|
ছাত্রলীগের নয়জন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মামলার পর তাদের খুঁজতে নেমেছে পুলিশ
সিলেটে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। ছাত্রলীগের নয়জন কর্মী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার পর তাদের খুঁজতে নেমেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার কলেজটিতে। ওই তরুণীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, “ওই নববধূ তার স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে ঘুরতে আসেন। এক পর্যায়ে তার স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য কলেজের গেইটের বাইরে বের হন। এসময় ৬/৭ জন যুবক তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নিয়ে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।” এসময় তার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করছে। পুলিশ দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় সরকার। এদিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের এই ঘটনায় সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা ছাত্রলীগের কর্মী। এর মধ্যে সাইফুর রহমান নামে একজনের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ভোর রাতে ওই ছাত্রাবাসে সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি পাইপগান, চারটি রামদা, একটি ছুরি ও দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করে বলে শাহপরাণ থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অস্ত্র মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।” এছাড়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন, রাজন আহমদ এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ এই ঘটনায় জড়িত বলে নাম এসেছে পুলিশের কাছে।
সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণের অভিযোগে এদের আসামি করা হয়েছে। উপরে- রবিউল তারেক ও রনি; নিচে-সাইফুর, মাহফুজ ও অর্জুন
তাদের মধ্যে সাইফুর রহমানের গ্রামের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায়, মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে এবং তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা। শনিবার সকালে ধর্ষিত গৃহবধুর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি কাইয়ুম। তিনি বলেন, “মামলায় ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।” এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরুণী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসাপাতালের উপ-পরিচালক ডা: হিমাংশু লাল রায়। তিনি বলেন, “গাইনি বিভাগের একজন অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে ওই গৃহবধূর চিকিৎসা চলছে। তিনি শারীরিকভাবে এখন অনেকটা সুস্থ।” এমসি কলেজের হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন জানান, কয়েকজন ছাত্রাবাসে এক দম্পতিকে আটক রাখে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদও একই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, তাদের কেনো আটকে রাখা হয়েছিলো এবং তাদের সাথে কী আচরণ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
Post Views:
১৫৭
|
|