|
এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা অনেক চিকিৎসকই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছেন
বরিশালে ছিলো ব্রজমোহন মেডিকেল স্কুল!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ব্রজমোহন স্কুল বা কলেজের কথা আমরা সবাই জানি। বরিশালের প্রাণপুরুষ, শিক্ষানুরাগী সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত, পিতা ব্রজমোহন দত্তের নামানুসারে ১৮৮৪ সালের ২৭ জুন বরিশালে ব্রজমোহন ইন্সটিটিউট নামে একটি স্কুল এবং ১৮৮৯ সালে ব্রজমোহন কলেজ (বি এম) প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত মহাশয় মৃত্যুর কয়েক মাস আগে বরিশাল শহরের উপকন্ঠে ১৯২৩ সালে পিতা ব্রজমোহন দত্তের নামানুসারে “ব্রজমোহন (বি.এম) মেডিকেল স্কুল” প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এ তথ্য এতোদিন দৃষ্টির অগোচরেই ছিলো। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কতৃক একটি মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠার খবরটি কোথাও লিপিবদ্ধ না থাকার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক! অথচ মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের সমাজ হিতৈষী কর্মকান্ডের এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্তটি কেবল তথ্যাভাবে এতোদিন আমরা জানতে পারিনি কিংবা জানার সৌভাগ্য হয়নি। আমার সৌভাগ্যই বলতে হবে যে অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই গত ২৩/৭/২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখে তথ্যটি আমার গোচরীভূত হয়। গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের হোগল বুনিয়া গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র দাস এর কল্যাণে চিকিৎসক পিতার সনদ খানা যদিনা দেখার সৌভাগ্য আমার হতো তাহলে হয়তো এই দুর্লভ তথ্যটি আমার অজানাই থেকে যেতো। বৃটিশ ভারতীয় শাসনামলে স্বাস্থ্যসেবার চরম দুঃসময়ে এই প্রতিষ্ঠানটি অনেক চিকিৎসক তৈরি করেছেন। যারা মেডিসিন, মাইনর সার্জারি, মিড ওয়াইফারস এন্ড মিড ওয়াইফারি বিষয়ে চার বছর মেয়াদী কোর্স কারিকুলাম অধ্যয়ন করে ইন্টার্নশীপ শেষে সনদও মেডিকেল সার্ভিস সোসাইটির অনুমোদনসহ সদস্য পদ লাভ করতেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা অনেক চিকিৎসকই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছেন। সনদটিতে দেখা যায় ১৯৩৪-৩৫ শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত মেডিকেল পরিক্ষায় যা ১৯৩৫ সালের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হয়; তাতে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার হোগলবুনিয়া গ্রামের প্যারী মোহন কাপালি’র পুত্র গনেশ চন্দ্র কাপালি কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ডা. গনেশ চন্দ্র কাপালি দুর্গম গলাচিপার দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় দীর্ঘ ৫১ বছর নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে ১৯৮৬ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : গোলাম ফেরদৌস, কাস্টোডিয়ান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর
Post Views:
২০৯
|
|