রাখতে কতিপয় মালিক পক্ষ তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে সায় দিয়ে আসলেও, আমরা কর্মচারীরা কি খাবো? সেকথাতো একবার ভাবেনি, বলেনি আমাদের কথা। ভাই আমরা সাধারণ কর্মচারীরা চাকুরী থাকলে দু’মুঠো ভাত খাই। আর এখন চাকুরী থাকতে না খেয়ে আছি, তাই ভাবলাম দু’মুঠো ভাত খেয়েই মরি। এসময় বেশ কিছু সচেতন ক্রেতাদের সাথে আলাপ করলে দেখা যায় তারা বর্তমান সময়টা কোন কিছুই মনে করছেন না। তারা হাশি খুশিভাবে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে মার্কেট করতে রাস্তায় নেমে পড়ছেন। এসকল সচেতন ক্রেতা সাধারণরা নিজেরাই মানছেন না স্বাস্থ্য বিধি সু-রক্ষা নিয়ম। এব্যাপারে নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের মুঠো ফোনে বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেনি। নগরীর চকবাজার দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত বলেন, বর্তমান করোনা সমস্য সরকারের একার সমস্যা নয়, এটা সকলের সমস্যা। তাই আমি সকল সচেতন ক্রেতাদেরকে অনুরোধ করব, তারা যেন নিজেরা শারিরীক দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্য সু-রক্ষা নিয়ম মেনে কেনাকাটা ও চলাফেরার আহবান জানান। সেই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ও আমার কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যদের বলব, তারা নিজেরা স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী ক্রেতাদের দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টাার করার মাধ্যমেই ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখবেন। মনে রাখতে হবে মালিক-কর্মচারী ও ক্রেতাদের আমাদের করোনার বিপদ এখনো কাটেনি, আমাদের সকলের সচেতনতার মাধ্যমে এই মহামারীকে প্রতিরোধ করতে হবে। এবিষয়ে বরিশাল জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা জোর করে কারো দোকান বন্ধ করতে পারবো না। আমরা চাই, সবাই যেন স্বাস্থ্য সচেতনভাবে চলাফেরার মাধ্যমে মার্কেট করেন। আমি শুনেছি, শহরে বেশ মানুষের সমাগমের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে মানুষকে পূণরায় সচেতন করার জন্য আমি সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলে দেখি কি করা যায়। উল্লেখ্য, ৯ মে রাতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের তার বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়ে বর্তমান করোনার সার্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার এক প্রর্যায়ে ঈদের আগে দোকান-পাট না খোলার আহবান জানান। এতে মেয়রের আহবানে মালিক সমিতি মেয়রের আহবান মেনে নিয়ে ১০ মে রবিবার সাধারণ সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের বাস ভবনের সামনে বসে মালিক সমিতি যৌথভাবে এক আলোচনার মাধ্যমে দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিল।




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ