Current Bangladesh Time
রবিবার সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫ ৫:১৮ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বেতন না পেয়ে জাহাজের মাস্টারকে, ধরা পড়ার ভয়ে সহকর্মীদের হত্যা 
Wednesday December 25, 2024 , 7:21 pm
Print this E-mail this

খুন ও ডাকাতির অভিযোগে ১০ জনকে আসামি করে মালিকপক্ষের মামলা

বেতন না পেয়ে জাহাজের মাস্টারকে, ধরা পড়ার ভয়ে সহকর্মীদের হত্যা


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : আট মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে এমভি আল বাখেরা জাহাজের মাস্টারের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬)। সেই সঙ্গে আকাশসহ জাহাজের সব কর্মচারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন মাস্টার। এসব কারণে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার ছক কষেন তিনি। কিন্তু ধরা পড়ার ভয়ে মাস্টার ছাড়াও ছয সহকর্মীদের কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। আর সুকানিকে কুপিয়ে জখম করেন। র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে এমন সব তথ্যই দিয়েছেন আকাশ। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন র‌্যাব-১১ কুমিল্লা-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন। আকাশ মণ্ডল বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আকাশের কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, খুন হওয়া ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটিসহ সাতটি মোবাইল ফোন, রক্ত মাখানো একটি জিন্সের প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) উপ-অধিনায়ক মেজর কর্মকর্তা সাকিব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের কারণে ক্ষোভ জন্মে জাহাজের কর্মী আকাশ মণ্ডলের মনে। এ ক্ষোভ থেকেই জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ সাতজনকে হত্যা করেন তিনি। তিনি জানান, আকাশ জাহাজে চাকরি করতেন। জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ আট মাস ধরে তাকে কোনো বেতন-ভাতা দিতেন না। তার ওপর তিনি আকাশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আকাশ মণ্ডল সবাইকে হত্যা করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে মেজর সাকিব বলেন, জাহাজের কর্মচারীরা ছুটি ও বেতন-বোনাস সময় মতো পেতেন না এবং বিভিন্ন ধরনের বিল কর্মচারীদের না দিয়ে জাহাজের মাস্টার একাই ভোগ করতেন। মাস্টার সব কর্মচারীর ওপর বিনা কারণে রাগারাগি করতেন এবং কারোর ওপর রাগ করলে তাকে কোনো বিচার বিবেচনা ছাড়াই জাহাজ থেকে নামিয়ে দিতেন। এমনকি তাদের বকেয়া বেতনও দিতেন না। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আকাশ মণ্ডল র‌্যাবকে জানান, জাহাজের বাজার করার জন্য তিনি পাবনার একটি বাজারে নেমেছিলেন। সেখান থেকে তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, সেটি জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল। র‌্যাবের দাবি, আকাশ প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিলেন। সেই খাবার সবাই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তিনি জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তার ক্ষোভ মূলত জাহাজের মাস্টারের ওপর। কিন্তু অন্যরা তাকে হত্যা করতে দেখে ফেলায় তাদেরও হত্যার উদ্দেশে কোপান তিনি। এরপর নিজেই আল-বাখেরা জাহাজ চালাতে থাকেন আকাশ। একপর্যায়ে মাঝিরচর এলাকায় জাহাজটি আটকা পড়ে। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রলারে তিনি বাজার করার কথা বলে উঠে পড়েন। এদিকে তার এলোপাতাড়ি কোপে সাতজনের মৃত্যু হলেও বেঁচে গেছেন সুকানি জুয়েল। চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা সারবাহী জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এসময় রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়। খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন-জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর জোয়াইর উপজেলার গোলাম কিবরিয়া (৬৫), তার ভাগনে লস্কর-শেখ সবুজ (৩৫), সুকানি নড়াইলের লোহাগড়ার আমিনুল মুন্সী (৪০), লস্কর মাগুরার মোহাম্মদপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৭), একই এলাকার লস্কর সজিবুল ইসলাম (২৬), ইঞ্জিন চালক নড়াইল লোহাগড়া এলাকার সালাউদ্দিন মোল্লা (৪০) এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার বাবুর্চি রানা (২০)। এছাড়া আহত সুকানি জুয়েল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জাহাজে হতাহতের ঘটনা তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা কমিটি করা হয়েছে। আর খুন ও ডাকাতির অভিযোগে ১০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেন মালিকপক্ষের মাহাবুব মুর্শেদ।




Archives
Image
শহীদ মিনারে লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে শেষ শ্রদ্ধা
Image
যাবজ্জীবন বন্দিদের সাজা কমিয়ে মুক্তি দিতে চায় সরকার
Image
পটুয়াখালী নয়, বরিশাল পর্যন্ত রেলওয়ের প্ল্যান : সাখাওয়াত হোসেন
Image
টানা চার দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
Image
১৭ বিয়ে, বরিশালে বন কর্মকর্তার অফিসের সামনে স্ত্রী’দের মানববন্ধন!