|
জিহাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন
বরিশালে শিশু হত্যা, মা-সৎ বাবা আটক
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে শিশু সন্তানকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে মা ও সৎ বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এর আগে রোববার (এপ্রিল ৩০) দুপুরে ৫ বছর বয়সী শিশু আবীর ইসলাম জিহাদের মরদেহ উদ্ধার করে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা। মৃত আবীর ইসলাম জিহাদ (৫) বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুর এলাকার মো: আল আমিন হাওলাদার ও মরিয়ম বেগম দম্পতির ছেলে। এক বছর আগে দিনমজুর মো: আল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে মরিয়ম বেগমের বিচ্ছেদ হয়। এরপর আল আমিন হাওলাদার ঢাকায় থেকে দিনমজুরের কাজ করেন। সন্তান জিহাদকে নিয়ে মরিয়ম বেগম আলাদা থাকতেন। সম্প্রতি বরিশাল নগরীর আদম আলী হাজী গলির বাসিন্দা শফিক হাওলাদারের ছেলে মিলন হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় মরিয়মের। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা আল আমিনের সঙ্গে এক বছর আগে মরিয়মের ডিভোর্স হয়। জিহাদ মা মরিয়মের সঙ্গে থাকতো। গত ২১ এপ্রিল মিলনের সঙ্গে মরিয়মের বিয়ে হয়। সন্তানকে নিয়ে মরিয়ম ও মিলন কয়েকদিন আগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে নগরীর বান্দ রোডস্থ আবাসিক হোটেল বায়জিদের একটি কক্ষে উঠে।
মরিয়মের বরাতে ওসি বলেন, সকালে জিহাদকে নিজের পাশে ভেজা অবস্থায় দেখতে পান। তখন মাথা, হাত ও পিঠে আঘাতের বিষয়টিও দেখতে পেয়েছেন। দ্রুত তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার কিছু সময় পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে শিশুর মরদেহ নগরীর রুপাতলী এলাকার ভাসানী সড়কে অবস্থিত মরিয়মের ভাইয়ের বাসায় নেওয়া হয়। ওসি বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে খবর পেয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুর মৃত্যুর রহস্য উদ্ধারের জন্য শিশুর মা ও সৎ বাবাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওসি আনোয়ার আরও জানান, শিশু জিহাদ কিভাবে আঘাত পেয়েছে ও প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এদিকে আটকের আগে শিশুটির মা মরিয়ম বেগম ও সৎ বাবা মিলন হাওলাদার জানান, গত ২৫ এপ্রিল হোটেল বায়জিদের একটি কক্ষে ওঠেন তিনি ও তার বর্তমান স্বামী থ্রি-হুইলার চালক মিলন হাওলাদার। রোববার সকালে হোটেলের সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয় জিহাদ। যদিও মা মরিয়ম বেগমের দাবি, সকালে মিলন কক্ষে না থাকায় সন্তান জিহাদের অসুস্থতার খবর তাৎক্ষণিক হোটেল ম্যানেজরাকে জানান। তিনিই শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে বলেন, আর হাসপাতালে নেওয়ার পর শিশুর মৃত্যু হয়। তবে হোটেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, সিঁড়ি দিয়ে পড়ে যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না তিনি। এদিকে নতুন স্বামীকে নিয়ে সুখে থাকতেই জিহাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি মৃতের স্বজনদের। এ সময় অপরাধীদের বিচারের দাবি জানান তারা। যদিও শিশুটিকে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করছেন অভিযুক্ত মা ও সৎ বাবা। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিন) মো: ফজলুল করিম বলেন, আবির ইসলাম জিহাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে, তবে ঘটনার মূল রহস্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, তদন্তের জন্য জিহাদের মা মরিয়ম ও মিলনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
Post Views:
৭৯
|
|