মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : লকডাউনের ১১তম দিনে রবিবার (জুলাই ১১) বরিশালের রাস্তাঘাটে আবারও বেড়েছে যানবাহন এবং মানুষের চলাচল। প্রথম দিকে পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে কড়াকড়ি থাকলেও এখন অনেকটাই শিথিল। যদিও টহল অব্যাহত রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে বরিশালে করোনা শনাক্তের হার বেড়েই চলছে। বরিশাল নগরীর অপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ দোকানগুলোতে এক সাটার খোলা রেখে বেচাকেনা করা হচ্ছে, তবে পুলিশ অথবা ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখলেই সাটার নামিয়ে দিচ্ছেন মালিক ও কর্মচারীরা। নগরে ও মহাসড়কে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা, মাহিন্দ্রা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত যানবাহনের আধিপত্য দেখা গেছে। কোনো না কোনো কৌশল অবলম্বন করে চেকপোস্ট অতিক্রম করে বীরদর্পে সড়কে যাত্রীবহন করছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলগুলো। এছাড়া গত কয়েকদিনে ধরে নগরের সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভিড় দেখা গেছে। বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ কাজের সন্ধানে, কেউ বাজার করতে ও কেউ ওষুধ কিনতে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রাস্তায় বের হচ্ছেন। ‘লকডাউন’ কার্যকর করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে মহাসড়ক ও নগরীর বেশ কয়েকটি সড়ক ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড় গুলোতে সকালে পুলিশের কোনো চেকপোস্ট দেখা যায়নি। রাস্তায় বের হওয়ার কারণে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। এদিকে নিজে এবং অপরকে করোনা সংক্রামণ থেকে রক্ষায় লকডাউনকালীন সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় সাতজন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীসহ নতুন করে সর্বোচ্চ ২১১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বরিশাল জেলায় মোট নয় হাজার ৩৯৬ জনের করোনা শনাক্ত হলো। তবে গেল ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় করোনায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৩৮। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন। ফলে এ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় মোট ছয় হাজার ৮১৬ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রোববার (১১ জুলাই) সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, নতুন ২১১ জনের মধ্যে সব চেয়ে বেশি ১১৯ জন শনাক্ত হয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। সে হিসেবে বরিশাল জেলার মধ্যে গেল ২৪ ঘণ্টায় শুধু নগরেই ৫৬.৩৯ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী গত সাতদিনে বরিশাল সিটি করপোরেশন বা নগর এলাকায় ৭১৫ জন ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা সর্বোচ্চ। আর সব থেকে কম একজনের শনাক্ত হয়েছে বরিশালের মুলাদী উপজেলায়। শুক্রবার শনাক্তদের মধ্যে সাতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকি ২০৪ জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ৩৫ জনই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় তিন হাজার ৬৭৯ জন বিদেশগামীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যাদের মধ্যে ১৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।