|
প্রতারক চক্রের কারণে পেশাদার সাংবাদিকেরাও পড়ছেন সামাজিক ও পেশাগত যন্ত্রণায়
বরিশালে সাংবাদিক বানানোর হিড়িক!
স্টাফ রিপোর্টার : আপনি কি সাংবাদিক হতে চান ? তাহলে আজই যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে। হয়ে যান সাংবাদিক। এমন আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছে বরিশালের বিভিন্ন প্রতারক চক্র। আর তাদের ফাঁদে পা দিয়ে মোটা অংকের টাকা গচ্চা যাচ্ছে অনেকের। এসব প্রতারক চক্রের কারণে পেশাদার সাংবাদিকেরাও পড়ছেন সামাজিক ও পেশাগত যন্ত্রণায়। তবে এসকল প্রতারকদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানেরা। কয়দিন আগে বরিশাল শহরে বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের লোগো ও প্রেস স্টিকারের আদলে তৈরি করা ‘‘সিবিসি বাংলা” র স্টিকারসহ বাইকে করে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় এক যুবককে। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে পুলিশ আইডি কার্ড চাইলে তা দেখাতে পারেননি তিনি। যুবকের দাবি, অনলাইন টিভির জন্য কোন অনুমোদন লাগে না। কেবল ডিবিসি নিউজ নয়, সময় টিভি, এসএ টিভি, দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের নামের আগে কিংবা পরে ভিন্ন শব্দ যোগ করে প্রতারণার নানা ফাঁদ পেতেছে প্রতারকেরা। ভুয়া ফেসবুক আইডি, নাম সর্বস্ব অনলাইন পোর্টাল বা তথাকথিত অনলাইন টিভিতে সাংবাদিক নিয়োগের নামে ফেসবুকে আহ্বান জানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। গত শনিবার র্যাব-৮’র হাতে ধরা পড়া ভুয়া সাংবাদিক মাসুদ আলম জানালেন, সাংবাদিক বানানোর জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রতি জনের কাছ থেকে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা নেয়া হত। যার কিছু অংশ দেয়া হত ঊর্ধ্বতনদের। করোনা সংকটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকেই যেমন ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তেমনি আবার সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতায় লিপ্তও হচ্ছেন কেউ কেউ। আর এসব অপ-সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পেশাদার সাংবাদিকেরা। জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান রাহাত খান বলেন, তথাকথিত যে অনলাইন গণমাধ্যম আছে-সরকার সেগুলোর লাগাম টেনে ধরুক এবং মূলধারার গণমাধ্যমকে অভিশাপ থেকে মুক্তি দিক। দেশের সর্বাধিক প্রচারিত আঞ্চলিক পত্রিকা আজকের বার্তা’র নিজস্ব প্রতিবেদক শফিক মুন্সি জানান, সাংবাদিকতা এখন পেশাগত জায়গা থেকে সরে ক্ষমতা ও অবৈধ অর্থলাভের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। যে কারণে অযোগ্য ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অনেক মানুষ এই পেশায় নিজেকে যুক্ত করতে চান। আর সাংবাকি হবার এই চাহিদা এসব প্রতারক চক্রকে ভূইফোঁড় পত্রিকা খুলে বাণিজ্য করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, গণমাধ্যমের যে দায়বদ্ধতা তা এসব লোকজনের নেই। তারা যা খুশি তাই করছে। এমন পরিস্থিতি বন্ধ করতে না পারলে সামনে গণমাধ্যমের জন্য কঠিন সময় আসবে বলেও মনে করেন তিনি। গত শনিবার নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে এমন এক প্রতারক মাসুদ আলমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বাকিদেরও আইনের আওতায় আনতে সক্রিয় রয়েছে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। র্যাব-৮’র উপ অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গির আলম জানান, ফেসবুকে গণমাধ্যমের নাম নিয়ে অনেকেই সাংবাদিকদের নাম খারাপ করছে। এমন অনেককেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং পরবর্তীতেও আনা হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন (বিএমপি) পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন খান বলেন, প্রতারণার মাধ্যমের মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত করার যে চেষ্টা করা হচ্ছে-সে যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র : আজকের বার্তা
Post Views: ০
|
|