Current Bangladesh Time
মঙ্গলবার জুলাই ৮, ২০২৫ ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরগুনার সে-ই নয়ন বন্ডের কালো অধ্যায় 
Monday July 1, 2019 , 10:43 am
Print this E-mail this

বরগুনার সে-ই নয়ন বন্ডের কালো অধ্যায়


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে যুবক শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের সাথে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে পরিচিত। এ প্রসঙ্গে এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, খুনের মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন স্থানীয়দের কাছে নয়ন বন্ড হিসেবেই বেশি পরিচিত। জেমস বন্ড ০০৭ ছবির নায়কের সাথে মিল রেখে নিজের নামের পরে বন্ড শব্দটি যুক্ত করে। তিনি প্রথম জীবনে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসায় কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করার সুবাদে কোন পদ পদবি না থাকলেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে নিজেকে যুক্ত করার মাধ্যমে কালো অধ্যায়ের সাথে যুক্ত হন। তার শুরুটাই হয় একটি হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে। ২০১১ সালের ১৭ জুলাই সেই ঘটনার পর নয়ন, স্থানীয় রাজনীতির সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে। ওই ঘটনার ঠিক এক মাস পরে ১৮ আগস্ট আবারও আরেকজনকে হত্যার চেষ্টা চালায় সে। এই দুটি ঘটনায় থানায় হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর নয়নের নাম বরগুনায় আলোচনায় উঠে আসে। রাজনৈতিক নেতাদেরও দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। এর পাশাপাশি রিফাত হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। রিফাতের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় অন্তত চারটি মামলা রয়েছে। বরগুনা সরকারি কলেজে বখাটেপনার দায়ে পুলিশ তাকে দুইবার আটক করেছিল। কিন্তু খালুর রাজনৈতিক প্রভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন কোনো মামলা না দেয়ায় পুলিশ মুচলেকা রেখে রিফাতকে ছেড়ে দেয়। সম্প্রতি খালুর সম্মতি নিয়ে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় রিফাত ঘটা করে জন্মদিন পালন করে। বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি ২০১৪ সালের জুলাইতে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়েছি। এ সময়ে ক্লাস চলাকালে রিফাত অন্তত দুইবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিল। তাই রিফাতকে পুলিশে দিয়েছিলাম। কিন্তু জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন এর অনুরোধে মানবিক দিক বিবেচনা করে তখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেইনি। তিনি আরও বলেন, শুনেছি নয়নের বাসা ক্যাম্পাসের পাশেই। তবে আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। এছাড়া অভিযুক্ত অন্যান্যদের ভেতরে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাবুর ছেলে সুহার্ত ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমান সিহাবের ভাই কাওছার হোসেনের ছেলে কামরুল হাসান সাইমুম জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রুপ ০০৭ থেকে ফাঁস হওয়া এক ছবিতে সুহার্তকে রামদা হাতে বসে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে সাইমুনকে শুক্রবার ২৮ জুন রাতে পটুয়াখালী শহরের গালর্স স্কুল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, বুধবার ২৬ জুন গ্রেফতার হওয়া মামলার চার নম্বর আসামি চন্দন ও ছয় নম্বর আসামি মো: রাব্বি আকন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত৷ তারা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। তারা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠজন বলে এলাকায় পরিচিত। তাছাড়া কিলিং মিশনে অংশ নেয়া অন্যান্য আসামিরাও জুবায়ের আদনান অনিকের অনুসারী বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি বিশ্লেষণ করে জানা যায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, রিফাত শরীফকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করার কিছুক্ষণের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক তার ব্যবহৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করে দেন। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া যুবকদের সাথে তার সম্পৃক্ততা আড়াল করতেই তিনি ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করেছিলেন বলে আমরা মনে করি। সমালোচনা ঢাকতে তিনি শুক্রবার ২৮ জুন তার ব্যবহৃত অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় করার সাথে সাথেই কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া যুবকদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলেন, জেলা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে অনিক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন অনেক দিন ধরেই। তিনি টাকার বিনিময়ে শেখ হাসিনা হত্যা মামলার আসামির ভাই, সরোয়ার হোসেন স্বপনকেও পর্যন্ত তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, অনিক টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি জাহিদুল ইসলামকে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং আসাদুজ্জামান রাজুকে সহ-সম্পাদক বানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, এইসব অছাত্র, অযোগ্য, বিবাহিতদের নিয়ে কমিটি করার কারণে তখন তারা মহাসড়ক অবরোধ করার পাশাপাশি মানববন্ধন এবং প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাদের অভিযোগ, অনিকের কাছে নীতি নৈতিকতা কিংবা আদর্শের কোনো মূল্য নেই। টাকা পেলে শেখ হাসিনা হত্যা মামলা আসামির ভাইকে যেমন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বানাতে পারেন, তেমন ধর্ষণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিকেও কমিটির গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঠাঁই দিতে পারেন। এছাড়া ছাত্রলীগের ব্যানার ব্যবহার করে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে অভিযোগ করে তারা বলেন, অনিকের জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির পদ বাগিয়ে নেয়ার পেছনেও পেশিশক্তির প্রভাব ছিলো। গুঞ্জন আছে, ছাত্রলীগের সম্মেলনের দিন সন্ধ্যায়, অনিক সভাপতি হতে পারেননি মর্মে খবর ছড়িয়ে পড়লে, পুরো শহরে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করেন তার অনুসারীগণ এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। উপর্যুপরি তাণ্ডবে পুরো শহর জনশূন্য হয়ে গেলে, তাণ্ডবলীলা থামাতে জেলা আওয়ামী লীগ এর বিশেষ কয়েকজন নেতার মধ্যস্থতায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি, অনিককে সভাপতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিলো তখন।




Archives
Image
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সহ ১৯ কর্মকর্তাকে দুদকের তলব
Image
প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না এনসিপি : নাহিদ
Image
বরিশালে পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনে আইজিপি
Image
সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো সাগরের পাশে বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
মূলধারার গণমাধ্যমও ভুয়া তথ্যের ‍উৎস : প্রধান উপদেষ্টা