Current Bangladesh Time
বুধবার অক্টোবর ৮, ২০২৫ ১:২১ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » লিড-নিউজ » বরিশাল সরকারি মডেল স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে রমরমা কোচিং বাণিজ্য! 
Monday November 11, 2019 , 1:23 pm
Print this E-mail this

বরিশাল সরকারি মডেল স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে রমরমা কোচিং বাণিজ্য!


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার চলাকালীন সকল ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও বরিশালে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকদের দাবি কোচিং বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের কোনো নির্দেশ নেই। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কোচিং চালু রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলছেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং চালু রাখলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চলমান জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার আগে ২৫ অক্টোবর থেকে বরিশালে কোচিং বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরিশালের বিদ্যালয় প্রধান ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে একাধিকবার সভা করা হয়। সেই সাথে পরীক্ষা চলাকালীন সকল ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে বরিশালে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরকারি বিদ্যালয়গুলো এর বাইরে নয়, নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে অতিরিক্ত আয়। কোচিং এ আসা শিক্ষার্থীরা জানায়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কারণে স্কুলে কোচিংয়ে কিছুটা সময় পরিবর্তন হয়েছে, তবে কোচিং বন্ধ হয়নি। বিদ্যালয়ের ক্লাসে তেমন লেখাপড়া না হওয়ার কারণে কোচিং করছেন তারা। আবার অনেকে বলছে বিদ্যালয়ে নির্ধারিত ক্লাসে বুঝে ওঠার আগেই ঘণ্টা বেজে যায়। শিক্ষকরা না বুঝানোর কারণে কোচিং এ এসে তারা সেই শিক্ষকের কাছেই পুনরায় বেশি করে তা বুঝে নেয়। বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে, তবে স্কুল বন্ধ থাকলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কারণ স্কুলের কোচিং খোলা রয়েছে। সকালে জেএসসি পরীক্ষা থাকলে তারা স্কুলের ভেতরে বিকালে কোচিং ক্লাস করে। একই কথা জানায় সে ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও। কোচিং করতে আসা নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুল চলাকালীন ক্লাসে স্যাররা আজে বাজে কথা বলে সময় পার করে । নির্ধারিত সময় পার হতে না হতেই ঘণ্টা পড়ে যায় এবং পরবর্তী অন্য বিষয়ের ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু কোচিং ক্লাসে স্যারেরা এক ঘণ্টা সময় দেন। একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলের তুলনায় কোচিংয়ে ভালো লেখাপড়া হয়। স্কুলে ভালো লেখাপড়া হয় না। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা সময়ের অভাবে সেভাবে ক্লাস নিতে পারে না, তবে কোচিং এ সময় দেন শিক্ষকরা। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মমুহিব্বুল্রাহ মুহিব ও অরিন্দম চৌধুরী স্যার তাদের কোচিং করায়। যেখানে তাদের ক্লাসের প্রায় ৫০ থেকে ৭০ জন নিয়মিত পড়ছে। কোচিং এর জন্য স্যাররা প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতি বিষয় মাসে ৫০০ টাকা নেন। বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অভ্যান্তরের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের কোচিং করানোর দৃশ্য দেখা গেলেও এ বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। তারা বলেন, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার চলাকালীন অতিরিক্ত ক্লাশ (কোচিং) বন্ধ রাখার সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা তাদের জাানা নেই। সরকারি কোনো নোটিশ তারা পাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অবিভাবক জানান, বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ নামে মডেল। এখানে কোন লেখাপড়া নেই। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ। সারাদিন গ্রুপিং নিয়ে শিক্ষকরা ব্যস্ত থাকে। এছাড়া বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্য পি এস সি, জেএসসি, এস এস সি, এইচ এসসি পরীক্ষা হয় এখানে ফলে পরীক্ষাজনিত কারনে বন্ধ থাকে প্রায় চার মাস। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অনুষ্ঠানের কারনেও বন্ধ থাকে এ প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে এখানে লেখাপড়া তেমন হচ্ছে না, শিক্ষকরাও ঠিকমতো মনোযোগ সহকারে বাচ্চাদের ক্লাস নিচ্ছেন না। শিক্ষকরা নিজেরাই ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিংমুখী করে তুলছেন। স্কুলের ক্লাস শিক্ষকের কাছে কোচিং না করালে পরীক্ষার ফলাফলে বাচ্চাদের নম্বর কম দেন। অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশির ভাগ অবিভাবক তাদের সন্তানদের কোচিং এ পড়াচ্ছেন। এখানের শিক্ষকদের আচরণ এখন আর প্রকৃত শিক্ষকদের মতো নেই। বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে চাকরি করা বেশির ভাগ শিক্ষক এখন কোচিং ব্যবসা খুলে বসেছেন প্রতিষ্ঠানটির অভ্যান্তরেই। যেখানে বেতন বাদ দিয়েও শিক্ষকরা প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা অতিরিক্ত আয় করছেন। এ বিষয়ে কোনো অবিভাবক প্রতিবাদ করলে তাদের সন্তানদের ভিন্ন চোখে দেখেন শিক্ষকরা। তাই অবিলম্বে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে কোচিং বন্ধ করা উচিত। অবৈধ কোচিং করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির খন্ডকালিন শিক্ষক মুহিব্বুল্লাহ মুহিব ফোন দিলে তিনি বিস্তারিত জানতে সরাসরি কথা বলার প্রস্তাব দিয়ে কল কেটে দেন। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, শিক্ষকদের কোচিং বন্ধের জন্য লিখিত আকারে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালীন শুধু বিদ্যালয়ে নয়, বাইরের সকল ধরনের কোচিং বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ সরকারি স্কুলে অতিরক্ত ক্লাসের নামে কোচিং চালান সেটা খুবই দুঃখজনক। জেলা প্রশাসক জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে পরীক্ষা চলাকালীন গোপনে কেউ কোচিং চালালে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, কোচিং বানিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২তে বলা হয়, কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্যদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সরকার পরিচালনা পর্যদ ভেঙে দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি ও অধিভুক্তি বাতিল করতে পারবে। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি বিধিমালার অধীনে অসদাচরণ হিসাবে গন্য করে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র : বরিশাল বাণী




Archives
Image
বরিশালে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে জেলেদের হামলা, আহত ৫
Image
বরিশালে পুলিশের সামনেই খুন হয় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা লিটু
Image
মেধাবী খুদে ক্রিকেটার রিয়ানের পাশে বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
এনএসসি মনোনীত নতুন বিসিবি পরিচালক হচ্ছেন রুবাবা দৌলা
Image
পদার্থে নোবেল পেলেন মার্কিন তিন বিজ্ঞানী