Current Bangladesh Time
রবিবার মে ৫, ২০২৪ ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে রাতের অন্ধকারে অপ্রত্যাশিত দৃশ্যের সন্ধানে মেয়র সাদিক 
Tuesday May 19, 2020 , 6:47 pm
Print this E-mail this

তিনি রাতে বেশী সোচ্চার, দিনে অদৃশ্যে ঘরবন্দী, বর্তমান বরিশাল রাজনীতিতে রহস্যময় পুরুষ হিসেবে ভাবা হচ্ছে

বরিশালে রাতের অন্ধকারে অপ্রত্যাশিত দৃশ্যের সন্ধানে মেয়র সাদিক


শাকিব বিপ্লব, অতিথি প্রতিবেদক : যার যতো সুনাম তার ততো বদনাম, এ যেনো এদেশীয় সমাজব্যাবস্থার একটি ব্যাধি অথবা ধারায় রূপ নিয়েছে। তদ্রুপ দায়িত্বশীলদের নিয়ে সমালোচনাও থাকে বেশী। এই গন্ডি থেকেও বেরুতে পারেননি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহ। বরিশাল নগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এই নেতার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের স্বপ্ন দেখায় সিটি কর্পোরেশনকে করেছেন দূর্নীতিমুক্ত। করোনা দূর্যোগে ত্রাণ দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন আলোচনার শীর্ষে। তার চেয়েও বেশী প্রশংসিত হচ্ছেন তার ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের ব্যতিক্রমতায়। এতসব ভিন্নতার মাঝে বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশনের অনিয়ম ধরতে অথবা স্বচক্ষে দেখতে এই নেতা গভীর রাতে এই শহরে ঘোরেন, কখনও একা বা কিছু সঙ্গীসমেত। তার ঘনিষ্ঠজনদের অভিমত, করোনা দূর্যোগে এই নেতা প্রকাশ্যে না থেকে অনেকটা অন্তরালে থাকায় কিছুটা বিতর্ক হয়েছিলো। স্থানীয় রাজনীতিতে বিষয়টি ইস্যু হিসেবে নিয়ে বেশ কিছুদিন আলোচনায় মাঠ গরম করে তোলে। কিন্তু সেই সমালোচনা যখন ধোপে টেকেনি, তখন রেশন কার্ড বিতরন নিয়ে দলীয়করনের অভিযোগ তুলে ফাঁপরে ফেলতে চেয়েছিলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। কিন্তু যখন প্রায় ৯০হাজার মানুষের মাঝে ত্রাণ দিয়ে নিজেকে ভাগ্যবিধাতার দূত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে আভির্ভূত হয়েছেন, তখন নিন্দুকরাও চুপসে গেলেন। বিশেষ করে তার অদৃশ্যে থাকা নিয়ে চরম আলোচনায় রহস্য সৃষ্টি হলেও আসলে তিনি অন্তরালে নয়, প্রকাশ্যেই আছেন। দিনে নয়, গভীর রাতে এই নেতাকে প্রায়ই নগরীতে ঘুরতে দেখা গেছে। মিডিয়া কর্মীরা তার এই অবস্থানগত রহস্য ভেদ করতে না পারলেও এখন নিশ্চত হয়েছেন এই নেতা প্রকাশ্যেই আছেন, রাতে ঘুরেফিরে স্বচোখে দেখছেন কোথায় নিহিত রয়েছে নগরীর ত্রুটি-বিচ্যুতি। একটি সূত্র জানায়, প্রতিদিনই তার উদ্যোগে চলছে ত্রাণ তৎপরতা। রাতের গভীরতা বৃদ্ধির সাথে সিটি কর্পোরেশনের ট্রাকভর্তি ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তালিকা ধরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। এই ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে যেনো কোনো বিশৃঙ্খলতা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে মেয়র সাদিক নিজেই মাঠে নামেন ভিন্ন এক অববয়ে। তার উপস্থিতিতে ত্রাণের চালভর্তি ট্রাক কীভাবে যায় এবং সঠিক তালিকা অনুযায়ী তা বিতরণ করা হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করতেই বর্তমানে মেয়র সাদিককে রাতে নগরীতে দেখা যায়। কিন্তু তার বেশভূশ দেখে অনুমান করা সহজতর হয় না, এই সেই যুববয়সী মেয়র। অপর একটি সূত্র বলছে, শুধু ত্রাণ বিষয়ক নয়, নগরীর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও নিজ চোখে পরখ করতে সড়কের এককোণে নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে প্রত্যক্ষ করেন সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীলতা আর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাজের গতি। অনিয়ম দেখলেই তিনি তাৎক্ষণিক কোনো ভূমিকায় না গিয়ে পরদিন শুরু করেন একশ্যান, যা ড্রামা অর্থাৎ নাটকীয়তায় পরিণত হয় হঠাৎ অবহেলায় অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণে। মেয়রের এই পদক্ষেপে তার অনুসারীরা ভারতীয় একটি চলচিত্রের ফাটাকেস্ট’র সাথে তুলনা করেন। এর যুতসই কারণও রয়েছে। দুর্নীতিতে অক্টোপাসের ন্যায় আঁকড়ে ধরে রাখা সিটি কর্পোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে বাঘা বাঘা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নিয়ে কাউকে করেছেন ওএসডি আবার কেউ হয়েছেন দপ্তর অদল-বদল। এক্ষেত্রে কোনো সুপরিশ আমলে নেয়নি। দলের মধ্যে কথা চালু রয়েছে যে, নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে এই নগরের মেয়র তারই দলীয় নেতা সম্পর্কে কাউকে ছাড় দেন না, রাখেন না কোনো সুপারিশ। ফলশ্রুতিতে অন্তত সিটি কর্পোরেশনে মেয়র সাদিক নামটি এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে, কখন কার চেয়ার কেড়ে নেন ব্যার্থতায়। পাশাপশি সাংগঠনিক বিষয়েও তিনি বেশ কঠোর রয়েছেন। তার অনুসারীদের মন্তব্য, এই নেতাকে এমনটি আগে দেখা যায়নি।

মেয়র হিসেবে নগর ভবনের ক্ষমতা নেওয়া ও নগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর সেই সাদিক আব্দুল্লাহ আর এই সাদিক আব্দুল্লাহ এক নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে বহিস্কারে তার কঠোর মনোভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। শুধু সুজন নয়, এমন অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন, যাদের অনিয়মের অভিযোগ সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ভাগ্যের সিঁকে ছিড়ে কালীবাড়ি সড়কের তার বাসভবনে দরজায় অঘোষিত সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে আসা যাওয়ায় নিষেধাঞ্জা জারি করা হয়। যে কারণে সাদিক আব্দুল্লাহ্’র চারপাশে থাকা অনেক অনুগত্য রাজনৈতিক সহোচরদের এখন আর দেখা যায় না। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের দেয়া তথ্য সমর্থনযোগ্য এমন একটি সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। মেয়র সাদিক তার অনুসারী এমনকি নগর আ.লীগ নেতাদের সতর্কবার্তা দিয়েছেন, অনিয়ম ও সাংগঠনিক দায়িত্ব অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না।  নেতারা এখন এতটাই সতর্ক তাদের নেতা মেয়র সাদিকের গতিবিধি নজর রাখতে নিজেদের ভুত-ভবিষ্যতের ভাবনায়। ঐ সূত্রটি বলছে, এই নেতা যাকে, যেভাবে, যেখানে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথার্থভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা তদারকিতে তার নিজের কিছু বিশ্বস্ত সোর্স তৈরী করেছেন। আবার কেউ এই তথ্যের বিরোধিতা করে বলতে চাইছেন, এই নেতা নিজেই পরখ করেন ঘটনার বাস্তবতা। এই পদক্ষেপের আলোকেই ত্রাণ তৎপরতা তদারকি আর নগর পরিচ্ছন্নতা দেখতে কখনো মধ্যরাত থেকে শেষরাত পর্যন্ত চুপিসারে নগরীতে ঘোরেন। কখনও নিজের গাড়িতে, আবার কখনও কৌশলগত কারণে মোটরসাইকেল চেপে দুরন্ত গতির এই নেতা একটানে ঘুরে আসেন নগরীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত। কিন্তু তিনি রাতে বেশী সোচ্চার, দিনে অদৃশ্যে ঘরবন্দী থাকেন সেই প্রশ্নে এই নেতাকে বর্তমান বরিশাল রাজনীতিতে রহস্যময় পুরুষ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, মেয়র সাদিকের কৌশল অতো সহজ নয়। যেকারণে তিনি অল্প বয়সে হয়েছেন মেয়র, পেয়েছেন নগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদ। নিন্দুকেরা বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা সমালোচনায় তার গতিরোধ ও ইমেজ নিয়ে টানাটানি করলেও সেই রশি ছিড়ে পড়ছে এই নেতার রাজনৈতিক পরিপক্কতায়। ফলে কোনোভাবেই পেরে উঠছে না বা বুঝতে সক্ষম হচ্ছে না কখন কোন গতিবিধিতে নিজ ঘর থেকেই খোঁজ-খবর নেওয়ার পাশাপাশি রাতের বরিশালে পিচঢালা পথে পা রাখছেন। অবশ্য ইতিবাচক এই প্রসঙ্গ নিয়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ্’র অভিমত জানতে তার সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে রিং বেজে সময় গেলো কিন্তু সাড়া পাওয়া গেলো না।




Archives
Image
শ্রমিকের ওপর হামলায় সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল
Image
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে দলগত ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
Image
সর্বনিম্ন রিচার্জের মেয়াদ বাড়াল গ্রামীণফোন
Image
বড় ভাইকে পিটিয়ে হত্যা, ছোট ভাই গ্রেফতার
Image
পদত্যাগ করে দুধ দিয়ে গোসল বিএনপি নেতার