Current Bangladesh Time
শনিবার মে ৪, ২০২৪ ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » আজ সোমবার (১ নভেম্বর), দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি 
Monday November 1, 2021 , 6:15 am
Print this E-mail this

আশির দশক থেকে সুন্দরবন উপকূলের তাণ্ডব শুরু করে জলদস্যু ও বনদস্যুরা

আজ সোমবার (১ নভেম্বর), দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : আশির দশক থেকে সুন্দরবন উপকূলের তাণ্ডব শুরু করে জলদস্যু ও বনদস্যুরা। এতে এই অঞ্চলে বনজীবী ও মৎস্যজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে দস্যুদের কাছে। ডাকাতি, অপহরণ ও হত্যাসহ নানা তাণ্ডব চালায় একাধিক দস্যু বাহিনী। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ খ্যাত পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন উপকূলের বনজীবী ও মৎস্যজীবীদের এই জিম্মি দসা থেকে বেড়িয়ে আনতে র‍্যাবের তৎপরতায় সফল হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা করেন। সোমবার (১ নভেম্বর) দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) মহাপরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে সুন্দরবনে জলদস্যু দমনে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এরপর থেকে বনদস্যু ও জলদস্যু মুক্ত করতে প্রক্রিয়া শুরু করে র‍্যাব। ২০১২ সাল থেকে র‍্যাবের জোরালো অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বনের গহীনে থাকা জলদস্যুরা। র‍্যাবের তৎপরতায় দস্যু বাহিনীগুলো ফেরারি জীবন শুরু করে। এরপর দস্যুতার অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন। এই কারণে সম্পূর্ণভাবে জলদস্যু মুক্ত হয় সুন্দরবন।আত্মসমর্পণ করা দস্যু বাহিনীগুলোর মধ্যে-মাস্টার বাহিনীর ১০ জন, মজনু বাহিনীর নয়জন, ইলিয়াস বাহিনীর দুইজন, শান্ত বাহিনীর ১৪ জন, আলম বাহিনী ও সাগর বাহিনীর ১৩ জন, খোকাবাবু বাহিনীর ১২ জন, নোয়া বাহিনীর ১২ জন, জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ জন, ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ জন, আলিফ বাহিনী ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ জন, মানজু বাহিনীর ১১ জন, মজিদ বাহিনী নয়জন, বড় ভাই বাহিনীর ১৮ জন, ভাই ভাই বাহিনীর আটজন, সুমন বাহিনীর ১২ জন, ডন বাহিনীর ১০ জন, ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনীর নয়জন, ছোট সুমন বাহিনীর আটজন, দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন, হান্নান বাহিনীর নয়জন, আমির আলী বাহিনীর সাতজন, সুর্য্য বাহিনীর ১০ জন, ছোট সামসু বাহিনীর নয়জন, মুন্না বাহিনীর সাতজন, আনোয়ারুল বাহিনীর আটজন, তইবুর বাহিনীর পাঁচজন, সিদ্দিক বাহিনীর সাতজন, আলামিন বাহিনীর পাঁচজন, সাত্তার বাহিনীর ১২ জন এবং শরীফ বাহিনীর ১৭ জন। তারা সবাই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন।

গত তিন বছর ধরে এই সাফল্য ধরে রেখেছে র‍্যাব। এ বিষয়ে র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, একটা জিনিস অর্জন করার চেয়েও ধরে রাখা অনেক বেশি কঠিন। জলদস্যু মুক্ত সুন্দরবন ধরে রাখার জন্য সুন্দরবনের দুবলার চর ও সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জে আমরা দুটি ক্যাম্প স্থাপন করেছি। নিয়মিত ফুটপ্যাট্রল, নৌ প্যাট্রল করছি। প্রয়োজনে হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছি। গোয়েন্দা নজরদারি রাখছি। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদেরও আমরা মনিটরিং করছি। তিনি বলেন, আত্মসমর্পণ করেও যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে না তাদের সহায়তা দেওয়া হবে না। সম্পর্ক যাতে ভালো থাকে, আত্মসমর্পণকারীরা যাতে ভালো থাকেন তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগ করা হচ্ছে। যারা ভালো পথে ফিরেছেন তাদের ভালো পথেই রাখতে চাই। যারা এখনো আসেনি তাদের নাম আমরা প্রকাশ করতে চাই না। আমরা উৎসাহিত করতে চাই নেতিবাচক পথ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য। দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সোমবার (১ নভেম্বর) বাগেরহাটের রামপালে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যু পুনর্বাসন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মধ্যে ঘর, মুদি দোকান (মালামালসহ), জাল, মাছ ধরার নৌকা, ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও গবাদিপশু উপহার দিবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন-সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমদে ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। এছাড়াও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. হাবিবুর রহমান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পীর ফজলুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দিবেন-র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ। র‍্যাব জানায়, আত্মসমর্পণ পরবর্তী পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাবেক জলদস্যুদের প্রত্যেককে নগদ এক লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া, সরকার কর্তৃক আইনি সহায়তা ও র‍্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তাসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ফলে সুন্দরবনের সকল জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে। সম্প্রতি র‍্যাব পুনর্বাসন চাহিদা সমীক্ষা চালিয়ে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের মধ্যে ঘর, দোকান, নৌকা, জাল ও গবাদি পশু হস্তান্তর করতে যাচ্ছে। যা তাদের স্বাবলম্বী হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।




Archives
Image
পদত্যাগ করে দুধ দিয়ে গোসল বিএনপি নেতার
Image
তাসকিন-মেহেদীদের তোপে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে জিম্বাবুয়ে
Image
কুয়াকাটায় পানি ও স্যালাইন হাতে পর্যটক-তৃষ্ণার্তদের পাশে ছাত্রলীগ
Image
বরিশালে কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৫
Image
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল পুলিশ কর্মকর্তার