Current Bangladesh Time
শুক্রবার এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালের বাবুগঞ্জে সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রিকালে ওসিএলএসডি গ্রেফতার 
Friday January 7, 2022 , 8:34 pm
Print this E-mail this

একইসঙ্গে তার অপকর্মের সহযোগী মোফাজ্জেল খানকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

বরিশালের বাবুগঞ্জে সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রিকালে ওসিএলএসডি গ্রেফতার


নুরে আলম, বাবুগঞ্জ (বরিশাল) সংবাদদাতা : কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাবুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামের ভেতরে বসে সরকারি চালের বস্তা ভেঙে প্লাস্টিকের বস্তায় প্যাকেট করার সময় ৮০০ বস্তা চালসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) ফরিদা খাতুন (৩২)। একইসঙ্গে তার অপকর্মের সহযোগী মোফাজ্জেল খানকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮০০ বস্তায় ভর্তি ২০ মে. টন সরকারি চাল ছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিলযুক্ত ৫১০ টি সরকারি চালের খালি বস্তা এবং জোড়া কবুতর ও ডলফিন মার্কার ১ হাজার পিস মিনিকেট চালের খালি বস্তা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুবিনা পারভীন বাদী হয়ে ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুন, তার সহযোগী মোফাজ্জেল খান এবং স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রসুল জমাদ্দার, সম্পাদক সেন্টু খান, পল্টন লস্কর বাচ্চুসহ ৫ জনকে আসামী করে বাবুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ইউএনও এবং ওসির নেতৃত্বে উপজেলা খাদ্য গুদামে ওই যৌথ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুনের বাড়ি ভোলা পৌরসভা এলাকার দরগা রোডে এবং অপর আসামী বাবুগঞ্জ উপজেলার রাজগুরু গ্রামের বাসিন্দা মোফাজ্জেল খান খাদ্য গুদামের সরকারি চাল পাচার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খাদ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক ফরিদা খাতুন বাবুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) হিসেবে যোগদান করে তার স্বামী কবির হোসেনকে ভোলা থেকে নিয়ে আসেন। স্বামীর মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ধরে তিনি উপজেলা খাদ্য গুদামের সরকারি চাল রাতের আঁধারে বস্তা বদল করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালের বড় আড়তে নিয়ে বিক্রি করতেন। ভিজিডি, ওএমএস, টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে সরকারি বরাদ্দের চালের ডিও তিনি চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং প্রকল্প সভাপতিদের কাছ কিনে সরকারি ৩নং খাদ্য গুদামে রাখতেন এবং সরকারি সিলযুক্ত ওই পাটের বস্তার চাল রাতের আঁধারে বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানির প্লাস্টিকের বস্তায় প্যাকেটের পরে ট্রাকভর্তি করে পাচার করতেন। এছাড়াও সরকারি ধান ক্রয় কর্মসূচিতে তিনি বাবুগঞ্জের কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে স্বামীর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চল থেকে কম দামে নিম্নমানের ধান সংগ্রহ করে সরকারি অর্থ লোপাট করতেন। নির্বিঘ্নে এসব অপকর্ম চালাতে তিনি স্থানীয় ৮-১০ জন দালালকে সঙ্গে নিয়ে বাবুগঞ্জে একটি শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। খাদ্য মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে এসব গুরুতর অভিযোগ পেয়ে তাকে হাতেনাতে ধরার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, বাবুগঞ্জের ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুনের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তাকে হাতেনাতে ধরার পরিকল্পনা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী সোর্সের মাধ্যমে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাবুগঞ্জের ইউএনও এবং থানার ওসি ও এসিল্যান্ড’কে নিয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি সিলযুক্ত ৫০ কেজির চালের বস্তা বদল করে জোড়া কবুতর ও ডলফিন মার্কা নামের ২টি কোম্পানির প্লাস্টিকের বাজারের সেরা মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ভরে প্যাকেট করার সময় ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুন ও তার সহযোগী মোফাজ্জেল খানকে হাতেনাতে আটক করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দিয়ে থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজ্জু করা হয়। বাবুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আমীনুল ইসলাম বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামে উপস্থিত হয়ে ৩নং গুদামে পাচারের উদ্দেশ্যে সাজিয়ে রাখা ৮০০ বস্তায় প্রায় ২০ মে. টন সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। পাচারের সুবিধার্থে সরকারি সিলযুক্ত বস্তা বদল করে মিনিকেট চালের বস্তায় ভরে চালগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। এছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিলযুক্ত ৫০৭টি খালি চটের বস্তা এবং বাজারের সেরা মিনিকেট চাল লেখা ১ হাজার পিস প্লাস্টিকের খালি বস্তা খাদ্য গুদাম থেকে একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়। এসময় ডিসি ফুড ও এসি ল্যান্ডকে নিয়ে উক্ত গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে।’ বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল খাদ্য গুদাম থেকে হাতনাতে ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুন ও তার সহযোগী মোফাজ্জেল খানকে আটক করা হয় এবং ৮০০ বস্তা চালসহ অপরাধের বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুবিনা পারভীনের লিখিত অভিযোগ পেয়ে ৫ জন নামীয় এবং ২-৩ জন অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে ৭ জানুয়ারী বাবুগঞ্জ থানার ২ নং মামলা রুজ্জু করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ২ আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।’ এদিকে থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযুক্ত উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রসুল জমাদ্দার, সাধারণ-সম্পাদক সেন্টু মুঠোফোনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘গোডাউনের ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুনের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা দু’জন প্রতিবাদ করেছিলাম এবং উপজেলা প্রশাসনসহ খাদ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন গোপন তথ্য দিয়েছিলাম। আমরা যারা চোরের বিপক্ষে ছিলাম তাদেরকেই প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এই মামলায় উল্টো ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার চাই।’ অপরদিকে এ প্রসঙ্গে মামলার প্রধান অভিযুক্ত উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) ফরিদা খাতুনের কাছে থানা হাজতে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ