|
৬ মাসের প্যাকেজ ডায়ালসিস করা যাবে মাত্র ২০ হাজার টাকায়, সপ্তাহে দুটি করে মোট ৪৮ টি ডায়ালসিস’র সুবিধা পাবেন রোগী
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে সরকারীভাবে প্রথমবারের মতো কিডনী ডায়ালসিস শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথামবারের মতো চালু হয়েছে কিডনী ডায়ালসিস। বাইরের বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালে এই চিকিৎসা অনেক ব্যয় বহুল হলেও সরকারী এই হাসপাতালে কিডনী ডায়ালসিস করা যাবে মাত্র ২০ হাজার টাকায়। প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরে এই প্রথম দক্ষিনাঞ্চলের উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল শের-ই বাংলা মেডিকেলে কিডনী ডায়ালসিস শুরু হওয়ায় খুশী রোগী-চিকিৎসক সবাই। পটুয়াখালীর বাউফলের বাহেরচরের মো: খসরু আলম সিকদার নামে এক রোগীর কিডনী ডায়ালসিসের মাধ্যমে হাসপাতালের এই নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। আওয়ামী লীগে সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম দিকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে কিডনী ডায়ালসিসের জন্য দুটি মেশিন পাঠানো হলেও এতদিন সেগুলো ছিলো বাক্সবন্দি। প্যাকেট অবস্থায়ই অকেজো হয়ে যায় কিডনী ডায়ালসিস মেশিন। এ কারণে এর সুফল বঞ্চিত রোগীরা। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালে। সেই থেকে এখানে কিডনী ডায়ালসিস’র ব্যবস্থা ছিলো না। ফলে রোগীদের রাজধানী ঢাকা কিংবা এখানানকার বেসরকারি ক্লিনিকে চওড়া ফিতে ডায়ালসিস করতে হতো। দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারী কেন্দ্রিয় ঔষধাগার থেকে ১০টি কিডনী ডায়ালসিস মেশিন পাঠানো হয় শের-ই বাংলা মেডিকেলে। জাপানের নিপ্রো কোম্পানীর তৈরী ওই মেশিনের মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। মেশিন ছাড়াও সহায়ক হিসেবে ৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ২টি অটোমেটিক ডায়ালাইজার রিফ্রেশার এবং ডায়ালাইসিস বেড সহ অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়। সম্প্রতি ওই মেশিনারীজগুলো হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন বিভাগে পাশে স্থাপন করা হয়। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে কিডনী ডায়ালাইসিস চালু করা হয়। দুপুর ১ টা থেকে শুরু হওয়া প্রথম রোগীর কিডনী ডায়ালাইসি শেষ হয় বিকেল ৪টায়। হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের রেজিস্টার ডা: মানবেন্দ্র দাস জানান, কিডনী রোগীদের ৬ মাসে (প্রতি সপ্তাহে ২ বার) ৪৮বার ডায়ালসিসে প্যাকেজ প্রোগ্রামে বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বিল নিয়ে থাকে। কিন্তু উন্নত মেশিনারীজ দিয়ে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ৬ মাসের প্যাকেজ ডায়ালসিস করা যাবে মাত্র ২০ হাজার টাকায়। এতে সপ্তাহে দুটি করে মোট ৪৮ টি ডায়ালসিস’র সুবিধা পাবেন রোগী। ফলে রোগীরা অনেক উপকৃত হবেন। নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা: মো: আলী রুমি বলেন, করোনার কারনে আপতত সংক্ষিপ্ত পরিসরে ডায়ালসিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই ইউনিটে ৪০টি ডায়ালসিস মেশিন স্থাপন করা হবে। শের-ই বাংলা মেডিকেলে কিডনী প্রতিস্থাপন ছাড়া কিডনীর অন্যান্য সকল রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি জানান। এদিকে দুপুরে নেফ্রোলজি বিভাগের কিডনী ডায়ালসিস কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন হাসপাতালের এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: বাকির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-সহকারী পরিচালক ডা: মনিরুজ্জামান শাহিন, নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা: মো: আলী রুমি এবং রেজিস্ট্রার ডা: মানবেন্দ্র দাস, আউটডোর ডক্টরস্ এসোসিয়েশনসের সভাপতি ডা: সৌরভ সুতার, সম্পাদক ডা: নূরুন্নবী চৌদুরী তুহিন, অন্ত:বিভাগ চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা: সুদীপ হালদার, সম্পাদক আশিশ দত্ত সহ অন্যান্যরা।
Post Views:
১০২
|
|