Current Bangladesh Time
শনিবার নভেম্বর ২২, ২০২৫ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » যতদিন ‘মা’ বেঁচে আছেন, ততদিন, প্রতিটি দিন পালন করুন ‘মা দিবস’ হিসেবে 
Monday May 11, 2020 , 1:52 am
Print this E-mail this

সৃষ্টির সেই আদিলগ্ন থেকে মধুর এই শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ আধার

যতদিন ‘মা’ বেঁচে আছেন, ততদিন, প্রতিটি দিন পালন করুন ‘মা দিবস’ হিসেবে


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : প্রতিদিন পালন করুন ‘মা দিবস’। ‘মা’– ছোট্ট একটা শব্দ, কিন্তু কি বিশাল তার পরিধি! সৃষ্টির সেই আদিলগ্ন থেকে মধুর এই শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ আধার৷ মার অনুগ্রহ ছাড়া কোনো প্রাণীরই প্রাণ ধারণ করা সম্ভব নয়৷ তিনি আমাদের গর্ভধারিনী, জননী৷ জন্মদাত্রী হিসেবে আমার, আপনার, সকলের জীবনে মায়ের স্থান সবার ওপরে৷ তাই তাঁকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানানোর জন্য একটি বিশেষ দিনের হয়ত কোনো প্রয়োজন নেই৷ তারপরও আধুনিক বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারটিকে ‘মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে, যার সূত্রপাত ১৯১৪ সালের ৮ই মে থেকে৷ সঙ্গে উপহার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সাদা কার্নেশন ফুল৷ সমীক্ষা বলছে, বছরের আর পাঁচটা দিনের তুলনায় এদিন অনেক বেশি মানুষ নিজের মাকে ফোন করেন, তাঁর জন্য ফুল কেনেন, উপহার দেন৷ আচ্ছা সত্যি করে বলুন তো, মায়েদের কি আলাদা করে কোনো উপহারের প্রয়োজন পড়ে? তাঁরা যে সন্তানের মুখে শুধুমাত্র ‘মা’ ডাক শুনতে পেলেই জীবনের পরম উপহারটি পেয়ে যান৷ উপনিষদে পড়েছিলাম, ‘‘মাতৃ দেব ভব”৷ অর্থাৎ মা দেবী স্বরূপিনী, জীবন্ত ঈশ্বরী৷ তাছাড়া হিন্দুধর্মে মহাশক্তি, আদিশক্তি, রক্ষাকর্ত্রীর ভূমিকায় আমরা যাঁদের পেয়েছি, তাঁদের কিন্তু আমরা মাতৃরূপেই চিনেছি৷ এ জন্য কুসন্তান বলা হলেও, কুমাতা কখনও বলা হয় না৷কোনো মা, তা তিনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন, যত কুশ্রীই হন না কেন, সন্তানের কাছে তিনি কিন্তু দেবীর মতোই৷ আর শুধু হিন্দু ধর্মে কেন? ইসলামে ‘মায়ের পায়ের নীচে বেহেস্ত’ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ খ্রিষ্টধর্মেও রয়েছে ‘মাদার মেরির’ বিশেষ তাৎপর্য৷ সেই মায়ের জন্য কিনা বছরে একটা মাত্র দিন! তবে এ রীতিকে বোধহয় একেবারে তাচ্ছিল্য করা ঠিক নয়৷ অন্তত একটা দিন তো মায়ের কথা, তাঁর সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ভাবেন বিশ্ববাসী৷ সে কারণেই এটাকে আমার অনেকটা হিন্দুদের পুজো-আচ্চার মতো মনে হয়৷ এই যেমন, বৈদিক, সনাতন বা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে প্রতিদিন নানা দেব-দেবীর পুজো হলেও, বছরের বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ দেবতার পুজোও হয় আলাদাভাবে, ঘটা করে৷ এই ‘বিশ্ব মা দিবস’ ঠিক তেমনই নয় কি? আমার ‘মা’ নেই৷ তাই শত ইচ্ছা সত্ত্বেও মায়ের জন্য একটা দিন উদযাপন করার উপায় আমার নেই৷ আর সে জন্যই হয়ত প্রতিদিনই তাঁর কথা মনে হয়৷ প্রতিদিনই আমি বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মায়ের ফটোটাকে বলে বের হই, আবার ফেরার পর তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, ‘‘কেমন আছো মা? কেমন কাটলো দিনটা তোমার?” আমার কাছে প্রতিটি দিনই যে ‘মা দিবস’৷ আসলে কেন জানি না লোকদেখানো, অহেতুক আড়ম্বর, ঘটা করে কিছু করা তেমন ভালো লাগে না আমার, বিশেষ করে সেটা যদি নিজের জন্মদাত্রী মায়ের জন্য হয়৷ আজকাল কত ছেলে-মেয়ে, পুত্রবধুকে দেখি মায়েদের অযত্ন করতে, তাঁদের অবহেলা করতে৷ তখন খুব খারাপ লাগে৷ যে মা-বাবা আমাদের আঙুল ধরে হাঁটতে শিখিয়েছে, কথা বলতে শিখিয়েছে, মুখে তুলে দিয়েছে অন্ন, সেই বাবা-মা বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লে, তাঁদের হাতে গড়া সন্তানটি ছোটবেলার কথা ভুলে বাবা-মা কে পাঠিয়ে দিচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে৷ আপনি হয়ত বলবেন বিদেশের কথা৷ কিন্তু বিদেশে সমাজব্যবস্থা ভিন্ন, রীতি-নীতিও আলাদা৷ সামাজিক নিরাপত্তাও পাশ্চাত্য দেশগুলিতে অনেক বেশি৷ এমনকি জার্মানিতেও বৃদ্ধ বাবা-মা বৃদ্ধাশ্রমে যাবেন, অথবা তাঁদের নিজেদের খরচ নিজেরাই বহন করবেন – এটাই স্বাভাবিক৷ কর্ম-জীবনের উপার্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এ জন্য সরকারি ভাতাও পেয়ে থাকেন তাঁরা৷ কিন্তু, আমাদের দেশে? আমরা তো দেশকেও ‘মা’ বলে ডাকি৷ দেশের মাটিকে মা জ্ঞান করে তাঁর পায়ে মাথা ঠেকাই আমরা৷ বড় গলায় গর্ব করি দেশমাতৃকার জন্য৷ কিন্তু নিজের মায়ের বেলায়? বেঁচে থাকতে কতদিন, কতবার তাঁকে আদর করেছি আমরা? কতবার বলেছি ‘মা, তোমায় ভালোবাসি’? জীবনচক্রের ঘূর্ণন শুরু হয় সেই জন্মলগ্ন থেকে৷ এরপর ছোটবেলা কাটিয়ে উঠে কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব, বার্ধক্য, আর সবশেষে অনিবার্য মৃত্যু৷ এই ধ্রুব সত্য শুধু আপনার-আমার নয়, সবার জন্য৷ তাই দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিন৷ যতদিন ‘মা’ বেঁচে আছেন, ততদিন, প্রতিটি দিন পালন করুন ‘মা দিবস’ হিসেবে৷

লেখক : দেবারতি গুহ, ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের সম্পাদক




Archives
Image
সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Image
বরিশালে সড়কের পাশে থাকা বাসে আগুন
Image
যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা : বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
Image
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে মিষ্টি বিতরণে সংঘর্ষ : বরিশালে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
Image
মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে যা বললেন শেখ হাসিনা