মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : এবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবকে। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর এবং বরিশাল সিটির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবের মোবাইল কথোপকথন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। কথোপকথনে কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন সংগঠনটির নগর সভাপতি জাহাঙ্গীরের কাছে। এ সময় সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরও এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবকে জানান। গতকাল রোববার ৯ মিনিটের এই কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর বিপ্লবকে আমন্ত্রণ জানাতে নগর সভাপতি জাহাঙ্গীর ফোন করলে মেয়র সাদিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন কাউন্সিলর। কথোপকথনে জিয়াউর রহমান বিপ্লব বলেন, আমরা আমাদের মতো প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন করবো। আমাদের তিনি (মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ) মূল্যায়ন করেন না। আমরা দল করছি না… আমি তিনবার নির্বাচিত হয়েছি না… বিরোধী দলে আমি ২০টা মামলা খেয়েছি না… দলে আমার নাম আছে? এসময় কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবকে বলেন, ‘আমরা তো নব্বই (১৯৯০) সালে বিএম কলেজে বোমা মারা প্লেয়ার, মুরব্বিগো সম্মান করা শিখছি। জাহাঙ্গীর ভাই আপনে আমার মুরব্বি। আপনারে সালাম দিমু না তো কারে দিমু। আমরা মুরুব্বি গো লগে কখনো বেয়াদবি করি না।’ মেয়রের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বিপ্লব বলেন, ‘বরিশাল ক্লাব থেকে বের হয়ে যারা বলছে, হাসনাতের (আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ) দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, তাদের নিয়ে মেয়র সাদিক এখন বরিশালে রাজনীতি করে। আমাদের লাগবো কিসে? আমরা সাতাশি (১৯৮৭) সাল থেকে এই সংগঠন করছি, তখন এই সাদিক কই ছিল?’ ‘জামায়াত বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমাদের মেরে ফেলবে। মেয়র আমাদের যে অবস্থায় নিয়ে রাখছে তাতে আমাদের মেরে ফেলা ভালো। রাজিব, গ্যাস্টিক বাবু, জিয়ার মত মেসের ছেলেদের নিয়ে মেয়র রাজনীতি করে, এটা মানা যায় না। মেয়রের সঙ্গে আমাদের কোনো আপস নাই।’ কাউন্সিলর বিপ্লবের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বিপ্লব তুমি যে অভিযোগ দিলা, আমি সেই অভিযোগটা দেওয়ার জায়গা পাই না। তোমাদের সাথে যা করে আমার সাথে তা কি করে না?’ আওয়ামী লীগ সভাপতি বিপ্লবকে ধৈর্য ধরতে বললে বিপ্লব বলেন, ‘ধৈর্য তো সাড়ে তিন বছর ধরছি, আরও ধৈর্য ধরব? আমরা ধৈর্য ধরব আর গ্যাস্টিক বাবুর মতো লোক সিটি করপোরেশনের গাড়িতে ঘুরবে? মেয়র সাদিক জনগণের প্রতিনিধি, কাউন্সিলররাও জনগণের প্রতিনিধি। অথচ আমাদের মূল্যায়ন করেনি গত সাড়ে তিন বছর।’ ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব কথোপকথনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার কথা আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে শেয়ার করেছি। যা বলেছি তা শতভাগই সত্য। আমি একটা কথাও মিথ্যা বলিনি। গত সাড়ে ৩ বছরে কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের। এই করোনায় এক ছটাক চাল বা অর্থ কাউন্সিলররা পায়নি।’ তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
