|
তারা প্রত্যেকেই হত্যা ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার হয়েছিল
কে এই সন্ত্রাসী অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক?
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক। কিশোর অবস্থায় অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যান। রাজধানীর মগবাজার, হাতিরঝিল এলাকায় ছিল তার রাজত্ব। মাদক ব্যবসা, আধিপাত্য বিস্তার, ছিনতাই সবকিছুতেই ছিল তার নিয়ন্ত্রণ। ২০-২৫ জন সদস্য নিয়ে তার অপরাধ জগত চলছিল। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নয়টি মামলা। এছাড়া ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে ছিল তার সখ্য। করোনাকালে অনিক বাড়িতে বাড়িতে ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর বাইরে দৃষ্টিনন্দন এলাকা খ্যাত রাজধানীর হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগলদের ব্ল্যাকমেইল করতো তার সহযোগীরা। সোমবার ভোরে হাতিরঝিল এলাকা থেকে পাঁচ সহযোগীসহ হিরো অনিককে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, পাঁচটি ধারোলো অস্ত্র এবং তিনশ পিস ইয়াবা উদ্ধার জব্দ করা হয়। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানান এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হিরো অনিক ইয়াবা ট্যাবলেটের কারবার করতেন। এছাড়াও তিনি হাতিরঝিল এলাকায় তার সহযোগীদের নিয়ে ঘুরতে আসা মানুষ ও পথচারীদের আটকে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। হিরো অনিকসহ আটক সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই হত্যা ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার হয়েছিল। লকডাউনকে পুঁজি করে ইয়াবা ট্যাবলেটের হোম ডেলভারি করে আসছিলেন হিরো অনিক। তিনি বলেন, ‘ভারতে কেরালায় নারী পাচারের ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া টিকটক হৃদয় বাবুর সঙ্গেও হিরো অনিকের সখ্যতা ছিল। হৃদয়বাবুকে বিভিন্ন সময় তিনি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সহযোগিতা করতেন। এছাড়াও হৃদয় বাবুকে তিনি ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।’ র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক হিরো অনিক জানায়, রাজধানীর মগবাজার, হাতিরঝিল ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী সিন্ডিকেট হোতা হিসেবে পরিচিত তিনি। তার নামে হত্যা মামলা, মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ ৯টি মামলা রয়েছে। তার একটি গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। কিশোর বয়সেই তিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়। তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সালে আলোচিত আরিফ হত্যা মামলার আসামী হিসেবে হিরো অনিক পরিচিতি পায়৷ হিরো অনিক মগবাজার, মধুবাগ, মীরবাগ, নতুন রাস্তা, পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান, ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার মাদকের কারবার করতেন।’ তিনি বলেন, ‘হিরো অনিকের সহযোগীদের কারও কোনো পেশা নেই। তারা হিরো অনিকের নের্তৃত্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতো। শহিদুল ওরফে এম্পুলের নামে মাদক ও চুরির ৬টি মামলা, আবিরে বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সোহাগের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু অপহরণ, মাদক ও ডাকাতির ৩টি মামলা, এবং হিরার বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত ও চুরির ১টি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা হিরো অনিক সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করছি। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’ এই ঘটনায় গ্রেপ্তার বাকি আসামিরা হলেন-শহিদুল ইসলাম এ্যাম্পুল, আবির আহমেদ রাকিব, সোহাগ হোসেন আরিফ ও মোহাম্মদ হিরো।
Post Views:
২০৮
|
|