মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল আদালতে পৃথক মাদক মামলায় ১২ আসামি দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর জেলে না দিয়ে এক বছরের প্রবেশনে (পরীক্ষাকালে) মুক্তি দিয়েছিলেন বিচারকরা। তারা গত এক বছর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে কেউ হয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবী। ব্যতিক্রমী এ সাজার সময় মাদক সেবন ও বিক্রির মতো কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে অংশ নিয়েছেন মাদকবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়েছেন গাছ, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন সাধ্যানুযায়ী। আসামিরা প্রবেশনকালে আদালতের নির্দেশনা মতো জীবন পরিচালনা করেছেন। তাই বুধবার দুপুর ১২টায় মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। এর আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ১২ আসামিকে নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক সভা হয়। বরিশাল জেলার একটি উপজেলায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া যুবক মোতালেব সরকার (ছদ্দনাম) বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার দায় স্বীকারের পর আদালত আমাকে প্রবেশনে সংশোধনের জন্য পাঠান। গত এক বছর আদালতের নির্দেশনা মেনে জীবনযাপন করে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি। নগরীর বাসিন্দা রফিকুল হাসান (৩৯) বলেন, মাদকসহ আটকের পর আদালত তাকে মাদক থেকে বিরত ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বলেন। তিনি এখন মাদক সংশ্লিষ্টতা ছেড়ে উজিরপুর উপজেলায় ব্যবসা করছেন। শরিফুল ইসলাম (৩৩) জানান, আদালতের নির্দেশনা মেনে একটি কওমি মহিলা মাদ্রাসার নির্মাণকাজে দানসহ মাদকবিরোধী প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মাছ চাষ করে পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ জানান, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় শিগগিরই তারা মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেন। তাদের আর আদালত প্রাঙ্গণে ঘুরতে হবে না। এসব কাজে পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দান ছাড়াও তাদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে। তাদের মাদকবিরোধী কার্যক্রমে আরও গতি আনতে জাতীয় যুব পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন আবিষ্কারের উদ্যোগে মাদকবিরোধী স্লোগান সংবলিত টি-শার্ট ও প্ল্যাকার্ড দেওয়া হয়।