|
ডিঙি নৌকায় করে প্রবেশ করা এসব রোহিঙ্গাকে শেষমেশ বাংলাদেশকে গ্রহণ করতে হলো
অবশেষে ভেসে আসা রোহিঙ্গাদের ঠাঁই হলো ভাসানচরে
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : সাগরে ভাসতে থাকা রোহিঙ্গাদের একটি ছোট দলকে অবশেষে বাংলাদেশই আশ্রয় দিল। করোনার সংক্রমণ রোধ এবং কক্সবাজারে স্থান সংকুলানের অভাবে নতুন আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গাদের নেওয়া হলো ভাসানচরে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো কোনও রোহিঙ্গা দলকে ভাসানচরে পাঠানো হলো। শনিবার (২ মে) রাতে ওই দলটি বাংলাদেশে প্রবেশের সময়ে ধরা পড়লে তাদের ভাসানচরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘কোস্ট গার্ডের সহায়তায় তাদের ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে।’ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও। তবে ঠিক কতজন রোহিঙ্গাকে পাঠানো হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সংখ্যা জানাতে পারেননি। কক্সবাজারের একটি সূত্র বলছে, প্রায় ৭০ জন রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে গেছে কোস্টগার্ড। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এ রোহিঙ্গারা প্রথমে মিয়ানমার থেকে দালালদের মাধ্যমে পালিয়ে বড় ট্রলারে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তারা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সে চেষ্টাও ব্যর্থ করে দেওয়া হয়। এরপর ট্রলারটি মিয়ানমারের দিকে গিয়ে নতুন কৌশল হিসেবে ছোট ছোট দলে ভাগ করে ডিঙি নৌকা ধরে বাংলাদেশের সীমান্তে আসে। এক শ্রেণির বাংলাদেশি দালালই তাদের নিয়ে আসে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। এ দালালদের পেছনে স্থানীয় কোনো কোনো এনজিওর ইন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আর জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে যারা গতকাল (শনিবার) এসেছে, তাদের ভাসানচরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের দলটিকে ভাসানচরে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের সেখানে পাঠানোর মূল কর্মসূচি শুরু হচ্ছে না। মিয়ানমার থেকে যারা এসেছে তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত থাকতে পারে এ আশঙ্কা থেকেই দলটিকে মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশতে দেওয়া হয়নি। সতর্কতার অংশ হিসেবেই পাঠানো হয়েছে ভাসানচর। এর আগে, ভাসানচরে বেড়িবাধ নির্মাণ, ঘরবাড়ি, সাইক্লোন শেল্টারসহ অবকাঠামো উন্নয়নের করা হয়। তবে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে অসম্মতি জানায়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও বলা হয়, ভাসানচরে স্থানান্তরের আগে কারিগরি মূল্যায়ন শেষে রোহিঙ্গাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। ফলে সরকারের জোর চেষ্টা ও কয়েকদফা উদ্যোগ সত্বেও সেখানে একজন রোহিঙ্গাও পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাবাহী দুটি ট্রলার সমুদ্রে ভাসছিল। এ সময় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এই রোহিঙ্গাদের নেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, নতুন করে রোহিঙ্গাদের নেয়া সম্ভব নয়। তিনি এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্যকেও জাহাজ পাঠিয়ে তাদের উদ্ধারের আহ্বান জানান ড. মোমেন। তবে ডিঙি নৌকায় করে প্রবেশ করা এসব রোহিঙ্গাকে শেষমেশ বাংলাদেশকে গ্রহণ করতে হলো।
Post Views:
১০৭
|
|