|
নদীর ঘাটে – কামরুন নাহার মুন্নী
নদীর ঘাটে
– কামরুন নাহার মুন্নী
বাড়িতে এলে বেড়াতে যাই
আড়িয়াল খাঁ’র ঘাটে,
মনোলোভা নদীর শোভায়
সময়টা বেশ কাটে!
মাতাল বাতাস দাপিয়ে বেড়ায়
নদীর দু’কূল ঘিরে,
সেই বাতাসে প্রাণ জুড়াতে
সবাই আসেন তীরে।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে
কত্ত মানুষ আসে!
কেউ বা করে স্নান
কেউ গল্প, কথায় হাসে।
নৌকা ছাড়ে, ট্রলার ভেড়ে
যাত্রী ওঠে, নামে
খেয়ার নৌকা বেয়ে মাঝি
আস্তে, ধীরে থামে।
ঢেউয়ের দোলায় দুলতে থাকে
ছোট্ট ডিঙি নাও,
ইচ্ছে হলে নাওয়ে চড়ে
যেথায় খুশি যাও।
বাপের বাড়ি যাচ্ছে নাইওর
মুন্সী বাড়ির বৌ,
ছইয়ের মুখে পর্দা ঘেরা
দেখছে না তো কেউ!
জল তুলছে পল্লীবালা
মাটির কলসি ভরে,
পুবকোণেতে জাল ফেলে ঐ
জেলেরা মাছ ধরে।
নদীর জলে ঝাঁপ দিয়েছে
গাঁয়ের দামাল ছেলে,
আনন্দে, উচ্ছ্বাসে তারা
জল ঝাপুড়ি খেলে।
গাঙচিলেরা যাচ্ছ উড়ে
সোনালি রোদ মেখে
ডানায় তাদের ঝিলিক লাগে
মন ভরে যায় দেখে!
আশেপাশের বৌ, ঝিয়েরা
দল বেঁধে সব এসে,
নদীর জলে গা ধুয়ে নেয়
গৃহস্থালির শেষে।
উৎরাইলের হাটে যাবে
পসরা বোঝাই নাও,
পাল উড়িয়ে যাচ্ছে মাঝি
নিবাস ভিন্ন গাঁও।
লজেন্স, আচার, চানাচুরের
ছোট্ট দোকান পাট,
গোটা তিনেক আছে বটে
গাঁয়ের নদীর ঘাট।
ঘোটন ঘোষের চায়ের দোকান
চলছে দিনে ও রাতে,
বেঞ্চে বসে কাস্টমার
কাপ তুলে নেয় হাতে।
চায়ের চুমুক শেষ করে কেউ
বিড়িতে দেয় টান,
মোতি পাগল গলা ছেড়ে
গায় বিরহের গান!
উঠতি বয়স ছেলেগুলো
নেট সুবিধা পেতে,
মোবাইলে চোখ রাখে সবাই
আসক্তিতে মেতে।
শহর ফেরত তরুণীরা
উড়িয়ে মাথার চুল,
খোলা হাওয়ায় গা ভাসিয়ে
হয়ে যায় বেভুল!
কেউ আসে, কেউ যায় আবার
কেউ বা বসে থাকে,
চেনা মানুষ দেখলে তাকে
নিজের কাছে ডাকে।
জোয়ারেরো পানি এলে
উথলে ওঠে নদী,
তাকিয়ে দিশা পাইনা খুঁজে
অসীম নিরবধি!
সারাবেলাই সরগরম
আড়িয়াল খাঁ’র ঘাটে,
সূর্যোদয়ের শুরুর থেকে
সূর্যোস্তের পাটে।
Post Views: ০
|
|