|
ফরিদপুরে এসপির দেওয়া ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধা মাহফুজা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ফরিদপুর শহরের অসহায় নারী মাহফুজা বেগম (৪৬)। স্বামী নেই। ছেলে রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন। সেই আয়ে কোনো মতো সংসার চলে তাদের। নিজের একটু জায়গা থাকলেও সেই জায়গায় ঘর তোলার সামর্থ্য ছিল না। ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কাছে একটি ঘর চেয়েছিলেন মাহফুজা। জেলা পুলিশের অর্থায়নে তাকে সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয়ে রঙিন টিনের ঘরসহ দোকান করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাহফুজা বেগমের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: আলিমুজ্জামান। জেলা পুলিশ সূত্রে, গত বছরের নভেম্বর মাসে ফরিদপুর পৌরসভার চুনাঘাটা এলাকার বাসিন্দা মাহফুজা বেগম পুলিশ সুপার মো: আলিমুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন। তার কাছে নিজের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন। আবদার করেন তার জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার। মাহফুজার স্বামী আবুল কালাম মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর পূর্বে। শেখ মারুফ নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে তার। ছেলের পায়ে সমস্যা থাকায় ভারী কোনো কাজ করতে পারেন না। করেন রঙ মিস্ত্রির কাজ। তাও সারা মাস কাজ থাকে না। মাসের অর্ধেকের বেশি সময় বেকারই থাকতে হয় তাকে। স্বামীর রেখে যাওয়া মাত্র তিন শতাংশ ভিটের ওপর একটি ভাঙাচোরা ছাপড়া ঘরে বসবাস করতেন মাহফুজা বেগম। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়। এই খবর পেয়ে মাহফুজা বেগম পুলিশ সুপারের কাছে এসে তার দুরাবস্থার কথা খুলে বলেন। সে অনুযায়ী পুলিশ সুপার তার থাকার জন্য একটি ঘর ও জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি মুদি দোকান করে দিয়েছেন। ভিত পাকা করে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট চৌচালা ওই টিনের ঘরটি দুইটি কক্ষের। ঘরের সঙ্গে সড়কের পাশে একটি দোকান ঘর করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই আঙ্গিনায় বাথরুম ও রান্না ঘরও করে দেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে একটি নলকূপ (টিউবওয়েল)। দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। টিনের চালের রঙ লাল এবং চারপাশের টিন সবুজ রঙ করে বাংলাদেশের পতাকার রং দেওয়া হয়েছে। ঘরের চাবি হস্তান্তরের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গাফফার হোসেনসহ পুলিশ লাইন্সের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চাবি হস্তান্তর শেষে বাড়ির আঙিনায় পুলিশ সুপার দুটি আম গাছের চারা রোপণ করেন। ঘর পেয়ে খুশি মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমি স্যারের কাছে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চাইছিলাম। স্যার তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু দিছে আমারে। আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই, এতো বড় ঘর আমি পাব। দোকান পাব।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমারে আশ্বাস দিছে। কেউ ঘর কইরা দেয় নাই। পরে একদিন সাহস কইরাই স্যারের কাছে আমার দুরাবস্থার কথা খুইলা বলি। পরে স্যার লোক পাঠাইয়া আমার জায়গা দেইখা এত সুন্দর ঘর আর দোকান আমারে কইরা দিছে।’ ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: আলিমুজ্জামান বলেন, পুলিশ জনগণ নিয়ে কাজ করে। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি অনেক মানবিক কাজ করে। অতীতেও করেছে, যা এখন বেশি দৃশ্যমাণ। আমরা জনগণের খুব পাশে যেতে চাই। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে দরিদ্র অসহায় এই নারীকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া।
Post Views: ০
|
|