Current Bangladesh Time
শনিবার মে ৪, ২০২৪ ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » নর্থ সাউথে ‘অনৈতিকতা’র প্রচারে ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের গোপন গ্রুপ 
Tuesday May 5, 2020 , 6:29 pm
Print this E-mail this

মানুষ কিভাবে বেড়ে উঠেছে তার ওপর তার সামাজিক মূল্যবোধ, রুচি নির্ভর করে

নর্থ সাউথে ‘অনৈতিকতা’র প্রচারে ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের গোপন গ্রুপ


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা করে ‘উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্রের শ্রেষ্ঠত্ব’ শীর্ষক নীতিবাক্য নিয়ে। তবে প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পর এসে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেদের নীতিতে কতটুকু অটল থাকতে পেরেছে বা শিক্ষার্থীদেরই কতখানি নৈতিক শিক্ষা দিতে পেরেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর প্রশ্ন তুলেছেন খোদ নর্থ সাউথেরই সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ ছুটিতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আর এই অবসর সময়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ‘এই পাপী চোখে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যা দেখেছি’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই গ্রুপেই একের পর এক দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নৈতিক স্খলনের অভিযোগের পোস্ট। অনেক পোস্টেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর পরিচয়ের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। ফেসবুকে খোলা এই সিক্রেট গ্রুপটিতে সংযুক্ত শুধু নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কেউ সার্চ দিয়ে গ্রুপটি পাবেন না, তবে এক সহপাঠী সংযুক্ত হয়ে অন্যকে যুক্ত করতে পারবেন। গ্রুপের পোস্টগুলোতে নর্থ সাউথের ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-ছাত্রীদের অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখা যাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা এড়িয়ে অসামাজিক কাজকর্ম করা, তদবিরে গ্রেড বাড়িয়ে দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের টাকা নিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়া, গুটি কয়েক শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের অনৈতিকভাবে গ্রেড বাড়িয়ে দেয়া, ছাত্রীদের শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব এবং বিভিন্ন ক্লাবের টাকা লোপাটের কথাও উঠে আসছে।

Cyber-Crime4

যাচাই করে দেখা গেছে, এই গ্রুপটিতে মোট চারজন অ্যাডমিন এবং দুইজন মডারেটর রয়েছেন। তাদের তিনজন নর্থ সাউথের বর্তমান এবং তিনজন সাবেক শিক্ষার্থী।গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা পোস্ট করেছেন, ‘১০০ তে ১৫ পাওয়া স্টুডেন্টকে পাস করানোর জন্য জ্বিনের বাদশাহ আর এমপির কাছ থেকে তদবির আর থ্রেট খাইছি।’ গ্রুপ ও এর নানা অভিযোগের বিষয়ের জানতে চাইলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম জাগোনিউজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন বসে আছে। তারা এসময়ে নানা কিছু লিখতেই পারে, তা বলে যে এসব সত্যি, তা নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তেমন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করি না, এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো না। তবে আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি আছে, ডিসিপ্লিনারি কমিটি আছে। তারা এগুলো ফিগার আউট করে নিয়মিত ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং নেবেন।’

Cyber-Crime4

এদিকে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের নেতিবাচক পোস্টকে কাল্পনিক বা দৃষ্টি আকর্ষণের হাতিয়ার বলছেন নর্থ সাউথের অনেক শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একজন অ্যালামনাই জাগোনিউজকে বলেন, ‘এমনিতেই এই সময়টাতে শিক্ষার্থীদের তেমন কিছু করার নাই। এর ওপর ঘর থেকেও বের হতে পারছেন না। তাই বন্ধু ও সহপাঠীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনেকসময় অনেকে এ ধরনের মিথ্যা ও কাল্পনিক পোস্ট করে থাকেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পড়লেও এ ধরনের কোনো ঘটনা দেখিনি। ছোটখাট ২-১টা ঘটনা চোখে পড়লেও সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা নিতো।’ তিনি বলেন, ‘আমি পোস্টগুলো দেখেছি। অনেকে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের কথা লিখছে। পোস্টগুলো দেখে অনেককেই আইডেন্টিফাই করা যায়, এ ধরনের পোস্টকে আমরা অপরাধ বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিৎ এ ধরনের বিভ্রান্তিকর পোস্টদাতাকে শনাক্ত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে হিংসাত্মক ও অসত্য তথ্য তুলে ধরার বিষয়ে পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম জাগোনিউজকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট বা গ্রুপ থেকে কাউকে উদ্দেশ্য করে হিংসাত্মক, বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য ছড়ানো অপরাধ। আমরা এ ধরনের অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।’

Cyber-Crime4

এদিকে না জেনে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার দীর্ঘ সময় পর এ ধরনের পোস্ট দেয়াকে এক প্রকার সামাজিক ব্যাধি বলছেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলেই এমনটি হচ্ছে বলে ধারণা তাদের। সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বলেন, ‘মানুষ কিভাবে বেড়ে উঠেছে তার ওপর তার সামাজিক মূল্যবোধ, রুচি নির্ভর করে। বিবেকতাড়িত না হয়ে বরং আবেগতাড়িত হয়েই বিভিন্ন গ্রুপ খুলে এসব পোস্ট দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গ্রুপের মধ্যে থাকা সবাই কিন্তু এ কাজ করছেন না। সেখানে কেউ কেউ তা থেকে বিরত থাকছেন। এসব কাজে যারা অগ্রসর তারা যা চাচ্ছেন তা করে যাচ্ছেন, কারণ তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। জবাবদিহিতা থাকলে এমনটি হতো না।’

সূত্র : জাগোনিউজকে




Archives
Image
পদত্যাগ করে দুধ দিয়ে গোসল বিএনপি নেতার
Image
তাসকিন-মেহেদীদের তোপে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে জিম্বাবুয়ে
Image
কুয়াকাটায় পানি ও স্যালাইন হাতে পর্যটক-তৃষ্ণার্তদের পাশে ছাত্রলীগ
Image
বরিশালে কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৫
Image
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল পুলিশ কর্মকর্তার