Current Bangladesh Time
বৃহস্পতিবার মে ৯, ২০২৪ ৮:০১ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশাল শেবাচিমের কোয়ার্টারে আইএইচটি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার 
Monday February 5, 2024 , 2:49 pm
Print this E-mail this

সহপাঠীরা বলছেন, সম্প্রতি অন্তরা মানসিক চাপে ছিলেন, তাঁর বাড়ি পটুয়াখালী

বরিশাল শেবাচিমের কোয়ার্টারে আইএইচটি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, ‘আত্মহত্যার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। অন্তরার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁর কোনো অভিভাবক বা স্বজন এখনও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়নি, তাদের অভিযোগ থাকলে লিখিত দিলে আমরা খতিয়ে দেখব।’ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবন থেকে বরিশাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রী অন্তরা পানুয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আইএইচটি ছাত্রী অন্তরা পানুয়া

পুলিশের ধারণা, গলায় ফাঁস দিয়ে অন্তরা আত্মহত্যা করেছেন, তবে আত্মহত্যার সঠিক কারণ না জানা গেলেও মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসের সূত্র বলছে, কারও সাথে সম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি আত্মহনন করে থাকতে পারেন। এদিকে আইএইচটির শিক্ষার্থী হয়ে তাঁর মরদেহ শেবাচিম হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হওয়ায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও অন্তরার রুমমেট সুমাইয়া জানিয়েছেন, কলেজের শিক্ষক তাহেরুল ইসলাম সুমনের মাধ্যমে তারা একদিন আগে এ কোয়ার্টারের পেছনের ব্লকের ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটটিতে উঠেন।

শিক্ষক তাহের সুমন

প্রাণ হারানো অন্তরা পানুয়ার বাড়ি পটুয়াখালী জেলা সদরের খলিসাখালী এলাকায়। তিনি বরিশাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ টেকনোলজির ডেন্টাল অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ডা: মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী যাদের বিয়ে হয়েছে তারা অনেকেই বাহিরে থাকেন। অন্তরাও হোস্টেলে না থেকে বাহিরে থাকত, তবে সে কোথায় থাকত সেটি আমরা জানতাম না। সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। মৃত্যুর কারণও আমি বলতে পারব না। আর অন্তরার মরদেহ যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে সেটি আমাদের আওতাভুক্ত এলাকা না, সেটি শেবাচিম হাসপাতালের কোয়ার্টার এলাকা। তাই সে কীভাবে সেখানে থাকত তাও জানি না।’ যদিও অন্তরার পাশের রুমে বসবাসকারী আইএইচটির অপর শিক্ষার্থী সুমাইয়া জানিয়েছেন, তারা আগে যেখানে থাকতেন সেখান থেকে মাত্র একদিন আগে শেবাচিম হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের এ কোয়ার্টারের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটটিতে ওঠেন। দোতলায় তাদের শিক্ষক তাহেরুল ইসলাম সুমন থাকেন এবং তার মাধ্যমেই তৃতীয় তলায় তারা উঠেছেন। শিক্ষক সুমন সম্পর্কে মামা হন জানিয়ে সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা এখানে অল্প কয়েকদিনের জন্য থাকতে এসেছিলাম, নতুন বাসা নিয়ে সেখানে যাব। কিন্তু তার আগেই অন্তরা আজ আত্মহত্যা করলো।’ অন্তরার মৃত্যুর কারণ জানা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠে অন্তরার রুমের জানালা দিয়ে দেখতে পাই সে ফ্যানের হুকের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে।’ এদিকে ঘটনার পর থেকে তাহেরুল ইসলাম সুমনকে ওই ভবনে পাওয়া যায়নি। তার ফ্ল্যাটে অবস্থান নেয়া জেলা আনসার অফিসের এক কর্মকর্তা নিজেকে সুমনের মামা দাবি করে জানান, সুমনের বদলি হয়েছে, আর সে কারণে সুমন বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন, তবে সুমন আইএইচটির শিক্ষক হয়ে কীভাবে শেবাচিম হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকছেন সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। অপরদিকে মোবাইল ফোনে তাহেরুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটটি খালি থাকায় সেখানে ওই দুই শিক্ষার্থীকে থাকতে বলেছিলেন, কিন্তু উপকার করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটবে তা তিনি জানতেন না। আর শিক্ষার্থীর বাহিরে এই মেয়েদের সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত পরিচয়ও নেই, কারও সঙ্গে কোনো সম্পর্কও নেই বলে জানান তিনি। তবে সুমাইয়া যে মামা দাবি করেছেন সেটা জানালে তিনি সেটিকে সমর্থন করেন। আর ফ্ল্যাটের অবৈধ বাসিন্দা হওয়ার বিষয়ে তাহেরুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘সবাই বিষয়টি জানেন হাসপাতালের কোয়ার্টার যাদের নামে অ্যালটমেন্ট হয়, তারা সেখানে থাকেন না। ভাড়া দিয়ে দেন, আমিও দোতলার ফ্লাটটি ভাড়া নিয়েছি মেডিকেল কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (ক্যাশ পিয়ন) আবিদ হাসানের কাছ থেকে।’ এদিকে আবিদ হাসান সম্পর্কে ভাই হয় দাবি করে তাহেরুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটটি খালি থাকায় সেখানে ওই মেয়েদের থাকতে বলা হয়েছিল।’ আর শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানিয়েছেন, সম্প্রতি তারা কর্তৃপক্ষকে নিয়ে হাসপাতালের কোয়ার্টারগুলো পরিদর্শন করেছেন। তখন তারা তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটটিতে কাউকে পাননি, বাহির থেকে তালাবদ্ধ পেয়েছেন। সকালেই শুনতে পেয়েছেন সেই ফ্ল্যাটে এক মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। শেবাচিম হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘কীভাবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একজন কর্মচারীর নামে ওই ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা আমরা জানি না। তবে সম্প্রতি আমরা খতিয়ে দেখেছি কোয়ার্টারগুলোর অনেক ফ্ল্যাট খালি ও পরিত্যক্ত রয়েছে। আবার কিছু বরাদ্দ হলেও সেখানে যথাযথ লোক থাকছেন না। ‘এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আর তৃতীয় শ্রেণির কোয়ার্টারে আইএইচটির ছাত্রীর অবস্থান এবং আত্মহত্যার বিষয়টি পুলিশের পাশাপাশি আমরাও খতিয়ে দেখব এবং নিয়মানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’ আইএইচটির শিক্ষক হয়ে সুমন কীভাবে মেডিকেলের কোয়ার্টারে থাকছেন সেটি জানেন না জানিয়ে আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা: মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, ‘গত ১ তারিখে ইন্সট্রাক্টর তাহেরুল ইসলাম সুমনের রংপুরে বদলি হয়েছে। তাকে এখনও ছাড়পত্র দেয়া হয়নি, তবে বদলিজনিত কারণে তিনি ঢাকায় আছেন বর্তমানে এমনটাই আমি জানি।’ মরদেহ উদ্ধারকারী কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, ‘আত্মহত্যার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। অন্তরার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁর কোনো অভিভাবক বা স্বজন এখনও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়নি, তাদের অভিযোগ থাকলে লিখিত দিলে আমরা খতিয়ে দেখব।’

স্বামী তাপসের সাথে অন্তরা

এদিকে অন্তরার চার বছর আগে তাপস নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়। চাকরির কারণে অন্তরার স্বামী বরিশালে থাকেন না জানিয়ে সহপাঠীরা বলছেন, ‘স্বামীর সঙ্গে কিংবা অন্য কোনো কারণে অন্তরা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন, তবে সম্প্রতি অন্তরা মানসিক চাপে ছিলেন।’




Archives
Image
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা : আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন
Image
এবার পুলিশের দ্বারস্থ হলেন চিত্রনায়িকা বুবলী
Image
রাজধানীতে মিলল ‘পুনর্জন্ম’র প্রযোজক রুহানের ঝুলন্ত মরদেহ
Image
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় আজ
Image
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বরিশাল সদরে ভোট সম্পন্ন