|
বন্ধ ঘোষণাকালীন কেউ ভিন্ন কোন উপায়ে দোকান-মার্কেটে বেচা-কেনা করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা
স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতা, মার্কেটে বন্ধের সিদ্ধান্ত বরিশাল জেলা প্রশাসন’র
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের ঈদ বাজার থেকে করোনা ভীতি উধাও হয়ে গেছে। নতুন পোষাক সহ ঈদ পন্য বেঁচা-কেনার আনন্দে চাপা পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার করোনা ভীতি। যে করোনা সংক্রামন এড়াতে সারা বিশ্ব সতর্কাবস্থায়, বিভিন্ন দেশ লকডাউন, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ, সেই করোনা ভীতি একেবারেই উবে গেছে বরিশালের ঈদবাজারে। স্বাস্থ্য বিধির কিছুই মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। এমনকি শিশু এবং বয়স্কদেরও ঈদের কেনাকাটায় নিয়ে আসছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। স্বাস্থ্য বিধি পুরোপুরি উপেক্ষিত হওয়ায় এবারের ঈদে ঘরে ঘরে করোনা সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন সংশ্লিস্টরা। এদিকে ঈদ বাজারে হাজারো মানুষের ভীরে স্বাস্থ্য বিধি বাস্তবায়নে নগরীতে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ৪টি ভ্রাম্যমান আদালত। তারা মাইকিং করে ক্রেতা-বিক্রেতাকে সতর্ক করেছেন। জরিমানাও করছেন। অপরদিকে স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষিত হওয়ায় ফের দোকান-মার্কেট বন্ধের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের শর্ত ছিলো স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকান-মার্কেট খোলার। কিন্তু বরিশালে কেউ স্বাস্থ্য বিধির তোয়াক্কা করছেন না। সোমবার (১৮ মে) পুরনো চিত্র দেখা গেছে নগরীর প্রধান বানিজ্য কেন্দ্র চকবাজারের। দোকান-মার্কেটের সামনে হাতধোয়ার ব্যবস্থা, জীবানুনাশক স্প্রে, ব্লিচিংযুক্ত পাপোস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ক্রেতার জন্য মাস্ক পড়া সহ শারীরিক দূরত্ব এড়িয়ে চলার নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। ক্রেতারা মাস্ক ব্যবহার করলেও শারীরিক দূরত্ব নেই কোথাও। গা ঘেষে, গাদাগাদি করে এমনকি গায়ে ধাক্কা লাগিয়েও পছন্দের পোষাক কিনছেন ক্রেতারা। অনেকেই সাথে করে নিয়ে আসেন শিশুদের। শিশুদের মার্কেটে নিয়ে আসা ভুল হয়েছে স্বীকার করেন অভিভাবকরা। শারীরিক দূরত্ব না মানায় এবারের ঈদে ঘরে ঘরে করোনার বিস্তৃতি ঘটার আশংকা রয়েছে। যদিও ঈদ কেনাকাটার আনন্দে করোনা ভীতি চাপা পড়ে গেছে। দোকানীরা বলছেন, ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। তারা কার আগে কে কোন পন্য পন্য কিনবেন তার প্রতিযোগীতা চলছে। তারা কোনভাবেই স্বাস্থ্য বিধি মানতে চাইছেন না। ক্রেতাদের আচরন দেখলে মনে হয় না করোনা নামে কোন ভীতি তাদের মধ্যে আছে। এদিকে এবারের ঈদ মার্কেটে স্বাস্থ্য বিধি বাস্তবায়নে প্রধান প্রধান বানিজ্যিক এলাকাগুলোতে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ৪টি ভ্রাম্যমান আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: জিয়াউর রহমান জানান, তাদের উপস্থিতিতে ক্রেতা-বিক্রেতার কিছুটা সংযত আচরন করছেন। কিন্তু চলে যাওয়ার পর ফের বেপরোয়া হয়ে উঠছেন তারা। জনগনের ভেতর থেকে বোধদয় না হলে এভাবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে স্বাস্থ্য বিধির বাস্তবায়ন অসম্ভব বলছেন এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অপরদিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলার সুুযোগ দিলেও ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। এ কারনে মার্কেট চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা প্রশাসন আগামী মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল ৬টা থেকে বরিশালের ঈদ মার্কেট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফের স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের পরিবেশ সৃস্টি হলে তখন মার্কেট খুলে দেয়ার কথা বলেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। বন্ধ ঘোষণাকালীন কেউ ভিন্ন কোন উপায়ে দোকান-মার্কেটে বেচা-কেনা করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া জরুরি কারণ ব্যতীত রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ যন্ত্রচালিত সব প্রকার যাত্রী পরিবহনের কাজে নিয়জিত যানবাহন চলাচল বিকেল ৪টার পর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচল এ আদেশের আওতামুক্ত থাকবে।
Post Views:
৮৩
|
|