Current Bangladesh Time
শুক্রবার এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়ম : বরগুনা আমতলীর ইউএনকে ওএসডি ও বিভাগীয় মামলা 
Tuesday July 6, 2021 , 9:14 pm
Print this E-mail this

তদন্ত কমিটি ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ঘর দেয়ার সত্যতা পায়

আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়ম : বরগুনা আমতলীর ইউএনকে ওএসডি ও বিভাগীয় মামলা


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনার আমতলীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়মের দায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আসাদুজ্জামানকে ওএসডি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে ওএসডি হওয়া ইউএনওর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, স্বজন প্রীতি এবং টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্যদের ঘর দেওয়ার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে আদেশ জারি করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে আমতলী উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী এনামুল হক বাদশাকে অন্যত্র বদলির পর সাময়িক বরখাস্ত করেন বরগুনা জেলা প্রশাসক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-১’র অধীনে প্রথম ধাপে ১শ’ এবং ২ ধাপের অধীনের আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩শ ৫০ টিসহ মোট ৪শ ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ইউনিয়ন অনুযায়ী বরাদ্দ থেকে শুরু করে সকল কাজেই লুকোচুরি এবং ঘর নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। নীতিমালা অনুযায়ী ঘর বরাদ্দ থেকে শুরু করে নির্মাণ পর্যন্ত ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের কথা। ইউএনও কোনো সভা না করে কাগজে কলমে একটি কমিটি গঠন দেখিয়ে গোপনে সব কাজ করতেন একা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: মফিজুর রহমান বলেন, কোন কমিটি হয়নি। ইউএনও পকেট কমিটি করে স্বাক্ষর নিয়ে সব কাজ একাই করেছে। আমিসহ কমিটির কোন সদস্য ঘর নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘর বরাদ্দ, মালামাল ক্রয় করাসহ সব কাজ ইউএনও কার্যালয়ের কর্মচারী এনামুল হক বাদশার মাধ্যমে করতেন। দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে সাদা খাতায় বাদশা সভার রেজুলেশনের জন্য স্বাক্ষর নিতেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর ইউএনও তা সংরক্ষণ করতেন। আমি রেজুলেশনে স্বাক্ষর দিতে না চাইলে ইউএনও আমাকে মারতে উদ্যত হন। কমিটির আরেক সদস্য আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘর নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ইউএনও গোপনে সব কাজ একাই করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমি এই কমিটির সদস্য কিনা তাও জানায়নি ইউএনও। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন সভা আছে বলে ইউএনও লোক পাঠিয়ে সাদা খাতায় স্বাক্ষর নিতেন। মো: আসাদুজ্জামান গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর আমতলীতে ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই টাকা কামানোর জন্য ইউএনও অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন। আর এই কাজের ইউএনওর ডান হাত হয়ে ওঠেন ওই কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক বাদশা। তার মাধ্যমে ত্রাণের ঘরসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। তার দুর্নীতি থেকে রেহাই পায়নি মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প। প্রকল্পের ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা করে নিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন ইউএনও মো: আসাদুজ্জামান এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ঘর প্রতি বরাদ্দের এক লাখ ৯০ হাজার টাকা থাকলেও তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। ঘর নির্মাণের সময় মালামাল পরিবহনের টাকা ঘর মালিকের কাছ থেকে আদায় করতেন। এ টাকা কেউ দিতে না চাইলে তার ঘর বাতিলের হুমকি দিতেন। তাছাড়া ঘর মালিকের মাধ্যমে ইট এবং সিমেন্ট আনিয়ে তা দিয়ে কাজ করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো: এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায়ার টাকার বিনিময়ে বাদশার ধনাঢ্য স্বজনদের ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও। ইউএনও মো: আসাদুজ্জামান ঘর নির্মাণে সুজন মুসল্লি ও হাবিব গাজী নামে দু’জনকে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন। তারা ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা আদায় করে এনামুলের মাধ্যমে ইউএনও হাতে পৌঁছে দিতেন। যারা টাকা দিতেন তাদের বাড়িতেই পৌঁছে যেত ঘর নির্মাণের নিম্নমানের সামগ্রী। বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ঘটনাটি নজরে আসে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমানের। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটির ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ঘর দেয়ার সত্যতা পায়। বরগুনা জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমান ওই প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন। ওই প্রতিবেদনের আলোকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমতলীর ইউএনও মো: আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওএসডি করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

একই অভিযোগে গত ৫ মে তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক বাদশাকে বরগুনার বেতাগী উপজেলায় বদলির পর সাময়িক বরখাস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২০ জুন সারা দেশে হতদরিদ্রদের দেয়া ঘরের উদ্বোধন করেছেন। একযোগে সারা দেশে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রচারের আয়োজন থাকলেও আমতলীতে এ ধরনের কোন আয়োজন ছিল না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ঘর উদ্বোধন করলেও আমতলীতে ঘরের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এছাড়া নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজ করায় বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ধসে পরেছে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার আদেশের কপি পেয়েছি। আদেশ মোতাবেক তাকে ইতিমধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ