|
আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে-ওসি নুরুল ইসলাম বাদল
টাকা নিয়েও মামলা নেয়নি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ওসি!
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হামলার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়েছে একটি পরিবার। মামলা করতে থানার ওসি ও এএসআই ১০ হাজার ৫শ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।বৃহস্পতিবার বিকালে মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হালিমা বেগম বরিশাল প্রেস ক্লাবের হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে হালিমা বেগম বলেন, ১৫ এপ্রিল তুষখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহানের ছেলে শামীম তার দলীয় লোকজনকে নিয়ে তার স্বামী মনির হোসেনকে মারধর করে ও কান কেটে দেয়। আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল ও এএসআই নজরুল হালিমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ও থানা থেকে বের করে দেন। ওই রাতে ওসি নুরুল ইসলাম মামলার খরচ দাবি করলে তাকে ৫ হাজার টাকা ও এএসআই নজরুল ইসলামকে দুইবারে ৫ হাজার ৫শ টাকা দেওয়া হয়। তবুও তারা মামলা নেয়নি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলার পর তার নির্দেশে ১৭ তারিখ মামলা নেওয়া হয় থানায়। ওসি নুরুল ইসলাম বাদল চেয়ারম্যানের ছেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামলা নেয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে হালিমা বেগম। এসব অভিযোগের বিষয়ে মঠবাড়িয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ওই নারীকে আমি চিনি না। আর তাছাড়া আমি ১৬ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ ছুটিতে ছিলাম। আমি থানায় ফোন দিয়ে মামলাও নিতে বলেছি, ১৭ তারিখ মামলা হয়। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

এদিকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম বাদল, এসআই নজরুল ইসলাম এবং তুষখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে শামীমের হাত থেকে রক্ষা ও সুবিচার পাওয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। বৃহস্পতিবার (মে ১৯) সকাল ১১টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তুষখালী গ্রামের মোঃ মনির হোসেনের স্ত্রী মোসা: হালিমা বেগম সংবাদ সম্মেরনে লিখিত বক্তবে বলেন, স্থানীয় আব্দুর রহমান হাওলাদার তার পুত্র শফিকুল ইসলাম, সৈয়দ হাওলাদার তার পুত্র মোস্তফা হাওলাদার এবং মৃত আ: ছত্তার হাওলাদারের সাথে পারিবারিক ও জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। জমি বিরোধের জের ধরে প্রায়ই হালিমা বেগম ও তার স্বামী মনির হোসেনকে মারধর করতো। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা (সিআর-১৫৭/২২) দায়ের করেন। মামলা দায়ের করলে আসামীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ এপ্রিল হালিমা বেগমের বসত ঘরে প্রবেশ করে দাও, লোহার রড দিয়ে মনির হোসেনকে এলোপাথারি মারধর করে। এক পর্যায়ে মনির হোসেনের ঘাড়ে কোপ দেয় আসামীরা। এ সময় মনিরের কান কেটে যায়। পরে আহত অবস্থায় মঠবাড়িয়া থানায় গেলে ওসি ছবি তুলে রাখেন। এরপর উপজেলা হাসপাতালে গেলে তারা বরিশাল শের-ই বাংলা হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। শেবাচিম হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার পরে ১৭ এপ্রিল মঠবাড়িয়া থানায় মামলা করতে গেলে ওসি বাদল জানান, মামলা করতে কত খরচ লাগে দিতে পারবি ? তখন হালিমা চাল বিক্রি করে ৫ হাজার টাকা দেয় ওসি নুরুল ইসলাম বাদলকে। এরপর এসআই নজরুল ইসলামকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা দেয় হালিমা বেগম। টাকা দেওয়ার পরেও তারা থানায় মামলা নেয়নি। পরে মঠবাড়িয়া সার্কেল এসপির কাছে গেলে তিনি থানায় মামলা নেয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। সংবাদ সম্মেলনে হালিমা বেগম আরও বলেন, ওসি এবং এসআই তুষখালী চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম এর কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাদের পক্ষে কাজ করেন। মামলা দায়েরের পরে চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম তার দলবল নিয়ে অবৈধভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। এছাড়া অনবরত খুন জখমের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি হালিমা বেগমের পরিবারকে একেরপর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। ওসি, এসআই, ও চেয়ারম্যানের ছেলে হাত থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন হালিমা বেগম ও তার পরিবার।
Post Views: ০
|
|