Current Bangladesh Time
সোমবার এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » লিড-নিউজ » দক্ষিণাঞ্চলে উন্নতজাতের আম আবাদের অপার সম্ভাবনা থাকলেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে এর প্রসার হচ্ছে না 
Friday March 1, 2019 , 12:02 pm
Print this E-mail this

দক্ষিণাঞ্চলে উন্নতজাতের আম আবাদের অপার সম্ভাবনা থাকলেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে এর প্রসার হচ্ছে না


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকূলীয় এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও উন্নত জাতের বীজ-কলম সহ প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে প্রসার ঘটছে না। এবারো পৌষের শেষভাগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের আম গাছে মুকুল ধরতে শুরু করে। ইতোমধ্যে মুকুলে মুকুলে ঢেকে গেছে গাছ। তবে ভরা মাঘে বসন্তের আবহাওয়ার পরে ফাল্গুনের শুরু থেকে অসময়ের ঘন কুয়াশায় দক্ষিণাঞ্চলে আম সহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলের মুকুল ঝড়ে যেতেও শুরু করেছে। এ অঞ্চলের চাষীরা বিজ্ঞান ভিত্তিক আমের আবাদে এখনো পারদর্শী নয়। ফলে বেশীরভাগ মুকুল ঝড়ে যা অবশিষ্ট থাকে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় । তবে এর পরেও পটুয়াখালী ও বরিশালের কয়েকটি এলাকার কৃষক পরিবারগুলো ইতোমধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা সংগ্রহ করে আধা বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করেছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মত দক্ষিণাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় অতি সীমিত আকারে বাণিজ্যিকভাবে আমের আবাদ ও উৎপাদনকে প্রদর্শনী পর্যায়ে নিয়ে আরো বৃহত্তর পরিসরে আবাদে আম চাষীদের উদ্বুদ্ধ করার তাগিদ রয়েছে কৃষিবিদদের পক্ষ থেকে। ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট-বারি’ ইতোমধ্যে উন্নতজাতের প্রায় ১৫টি আমের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চাষীগন এসব উন্নত জাতের আমের আবাদ করে যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে তা স¤প্রসারনে এখনো তেমন কোন উদ্যোগ নেই। কৃষি বিজ্ঞানীগন আমকে ‘ফলের রাজা’ হিসেবেও বর্ণনা করে থাকেন। দেশের সর্বপেক্ষা জনপ্রিয় ও উপাদেয় ফল আম। পাকা আমে সর্বাপেক্ষা বেশী ক্যারোটিন বা ভিটামিনে এবং খনিজ পদার্থ থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে একমাত্র আমেই সর্বাপেক্ষা বেশী ভিটামিনে থাকে। ফলে এ ফল মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বারি এ পর্যন্ত যে প্রায় ১৫টি উন্নত ও সুমিষ্টজাতের আম উদ্ভাবন করেছে তার মধ্যে বারি আম-১ বা মহানন্দা, বারি আম-২, বারি আম-৩ বা আম্রপলি, বারি আম-৪ বা হাইব্রীড আম ছাড়াও বারি আম-৫, বারি আম-৬, বারি আম-৭, বারি আম-৮ এবং কাঁচা মিঠা বারি আম-৯ উল্লেখযোগ্য। বারি উদ্ভাবিত এসব আমের হেক্টর প্রতি ফলন ১৫ থেকে ২৫ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বারি’র মতে দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ১০ লাখ টনের কাছাকাছি আম উৎপাদিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা ও রাজশাহী কয়েকটি এলাকার সুমিষ্ট আম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। এমনকি বারি উদ্ভাবিত বারোমাসি ‘বারি আম-১১’ আবাদ করে বরিশালের উজিরপুরের বেশ কয়েকটি আম চাষী পরিবার সাবলম্বী হতেও শুরু করেছেন। আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বারি আম-১১ বছরে চারবার ফলন দিচ্ছে। এ জাতের আমের আবাদ করে উজিরপুর উপজেলার বিপুল সংখ্যক কৃষক পরিবার ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর কাছে যথেষ্ট আলোচিতও হয়েছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট সহ কৃষি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের মতে দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় দশ লাখ টন বিভিন্ন জাতের আম উৎপাদিত হচ্ছে। সূত্রগুলোর মতে এক সময়ে শুধুমাত্র দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আমের বাণিজ্যিক আবাদ হলেও এখন তা ক্রমশ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকি পার্বত্য জেলাগুলোতেও আমের আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট-বারি’র বিজ্ঞানীগন দেশের পার্বত্য এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য আলাদা সুমিষ্ট আমের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বিজ্ঞানীগন বিভিন্ন এলাকায় উপযোগী আম আবাদ ও উৎপাদনে নিরন্তর গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এর মধ্যে বারি উদ্ভাবিত ‘বারি আম-৮’ দেশের উপকূলীয় এলাকার জন্য যথেষ্ট উপযোগী বলে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এখনো বারি উদ্ভাবিত আমের জাতগুলো দক্ষিণাঞ্চলের আগ্রহী আবাদকারীদের কাছে সহজলভ্য করার উদ্যোগ যথেষ্ট সীমিত। বরিশালের রহমতপুরে এবং পটুয়াখালী শহর সংলগ্ন নদীর অপর পাড়ে দুটি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে বারি উদ্ভাবিত কিছু আমের চারা বিক্রি হয়ে থাকে। আবাদকারী আম চাষীদের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলাতেই বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন ফলের চারা বিক্রি সহ এর আবাদ প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবী রয়েছে। এমনকি বরিশাল বিভাগীয় সদরেও একটি হর্টিকালচার নার্সারী স্থাপনের দাবী দীর্ঘদিনের। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষিবীদের মতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আম সহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল আবাদ ও উৎপাদনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বারি উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ফলদ গাছের চারা এবং এর আবাদ ও উৎপাদন প্রযুক্তি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার বিকল্প নেই। সারা দেশেই এ ধরনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে পারলে আগামী দশ বছরে দেশে আমের উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব বলেও মনে করছেন কৃষিবিদগন। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

সূত্র : আজকের পরিবর্তন




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ