Current Bangladesh Time
শুক্রবার মে ১০, ২০২৪ ৯:১১ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » যে হাসপাতালে দেওয়া হয় বিনামূল্যে খাওয়া-চিকিৎসা 
Saturday May 21, 2022 , 12:32 pm
Print this E-mail this

গরীব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন

যে হাসপাতালে দেওয়া হয় বিনামূল্যে খাওয়া-চিকিৎসা


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : অস্ত্রোপচারের সঙ্গে ওষুধপত্র, হাসপাতালে থাকা-খাওয়া, সুস্থ হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা, আসা-যাওয়ার ভাড়া কোনো কিছুর জন্যই নেই কোন ধরনের খরচ। সবই মিলছে বিনামূল্যে। এমন সুব্যবস্থা রয়েছে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে জানবক্স ভূঁঞা বাড়ির সামনে প্রতিষ্ঠিত নুরুন নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতালে। দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে চোখের সব জটিল ও কঠিন অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা রয়েছে গ্রামের এই হাসপাতালটিতে। এছাড়াও রয়েছে অন্য সব সাধারণ ও জটিল রোগের চিকিৎসা এবং পরীক্ষা নিরিক্ষা দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক, শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফেনীর সন্তান ডা. এ বি এম হারুন প্রতিষ্ঠিত আবুল বাশার চৌধুরী জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান নুরুন নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল। এখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে প্রতিমাসে নিয়মিত বিনা মূল্যে চোখের অস্ত্রোপচার, ওষুধপত্র ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া এখানে শিশুরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বাতের ব্যথা ও অন্যান্য রোগের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে রয়েছে পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। হাসপাতালের বর্হিবিভাগে সাধারণ রোগীদের জন্য সকাল ৮টা-বেলা ১টা এবং বিকাল ৪টা-সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সপ্তাহে পাঁচদিন সব ধরনের রোগীর ব্যবস্থাপত্র ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে ঔষধ দেওয়া হয়। এছাড়াও হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয়ের জন্য রয়েছে আধুনিক ল্যাবরেটরি। এছাড়া টিকাদানকেন্দ্র, শিশু বিভাগ, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, ডেন্টাল চেকআপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চক্ষু পরীক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি মেডিকেল চেকআপসহ নিয়মিত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। চক্ষু চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চক্ষু সার্জন দ্বারা চোখের ছানি অফারেশনসহ সব প্রকার চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হয়। অপারেশন, ঔষধ, খাওয়া-দাওয়া, হাসপাতালে থাকাসহ সবকিছুই বিনামূল্যে। এমনকি অসহায় রোগীদের আসা এবং চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার খরচও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করে।হাসপাতালটির দায়িত্বে থাকা এবিএম বোরহান উদ্দিন বলেন, গ্রামীণ জনগণ যাতে শহরের উন্নত চিকিৎসা গ্রামেই পেতে পারে সে জন্য হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তার ভাই প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. এ বি এম হারুন।তিনি বলেন, এ হাসপাতালে এসে কোন রোগীকেই নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয় না। এখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হলে ঢাকায় নিয়ে হাসাপাতলের খরচে চিকিৎসা দেওয়া হয় রোগীদের। এসময় যাতায়াতসহ সার্বিক কোন খরচই রোগীকে বহন করতে হয় না। এবিএম বোরহান আরও জানান, গ্রামের কোন গর্ভবতী মহিলা অসুস্থ হলে তাকে দ্রুততম সময়ে এ চিকিৎসা কেন্দ্রের মাধ্যমে এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে শহরে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে আসা ড. অরুপ বলেন, সাধারণ জ্বর-কাশি থেকে শুরু করে অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এখানে চিকিৎসা নিতে আসছেন প্রতিদিন। পুরো সপ্তাহ খোলা থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দেন। এখানে চক্ষু, মেডিসিন, গাইনী, শিশু ও জেনারেলসহ সব ধরনের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। ২০০৬ সাল থেকে স্বল্প পরিসরে ফেনী শহরের ৭ কিলোমিটার দূরে ফেনী সদর উপজেলার নিভৃত প্রত্যন্ত অঞ্চল ফাজিলপুর গ্রামে নুরুর নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এরপর ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে নতুন অবকাঠামোয় থেকে অস্ত্রোপচারসহ বাকি সেবাগুলো বাড়ানো হয়। ফেনীর অজ্ঞাত,অসহায় রোগীদের জরুরিভাবে বহনের জন্য ডা. এ বি এম হারুন নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়কে এ্যাম্বুলেন্স দেন। পরবর্তীতে তিনি অজ্ঞাত মরদেহ বহনের জন্য একটি ‘মরদেহবাহী পিকআপ’ অনুদান দেন। বর্তমানে ফেনীতে তার দেওয়া এই দুটি গাড়ি এই অঞ্চলে বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হচ্ছে। বিশিষ্ট চিকিৎসক এ বি এম হারুনের উদার পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ, পাঠাগার। এ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে আবুল বাশার চৌধুরী হেফজখানা ও এতিমখানার। এখানে এখন শিক্ষার্থী ভর্তি চলছে। তিনি ভবিষ্যতে নিজ গ্রামে বেকারত্ব দূরীকরণে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।হাসপাতালের স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক এন. এন. এম আলমগীর বলেন, শমরিতা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এবিএম হারুনের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অঞ্চলে নুরুর নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার আগেও তিনি অসহায় এলাকাবাসীদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন। নুরুর নাহার মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. এ বি এম হারুন বলেন, ১৯৭৬ সালে আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর চিন্তা করলাম আমার এলাকায় অনেক গরিব ও দুঃখী মানুষ রয়েছে। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে তাদের জন্য কি ভূমিকা রাখতে পারি? সেই চিন্তা থেকে আমি নিজ গ্রামে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করি। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব কবির হোসেন নামের একজন জানান, এ ধরনের সেবা বিরল। এখানে কোন ধরনের টাকা নেওয়া হয় না। সুশৃঙ্খলভাবে দেওয়া হয় সেবা। তিনি জানান, দুই মাস আগ থেকে তিনি এখানে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তার চোখের অবস্থা এখন আগের থেকে অনেকটাই ভাল। হাসপাতালটি পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় আরও কয়েকজন রোগীর সঙ্গে। তারা জানান, একদম বিনা পয়সায় তাদের চিকিৎসা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে খাবারও দেওয়া হয়। সুস্থ হয়ে উঠলে বাড়িও পৌঁছে দেওয়া হবে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ হাসপাতালটি ফেনী ও আশ পাশের গরীব অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে। ডা. এবিএম হারুন এ অঞ্চলের গরীব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন।




Archives
Image
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা : আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন
Image
এবার পুলিশের দ্বারস্থ হলেন চিত্রনায়িকা বুবলী
Image
রাজধানীতে মিলল ‘পুনর্জন্ম’র প্রযোজক রুহানের ঝুলন্ত মরদেহ
Image
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় আজ
Image
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বরিশাল সদরে ভোট সম্পন্ন